শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনমঃ
মনোহরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা ওমর ফারুকের জানাজা অনুষ্ঠিত জাপানে কোনো শিক্ষক দিবস নেই কোতয়ালী মডেল থানার চাঞ্চল্যকর মা ও মেয়ের হত্যা মামলার মূল আসামী গ্রেফতার বসুন্ধরা টিস্যু পেপার মিলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডঃ  বগুড়ার গাবতলীতে বসতবাড়ি ভাঙচুর, নারী আহত – আদালতে মামলা মোরেলগঞ্জে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসডিএফ’র স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক স্টেকহোল্ডার কর্মশালা অনুষ্ঠিত নেত্রকোনা জেলা জজ কোর্টে আইন ছাত্র ফোরাম পরিচিতি সবা অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহে বিটিভির নতুন কুঁড়ি-২০২৫ প্রচার কৌশল সভা অনুষ্ঠিত গাবতলীতে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত এমপি প্রার্থী গোলাম রব্বানীর মতবিনিময় নোয়াখালী বিএনপির আহবায়ক আলো ও সদস্য সচিব আজাদ এর বিরুদ্ধে মিছিল সেনবাগে বিএনপির বিজয় মিছিলে হামলা, যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ৩১ দফা বিতরণ করতে রৌমারীতে রাজিবপুর উপজেলার বি এন পির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোঃ মোখলেসুর রহমান বদলগাছীতে সরকারি রাস্তার প্রবেশ মুখে বাঁশের বেড়া, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী মনের আশা পূরণ করি- এম এ রউফ ২১ হাজার টাকার ফেনসিডিল ও মোটর সাইকেলসহ আটক ১ বদলগাছী বিনিময় সম্পত্তি জবরদখলের হুমকি অভিযোগ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ! চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোলাম জাকারিয়ার গণসংযোগ কার্যক্রমে লিফলেট বিতরণ নাসিরনগরে ব্রীজ নয়,যেন মরণ ফাঁদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম ফিলাপ ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঝিনাইদহ কলেজ শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

খুলনা রূপসা ঘাটে টোলের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

রিপোর্টার নাম
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
খুলনা রূপসা ঘাটে টোলের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

খুলনা প্রতিনিধিঃ

খুলনার রূপসা ঘাটে আদায় করা টোলের প্রায় কোটি টাকা লুটপাট ও ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে। আগে ঘাট থেকে টোল আদায় করত খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)।

পারাপারে জনপ্রতি এক টাকা হিসাবে কেসিসির কোষাগারে জমা হতো বছরে প্রায় ৬৮ লাখ টাকা। গত বছর অভ্যুত্থানের পর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা খাস ডাকের মাধ্যমে জনপ্রতি দুই টাকা করে টোল আদায় শুরু করে। এতে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ হওয়ার কথা থাকলেও ঘটেছে উল্টো। গত ৯ মাসে সংস্থার কোষাগারে জমা হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

রূপসা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যাত্রী আগের তুলনায় বেড়েছে। এখন টোল বাবদ সরকারের রাজস্ব আয়ের কথা ছিল কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু প্রায় ১৭ লাখ টাকা জমা দিয়ে বাকিটা বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা ও ইজারাদার ভাগ করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে ১ জুন ঘাটটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা পরিষদ। তারা মাসে মাত্র ৯৭ হাজার টাকায় খাস আদায়ের জন্য এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছে। অথচ আগে ঘাট থেকে কেসিসি প্রতি মাসে ৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং বিআইডব্লিউটিএ ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আদায় করত। জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় আরও বেশি টাকা লুটপাটের সুযোগ তৈরি হলো।

স্থানীয়রা জানান, রূপসা নদীর আরেক পাড়ে জেলখানা ঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে টোল আদায় করা হয় না। সবচেয়ে বড় ঘাট রূপসায় এখনও টোল আদায় চলছে। প্রতিবার যাতায়াতে টোল প্রদানে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। এর মধ্যে ট্রলার ভাড়া বাড়ায় যাত্রীদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় রূপসা ঘাটে একটি ফেরি যোগ করে টোল উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ফেরি ইজারা থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ঘাট মেরামত ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর পক্ষে মত তাদের।
কেসিসি, জেলা পরিষদ, বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপসা ঘাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে একাধিক মামলা চলছে।

নব্বই দশকের আগে ঘাটটি বিআইডব্লিউটিএর নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৯৯১ সালের পর ঘাট জেলা পরিষদ পরিচালনা করত। ২০০৫ সালে রূপসা সেতু চালু হওয়ার পর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ কেসিসির কাছে চলে যায়। আদালতে মামলা করে ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঘাটের দখল নেয় বিআইডব্লিউটিএ। ৯ মাস পরিচালনার পর ৩ জুন নতুন করে ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে খুলনা জেলা পরিষদ।

কেসিসি থেকে জানা গেছে, বার্ষিক ইজারার ভিত্তিতে তারা একটি সংস্থাকে ঘাটের টোল আদায়ের দায়িত্ব দিত। সর্বশেষ ইজারা মূল্য ছিল ৬৮ লাখ টাকা। এই অর্থের ৬০ ভাগ কেসিসি ও ৪০ ভাগ রূপসা উপজেলা পরিষদের তহবিলে জমা হতো।

কেসিসির এস্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দিন বলেন, আইন অনুযায়ী শহরের ভেতরে যাত্রী পারাপারের ঘাট কেসিসি পরিচালনা করবে। এর ৪০ শতাংশ অর্থ নদীর ওপারের উপজেলা পরিষদকে দিতে হবে।

সে অনুযায়ী কেসিসি ২০ বছর ঘাট পরিচালনা করছে। কিন্তু এটিকে পণ্য পারাপারের ঘাট দেখিয়ে তথ্য গোপন করে বিআইডব্লিউটিএ মামলা করে ঘাটের দখল নেয়। শুনেছেন তারা চার ভাগের এক ভাগ সরকারি তহবিলে দিয়েছে। জনগণের কাছ থেকে আদায় করা বাকি টাকা কোথায় গেল, তারাই ভালো বলতে পারবে।

বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানা গেছে, গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে ঘাট বুঝে নেওয়ার পর তারা প্রতি মাসে খাস আদায়ের জন্য শেখ আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়। মাসে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা হিসাবে ৯ মাস ধরে ওই ব্যক্তিই আদায়ের দায়িত্ব পান।

বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপপরিচালক মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার আগে থেকেই ওই ঠিকাদার ঘাট চালাচ্ছেন। ঘাটটি বার্ষিক ইজারা দিতে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছি। এতে সরকারের কোটি টাকা রাজস্ব আয় সম্ভব বলেও উল্লেখ করেছি। বাস্তব কিছু সমস্যার কারণে অনেক কিছু করতে পারছি না।’

এদিকে, ১ জুন ঘাটটি এস এম হাসিব উদ্দিন পান্নাকে এক মাসের জন্য খাস আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রতি মাসে ৯৭ হাজার টাকা প্রদান করবেন তিনি। ৩ জুন তাঁকে হাটের দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, আইনজীবীর মতামতের ভিত্তিতে খাস আদায়ের জন্য ডাক আহ্বান করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারা কী আদায় করত, খোঁজ নিয়ে পরের মাসে বেশি দর উঠলে অন্য কাউকে দেওয়া হবে।

খুলনা সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, ‘খুলনার সবচেয়ে বেশি মানুষ পারাপার হন রূপসা ঘাট দিয়ে। হাজারো মানুষকে জিম্মি করে টোল আদায়ের নামে কিছু ব্যক্তি বছরে কোটি টাকা তুলত। এখন শুনছি সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে বড় অংশই লুটপাট হয়।

এর সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা, নিয়োজিত ঠিকাদারকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। একই সঙ্গে ঘাটটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানাই।’


এই বিভাগের আরও খবর