মোঃ আরিফুল ইসলাম মুরাদ সিনিয়র রিপোটারঃ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে একাধিক দাগে ভূমির মালিক হওয়া সত্ত্বেও ভূমিহীন সেজে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫শে জুন এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জামালগঞ্জ উপজেলার বুতিয়ারপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার পুত্র গোলাপ মিয়া।
অভিযোগ সূত্রে জানা য়ায়, গত দুই যুগ পূর্বে সরকারি খাস ভূমিতে মাটি ভরাটসহ বনজঙ্গল পরিষ্কার করে বাড়িঘর তৈরী করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন গোলাপ মিয়াসহ আরো বেশ কিছু পরিবার।
তবে কিছু ভূমিখেকো কু-চক্রি মহলের লোক তাদের জমি-জামা থাকার পরেও ভূমিহীন সেজে এসব ভূমি বন্দোবস্ত হাসিল করে নেয়। এমনকি বর্তমানে তারা প্রতিনিয়িত অভিযোগকারীকে বাড়িঘর ছাড়তে ভয়ভীতিসহ প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও আদালতে একটি মামলা দায়ের করে ভূমিহীন পরিবারগুলোকে উচ্ছ্যেদে উঠে পড়ে লেগেছে তারা।
আরও পড়ুনঃ মানিকছড়ি সোহেল হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মংসানুসহ ৭ জনকে আটকে সক্ষম হয়েছে যৌথবাহিনী
এমন অবস্থায় ভোক্তভোগী ওই নীরিহ পরিবারের লোকজন মাথা গোজার শেষ সম্ভলটুকু রক্ষায় নুরুল আমিনের বন্দোবস্ত বাতিলের দাবী জানান জেলা প্রশাসকের কাছে।
এ ব্যপারে জামালগঞ্জ উপজেলার শরিফপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিব বলেন, নুরুল আমিন জীবিত থাকতে আমার বাপ-চাচাদের জমির উপরে বন্দোবস্ত দেখাইয়া একটি মামলা দায়ের করে।
পরে আমরা কাগজপত্র দেখানোর পর আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিলে মামলা খারিজ হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুল আমিনের ছেলে দেলোয়ার গংরা বর্তমানে পানি নিষ্কাশনের খালসহ নীরিহ ১৫/২০টি পরিবারের উপর মামলা দায়ের করে। এখন তারা আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে উচ্ছ্যেদের পায়তারা করছে।
একই গ্রামের শামসুল হক বলেন, নুরুল আমিনের ছেলে দেলোয়ার কোর্টে মুহুরিগিরী করে। তার বাবা ও মায়ের নামে বেশ কিছু ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে নেয়। এখন নানা ভাবে মানুষকে মামলার ভয়ভীতি দেখায়। নানা ধরনের হুমকি-দামকি দিয়ে সুনামগঞ্জে আসলে মারধর করবে বলে হুশিয়ারি দেয়। তার এসব হুমকি-দামকি ও মামলার হাত থেকে বাঁচতে নিরীহ মানুষরা তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরও পড়ুনঃ মানিকছড়ি সোহেল হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মংসানুসহ ৭ জনকে আটকে সক্ষম হয়েছে যৌথবাহিনী
এ ব্যপারে অভিযোগকারী গোলাপ মিয়া বলেন, আমরা বিগত ৩০ বছর পূর্বে সরকারী আইডব্লিউটি এর জায়গায় বসবাস করে আসছিলাম। তবে নদীভাঙ্গনের আমাদের এসব বসতভিটা বিলীন হওয়ার পরে আমার শশুরের দখলে থাকা জায়গার বনজঙ্গল পরিষ্কার করে মাটি ভরাটের মাধ্যমে বসতবাড়ি তৈরী করে বসবাস করে আসছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী প্রভাবশালী ও বহু জমির মালিক নুরুল আমিনের বন্দোবস্ত বাতিল করে আমরা নিরীহ ও অসহায় পরিবারের মানুষদের বসবাসের সুযোগ করে দিবেন।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত নুরুল আমিনের পুত্র দেলোয়ার বলেন, আমার বাবা যখন ভূমিহীন ছিলেন তখন জমিগুলোর বন্দোবস্ত পান। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । উল্টো শামছু গংরা আমার বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে এবং আমার কাছে চাঁদা দাবী করছে। আমি এ বিষয়ে আমি জামাগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, জামালগঞ্জে এ ধরনের একাধিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এবং যেগুলো বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছিলো তার অনেকগুলোর বন্দোবস্ত আমরা বাতিল করেছি। এসব পক্রিয়ার সাথে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।