দুলাল সরকারঃ
যেখানে মানুষের জীবন’ই মূল্যহীন,সেখানে কুকুরের প্রাণ বাঁচানো চেষ্টা,,,জীবন ও মৃত্যুদানের এক মাত্র মালিক মহান আল্লাহ।আমরা চাইলেই কাউকে রক্ষা করতে পারবো না,,,তবে চেষ্টা করে অবুঝ মনকে শান্তি দিতে পাড়ি,সেদিন একাধিক দূর্ঘটনা মুখোমুখী হই।
প্রথমত বালুয়াকান্দী গ্রামের হিন্দুপাড়া নিবাসী নর সুন্দর(যিনি দীর্ঘ ২২/২৩ বছর যাবৎ আমাদের ও ব্যক্তিগত ভাবে আমার চুল কেঁটে দিত)শ্রী রঞ্জিত বর্মন,বালুয়াকান্দী বটতলাস্থ দোকান থেকে কাজ শেষ করে বাড়ী ফিরছিল,পথিমধ্যে সড়ক দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়,দীর্ঘদিন এর চেনা জানা আর তাঁর আন্তরিক ব্যবহারে সম্পর্কটা ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ।
স্বাভাবিক কারণেই লাশ বিনা ময়নাতদন্তে তাঁর ধর্মীয় রীতিমতো দাহ করার ব্যবস্থা করা নিয়ে সাড়াদিন’ই ছিলাম ব্যস্ত,,প্রচন্ড ক্লান্ত দেহ,বিমর্ষ মন।এই যখন অবস্থা তখন খাজা হোটেল সংলগ্ন মহাসড়ক পারাপারের সময় দেখলাম কুকুরটি ধাপরাচ্ছে,মনে হলো মুখে পানি দিতে পারলে প্রানীটি যদি বেঁচে যায়,একজন অকৃত্রিম বন্ধু হারানোর যন্ত্রনার গুমরে উঠা মন।
আরও পড়ুনঃ পর্ব-৬. সূরা ইয়াসীনে বর্ণিত নীতি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের বিশ্লেষণ
অবচেতন ভাবেই সড়কের মাঝ খান থেকে দু’হাত দিয়ে কুকুরের চার পা ধরে পাশে নিয়ে এলাম,জমে থাকা বৃষ্টির পানি মুখে দিলাম,কিছুটা মুখে,জিহ্বায় পড়লো কিছুটা বাহিরে গড়ালো,বেশ কয়েক বার এভাবে পানি দেওয়ার পরে মনে হলো,কুকুরটা পানি পান করে শেষ নিঃশ্বাস নিল,,,,আজ হঠাৎ একজন ম্যাসেঞ্জারে ছবিগুলো পাঠালো।
মনটা খারাপ হয়ে গেল সেদিন আরো দূর্ঘটনার মুখোমুখী হয়েছিলাম,রঞ্জিতের এতিম সন্তানদের জন্য মন কাঁদলেও এখন পর্যন্ত সে ভাবে সহায়তার হাত বাড়াতে পাড়ি নাই,,,,তবে আজ কিছুটা শান্তনা পেলাম দীর্ঘ দু’মাস ঘুরে ওর এতিম সন্তানদের সামান্য কিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিতে পেরে।
মানবিক মানুষ হওয়ার আজন্ম চেষ্টা,,, জানি না কতটুকু মানবিক হওয়ার পথ হেঁটেছি।