মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লা বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের কর্তব্যরত ডাক্তারদের যোগসাজশে দেশের নামি-দামিসহ নাম স্বর্বস্ব ঔষুধ কোম্পানির মেডিক্যাল প্রতিনিধি (এস,আর) দের অত্যাচারে রোগী ও তার স্বজনরা চরম ভোগান্তীতে।বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের মোটর সাইকেল পার্কিং ও রোগীদের প্রেসক্রিপশন টানা টানিতে তাদের দখলে রয়েছে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল প্রাঙ্গন। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত তাদের এমন আনাগোনা ও অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে।
এই সরকারি হাসপাতালটিতে প্রতিদিন চিকিৎসেবা নিতে এসে তাদের এমন আচরণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তাদের এমন অনিয়ম দেখার যেনো কেউ নেই, স্বয়ং এ অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে রেখেছেন এ হাসপাতালেরই মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আজমুর রহমান। যদিও আইনগত নিয়ম রয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের প্রেসক্রিপশনের কোন প্রকার ছবি তোলা যাবেনা। কিন্তু সে আইন বা নিয়ম যেনো কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ। তা মানছেন না কোন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি। ভুক্তভোগী কেউ এসব বিষয়ে কথা বললে তাদের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দিচ্ছেন সেবায় স্বয়ং দায়িত্বরত চিকিৎকগনই।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর প্রেসক্রিপশন (চিকিৎসাপত্র) নিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে রোগী বা রোগীর আপনজনদের হাত থেকে কোন কথা বার্তা বলা ছাড়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তোলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন ওষুধ কেম্পানীর মেডিক্যাল প্রতিনিধি (এস,আর)রা এতে চরমভাবে অত্যাচারিতসহ মারাত্মক ভাবে ভোগান্তীর শিকার হচ্ছে রোগী ও তার স্বজনরা।
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ১০ থেকে ১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। রোগী দেখার মূল সময়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করছেন তারা। এ সময়ে তারা চিকিৎসকদের উপহারও দিচ্ছেন। এতে করে চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিদিনই হাসপাতালের চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে এমন অনিয়ম দেখা যায়।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সদর থেকে আসা কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলাম দিপু, কোটবাড়ী সালমানপুর থেকে হোসনা বেগম, দেবীদ্বার থেকে কানু মিয়া কারারসহ চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে এই হাসপাতালের চিকিৎসক ও মেডিক্যাল প্রতিনিধি(এস,আর) দের বিষয়ে বলেন, এদের কারনে চরম ভাবে আমরা ভোগান্তীর শিকার হচ্ছি। আমরাও এদের এহেন আচারণ থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নিজে চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হয়ে এ অনিয়মের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলাম দিপু। তরিকুল ইসলাম দিপু তার টাইম লাইনে ক্ষোভের সহিত জানান, “আজ ২৭/৬/২৪ তারিখ সকাল ৯.৩০মি: যাই বক্ষব্যাধি ক্লিনিক কুমিল্লা আমার নিজের সমস্যা নিয়ে। অন্য রুগীদের ন্যয় অপেক্ষায় থাকি, অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় দেখি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ডা: এর চেম্বারে ঢুকে রুগী দেখায় বিঘ্ন ঘটায় তাই কোম্পানি প্রতিনিধি গণকে বলতে বাধ্য হলাম ভাই আপনাদের ডা: সাক্ষাত এর সময়ত এখন না কেন রুগী দের সময় নষ্ট করছেন, এমনি কর্তব্যরত ডা: আমার স্লিপ খানা বের করে হাতে দিয়ে বলেন আমার চিকিৎসা করবেন না।”
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তারের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।