বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনমঃ
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী পুনর্বাসিত কমিটি বাতিল চেয়ে সোনালী ব্যাংক সিবিএ’র সংবাদ সম্মেলন দিনাজপুর “জেলা গোয়েন্দা শাখা”৬০০পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ০২ জন গ্রেফতার সিলেটের লন্ডনীপাড়া থেকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক প্রদীপ রায় আটক কুড়িগ্রামে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ সমাবেশ ফুলে যেমন মধু ও বিষ, রাজনীতিতেও তাই-হালিম রাজ বগুড়া শহরের দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য সহ ৫ শীর্ষ মাদক কারবারী আটক জনগণও যেনতেন নির্বাচন করতে দিবে না : জেএসএফ বাংলাদেশ টেক্সাসের ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যুতে ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইউএসএ এর শোক প্রকাশ প্রতিটি দুর্নীতির বিচার করা হবে! সকলের আমলনামা আছে। প্রতিটি অন‍্যায়ের জন‍্য আপনারা দায়ী।গণঅভ্যুত্থান আপনাদের জন‍্য হয়নি চট্টগ্রামের সিআরবি’র ঐতিহাসিক হাতির বাংলো! অনেকেরই অজানা আগামীর বাংলাদেশ হবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের বাংলাদেশ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া তুষারের লালমাই উপজেলার ভুশ্চি বাজারে ভুয়া ডাঃ মোছা: আছিয়া খাতুন (৪৩)- কে অর্থদণ্ড প্রদান মিশরে বাংলাদেশি যুবকের মর্মান্তিক আত্মহত্যা: ব্যবসায় ধস, দুঃসহ চাপ, বিদায়ী চিঠিতে রাজনৈতিক ক্ষোভ মুহাম্মাদ (ﷺ): মানুষ, নবী এবং রাসূল হিসেবে এক সত্তা মানবতার ফেরিওয়ালা অপু ফাউন্ডেশন এর আর্থিক সহযোগীতা প্রদান কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন ইউএসএ”রসসাতাশতম বার্ষিক চড়ুইভাতি অনুষ্ঠিত কবি এডভোকেট সুফিয়ান আহমদ চৌধুরী’র ৬৫তম জন্মবার্ষিকী ১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার পাঁচবিবিতে ভিজিএফের চাল বিতরণ সরাইলে ময়না হত্যা মামলায় ইমাম ও মোয়াজ্জিম কে রিমান্ডে

ময়মনসিংহে ১১দিনে ৭ খুন, পুলিশের ব্যর্থতায় বেপরোয়া খুনি, নিরাপত্তাহীনতায় সাধারণ মানুষ”

রিপোর্টার নাম
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
ময়মনসিংহে ১১দিনে ৭ খুন, পুলিশের ব্যর্থতায় বেপরোয়া খুনি, নিরাপত্তাহীনতায় সাধারণ মানুষ"

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ

ঈদের পর মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে ময়মনসিংহ জেলায় অন্তত ৭টি নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব খুনের ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতা ও সামাজিক নিরাপত্তার চরম সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

কোথাও প্রেমঘটিত বিরোধ, কোথাও চায়ের ১০ টাকা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, আবার কোথাও পারিবারিক কলহ—এইসব তুচ্ছ কারণেই খুন হচ্ছে মানুষ। অথচ অধিকাংশ ঘটনায় পুলিশ অপরাধীর অবস্থান জানার পরও ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ, যা জনমনে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটে ১৭ জুন রাতে ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি মোড়ে, যেখানে নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র আবু রায়হানের মরদেহ উদ্ধার হয় একটি বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে। প্রেমঘটিত বিরোধকে কেন্দ্র করে পাশের বাড়ির মেয়ের পরিবার এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ।

অথচ ঘটনার পরপরই ঘাতকদের বাড়িতে তালা ঝুলছিল, তবুও পুলিশ তাৎক্ষণিক কোনো অভিযান চালায়নি। বরং ওসি আবদুল হাদি এখন বলছেন, ‘তারা পালিয়ে গেছে, তাই তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করছি’—এমন দায়িত্বহীন বক্তব্যে পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে ত্রিশালের হরিরামপুরের হাফিজুর রহমানকে মাথা থেঁতলে হত্যা করে ইটভাটায় ফেলে রাখা হয়। একাধিক দিন পার হলেও পুলিশ হত্যার কারণ খুঁজে পায়নি। গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্র নাঈম মিয়া পূর্ববিরোধের জেরে কুপিয়ে হত্যা হলেও থানায় কোনো অভিযোগ নেই—এমন দাবিতে দায় এড়াতে ব্যস্ত পাগলা থানা। অথচ নিহত নাঈমের বিরুদ্ধে থানায় ছয়টি মামলা থাকার পরও তার নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।

১৩ জুন গৌরীপুরে চায়ের ১০ টাকা নিয়ে ছাত্রদল নেতা হুমায়ুন কবীরকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এত বড় একটি ঘটনা ঘটার পরও পুলিশ মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে, যা তদন্তের দুর্বলতাই প্রমাণ করে।

মাসকান্দায় ৭০ বছরের বৃদ্ধা জোবেদা খাতুনের অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায় ঈদের পাঁচ দিন পর। অথচ পরিবার তার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই থানায় বারবার যোগাযোগ করে আসছিল বলে দাবি স্বজনদের। পুলিশ রহস্য উদ্‌ঘাটনে এখনো ব্যর্থ।

ভালুকায় স্বামী কর্তৃক গার্মেন্টসকর্মী স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে হত্যা এবং মুক্তাগাছায় মানসিক ভারসাম্যহীন নাতির হাতে বৃদ্ধা জমিলা খাতুন হত্যাকাণ্ড নিয়েও পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। অপরাধী ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ দিলেও এতদিন প্রশাসনের ভূমিকা ছিল সীমিত।

আরও পড়ুনঃ মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে ছোড়া আহত ২ ডিবি পুলিশ

এইসব ঘটনায় প্রতীয়মান হচ্ছে—জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অপরাধের আগাম বার্তা থাকলেও পুলিশ প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থানে রয়ে যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ ফোরামের কো-অর্ডিনেটর সাঈদ ইসলাম বলেন, “সহনশীলতার অভাব, পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সমাজকে হিংস্র করে তুলেছে। কিন্তু অপরাধ রোধে পুলিশ যেভাবে ব্যর্থ, তাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।”

পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম স্বীকার করেছেন, “এগুলো ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড নয়, তাৎক্ষণিক রাগে ঘটে যাচ্ছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই তাৎক্ষণিক রাগে কেন বারবার মানুষ খুন হচ্ছে? কেন পুলিশ এসব ঘটনা প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি নিতে পারছে না?

জেলায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে পুলিশের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সামাজিক সচেতনতা এবং অপরাধ প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতিতে ফিরতে হবে—এমনটাই প্রত্যাশা এখন জেলার সাধারণ মানুষের।


এই বিভাগের আরও খবর