শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনমঃ
ময়মনসিংহে অবৈধ ব্যাটারি অটো তৈরির কারখানা, চুরির সংখ্যা বেড়েই চলেছে মিটফোর্ড এ  নৃশংসভাবে ইট দিয়ে হত্যার ঘটনায় ২ জন ও চট্টগ্রামে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ১১ খন্ড করে গুম করার চেস্তার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার সহ   সাংবাদিকদের সাথে র‍্যাবের মতবিনিময় আরাফাত রহমান কোকো স্পোর্টস একাডেমির উদ্দোগ্যে জোড়া খাসি প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট গাবতলীতে অনুষ্ঠিত *মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি:* *অগ্রগতি ও অন্তরায়* *জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লব: আইন, নীতি, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের আলোকে মনস্তাত্তিক এবং ভৌগোলিক বিশ্লেষণ* দাখিল পরীক্ষার ফলাফলে শীর্ষ স্থানে কাগতিয়া মাদ্রাসা মিডফোর্ডে ব্যাবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা -কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে ববি’র শিক্ষার্থীরা অভিযানে গৌরবময় অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড টাগ ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর ক্রুদেরকে ‘প্রশংসাপত্র’ প্রদান করলো ‘আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (IMO যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ১৩৫৩ কর্মকর্তা ছাঁটাই সন্তান জন্ম দিতে এখনো আমেরিকায় আসছেন বাংলাদেশি দম্পতিরা গ্রিনকার্ডধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত থাকার প্রমাণ দেখাতে হবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত আদেশ স্থগিত শিকাগো ম্যারাথন ও আয়রনম্যান নিউইয়র্কে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশি মিশু চাঁদপুরে খুতবা পছন্দ না হওয়ায় ইমামকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ! রাজনীতি, সন্ত্রাস ও নৈতিক পতন: একটি ভয়াবহ বাস্তবতা যেই লাউ সেই কদু *”যোগ্য বিচার চাই – মানবতা যেন হার না যায়!”* এডভোকেট এম হেলাল উদ্দিনের সংক্ষিপ্ত সফর: মেহেন্দিগঞ্জের মানুষের পাশে মানবিক নেতার একদিন মিটফোর্ড খুন- খুব শীঘ্রই সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচার আইনে শাস্তি দিতে হবে, নয়তো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রদত্যাগ করার, দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তুলবো কাউকে মানসিক কষ্ট দিচ্ছেন? খুব যত্ন করে দিন, যাতে কেউ টের না পায়!

রক্ত যার, উৎসব তার নয়- লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫

রক্ত যার, উৎসব তার নয়-

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান

যখন দেশের আকাশে যুদ্ধের গন্ধ ভাসে, রাজপথে নামে মিছিল, রাস্তায় জ্বলে আগুন—তখন রাজনীতিকেরা ব্যস্ত থাকে কৌশল তৈরিতে, ব্যারিকেডের পেছনে দাঁড়িয়ে দেয় নির্দেশ, বুলেট ঠেকায় না। ধনিকরা তখন তোষণের ছায়ায় থাকে, নিরব নিরাপত্তা ঘেরা দালানে বসে পাঠায় কিছু খাদ্যদ্রব্য, কিছু টাকার চেক। আর যারা অস্ত্র হাতে নেয়, বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় বন্দুকের মুখোমুখি—তারা সাধারণ, তারা গরিব, তারা চাষার ছেলে, ঠেলাগাড়ি চালানোর ছেলেটা, কিংবা সেই বৃদ্ধা যার কাঁধে একমাত্র সন্তানের স্মৃতি ঝুলে আছে।

দেশের সব বিপ্লব, সব যুদ্ধ, সব সংকটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এই মানুষগুলো। তারা জানে না রাষ্ট্রবিজ্ঞান, জানে না কূটনীতি, শুধু জানে—বাঁচার একটাই পথ, রুখে দাঁড়ানো। তাদের শরীরেই ঝরে রক্ত, তাদের হাতেই গড়ে ওঠে স্বাধীনতা, তাদের কাঁধেই চলে শহীদের কফিন। তবু ইতিহাসে তারা থাকে না।

যুদ্ধ শেষ হলে মঞ্চে ওঠেন নেতারা। মুখে রাজনীতির সাহসী গল্প, হাতে ক্ষমতার পতাকা, পেছনে দেশপ্রেমের হ্যাশট্যাগ। তারা বলে, “আমরা স্বাধীনতা এনেছি।”

আরও পড়ুনঃ কলসী ভরা গুপ্তধন ( একটি রূপকথার গল্প )

ব্যবসায়ী আসে নতুন বাণিজ্যের ছকে, যেখানে প্রতিটি রক্তের দাগকে রূপান্তর করে মুনাফায়। স্বাধীনতা হয়ে ওঠে তাদের জন্য উৎসব, বিজয়ের ফানুস উড়ে রাজধানীর আকাশে।

এদিকে গরিবেরা? তারা তখন হাসপাতাল খোঁজে, খোঁজে একটা ছবি—যেখানে হয়তো ছেলের মুখ আছে, অথবা মেয়ের পরিচয়পত্র। তাদের ঘরে ঢোকে না জাতীয় পতাকা, ঢোকে ক্ষুধা আর নিখোঁজের ভয়।
তারা যুদ্ধ দিয়েছিল, আজও যুদ্ধে আছে—জীবন যুদ্ধ, বেঁচে থাকার যুদ্ধে। স্বাধীনতার পরে তাদের হিস্যা শুধু স্মৃতির ভার আর রাষ্ট্রের ভ্রান্ত প্রতিশ্রুতি।

ইতিহাস বারবার একই দৃশ্য মঞ্চস্থ করে। পলাশীর প্রান্তর থেকে ৭১, কিংবা ২০২৪—সবখানেই পর্দার আড়ালে থাকে এক মহাবঞ্চনা। যুদ্ধ আর রক্ত গরিব দেয়,স্বাধীনতা আর সরকার ধনীরা নেয়।

২০২৪ সালে আবারো প্রমাণ হলো—রাজনীতি বদলায়, মুখ বদলায়, প্রতিশ্রুতি বদলায়, কিন্তু ভাগ্য বদলায় না সেই ছেলেটার, যার নাম কোনো শহীদ মিনারে লেখা থাকে না, কেবল মায়ের কাঁধে থাকে ছবি হয়ে। পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন আসে, মানুষ ভোট দেয়, কিন্তু কিছুই বদলায় না। বাড়ে কেবল পণ্যের দাম, বিদ্যুতের বিল, আর নেতা-নেত্রীর গাড়ির বহর। দেশের মাটি সোনা ফলায় না, ফোটায় ঘাম, রক্ত, আর দীর্ঘশ্বাস।

আরও পড়ুনঃ কুড়িগ্রামে শিশু ও যুবদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নে; আমার জীবন আমার স্বপ্ন বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

তবু তারা ভালোবাসে দেশ। সেই ভালোবাসা কখনো পতাকার রঙে, কখনো সন্তানের নামে রাখা স্কুলে, কখনো কবরের পাশে ফেলে আসা গোলাপফুলে।
তারা যুদ্ধ চায় না, তবু যুদ্ধ বাধলে সবার আগে ছুটে আসে, কারণ তারা জানে—দেশ না থাকলে ঘর থাকে না। কিন্তু ঘর থাকলেও, তাদের জন্য দেশ থাকে না।

স্বাধীনতা তাদের অধিকার নয়, বরং তাদের সান্ত্বনা। বিজয় দিবস মানে তাদের কাছে একটি ফুল, যেটা তারা রেখে আসে কবরের গায়ে, আর একটি দীর্ঘশ্বাস, যেটা চলে যায় আকাশে।
রাজনীতি তাদের দেখে না, রাষ্ট্র তাদের ডাকে না, মিডিয়া তাদের চেনে না। তারা আছে শুধু গণনার বাইরে, সংবেদনশীলতার সীমানার ঠিক ওপারে।

তবু ইতিহাস যদি একদিন চোখ খোলে, যদি সত্যিই একদিন নতুন পৃষ্ঠা লেখা হয়— তাহলে সেই পৃষ্ঠায় থাকবে না কোনো প্রেসিডেন্টের নাম, কোনো সাইনবোর্ডধারী নেতার মুখ, কোনো মুনাফা করা শিল্পপতির পদবি। সেই পৃষ্ঠায় লেখা থাকবে—
“রক্ত দিয়ে যারা স্বাধীনতা কিনেছিল, উৎসব তাদের ছিল না।”

লেখক ও কলামিস্ট, শিক্ষার্থী আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়,কায়রো,মিশর


এই বিভাগের আরও খবর