ডেস্ক রিপোর্টঃ
আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার বাংলাদেশ দলের সামার্থ্য নিয়ে প্রশ্ন। আগমী বছর টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই দল কতোটা যোগ্য তা নিয়েও নানা আলোচনা-সমালোচনা। এমন কঠিন মুহূর্তে সামনে রেখেই আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
দুই দলের ২০ ওভারের ক্রিকেটের পরিসংখ্যানেও বড় ব্যবধান। জয়-পরাজয়ের হিসেবে অনেক পিছিয়ে টাইগাররা। এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ দল দাড়িয়ে আছে একটি পরীক্ষার সামানে। বিশেষ করে দলের ব্যাটিং আর নেতৃত্ব দুটিকেই প্রমাণ করতে হবে নতুন করে। অধিনায়ক লিটন দাস ফর্মে নেই, কবে ফিরবেন তাও বলা যাচ্ছেনা। শুধু তাই নয় তার পারফম্যান্সের ধারাবাহিকতা নিয়ে আছে প্রশ্ন।
একই অবস্থা দলের বাকি ব্যাটারদের নিয়েও। এক ম্যাঝে জ্বলে উঠলে পরের ম্যাচেই যেন হওয়ার ফানুষ। আসন্ন বিশ্ব্বকাপের আগে নিজেদের দেশের বাইরে প্রমাণের বড় সুযোগ। কিন্তু প্রশ্ন একটাই পারবেতো বাংলাদেশ! দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সও কঠিন চ্যালেঞ্জে। সফল্য ধরা না দিলে তার বিদায়টাও হতে পারে অস্বস্তিকর। বিশেষ করে অরব আমিরাতের বিপক্ষে হারের পর ফিসফাঁস শুরু হয়েগেছে। তবে এই কোচ মনে করেন সেই হারটাই হবে তাদের জন্য বড় অনুপ্রেরনা।
তিনি বলেছেন, ‘আমিরাতে সিরিজ হেরে যাওয়া কঠিন। কিন্তু কখনো কখনো এমন কিছু আপনাকে চাঙা করে তোলে, আশা করি আমাদের দলকেও তা করবে।’ অন্যদিকে এরই মধ্যে বাংলাদেশ শিবিরে একের পর ইনজুরির হানা। প্রথমে দলের অন্যতম সেরা পেসার তাসকিন আহমেদ ইনজুরির কারণে দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর দলের ব্যাটার সৌম্য সরকারও একই কারণে ছিটকে পড়েছেন।
আরেক দিকে দলের আরেক সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ছিটকে পড়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখেনা ফিজকে ছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলিং বিভাগও থাকবে চ্যালেঞ্জে। কারণ আমিরাতের বিপক্ষে হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিবরা নিজেদের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সৌমের পরিবর্তে মেহেদী হাসান মিরাজ আর ফিজের জায়গাতে দলে জায়গা পেয়েছেন আরেক পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। অন্যদিকে ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন পারফরর্ম করলেও তাদের ধারাবাহিকতা নিয়ে আছে প্রশ্ন।
দলের অধিনায়ক লিটন ও সিনিয়র ক্রিকেটা নাজমুল হোসেন শান্ত ফর্মে নেই। তাওহীদ হৃদয়, সামীম হোসেন পাটোয়ারিরাও দলের জন্য অবদান রাখতে পারেছেননা। তবে জাকের আলী আছেন, তিনি দলকে টানছেন অনেকটাই একাই। দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন পাকিস্তান সুপার লীগে চ্যাম্পিয়ান দলে অবদান রাখা রিশাদ হোসেনও। সব মিলিয়ে পাকিস্তানে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজকে টাইগারদের ‘পরীক্ষা’ বললে ভুল হবেনা। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা অধিনায়কের সামনে।
নেতৃত্বই নয় প্রমাণ দিতে হবে নিজের পারফরম্যান্সেরও। নয় তিনি হয়ে থাকবেন দলের জন্য বড় বোঝা। অন্যদিকে সবশেষ দুটি সিরিজে অবশ্য ভালো করতে পারেনি পাকিস্তানও। নিউজিল্যান্ডের কাছে পাঁচ ম্যাচের টিুটোয়েন্টি সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে হেরেছে। তার আগে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও। এখনই পাকিস্তানকে হারানোর জন্য সেরা সময় কি না, এমন প্রশ্নও ছিল সিমন্সের কাছে। তিনি বলছেন, ‘আমি জানি না পাকিস্তানকে হারানোর জন্য এটাই সেরা সময় কি না। আমার মনে হয়, এটা আমাদের সেরাটা খেলার সময়। যেকোনো সময়ই পাকিস্তান ভয়ংকর দল।
তারা আজ খারাপ খেলতে পারে, কাল আবার আলাদা হয় যাবে। আপনারা বলছেন পাকিস্তান ভালো খেলছে না, কিন্তু পাকিস্তান তো পাকিস্তানই।’ স্বাগতিকদের নয়া কোচও নিজেরে নিয়ে একটু ভয়ে আছেন। ঘরের মাঠে খেললেও সদ্য নিযুক্ত পাকিস্তানের সাদা বলের প্রধান কোচ মাইক হেসন সমীহ করছেন বাংলাদেশকে। লাহোরে তিনি বলেছেন, ‘দেখুন, এমন কন্ডিশনে বাংলাদেশ সব সময় চ্যালেঞ্জিং। তাদের নিজেদের কন্ডিশনে আমি অনেকবার দলের অংশ ছিলাম।
তারা চ্যালেঞ্জিং।’ এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন নতুন পেস বোলিং কোচ শন টেইট। পিএসএলে কাজ করা সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান পেসার পাকিস্তানেই যোগ দিয়েছেন দলের সঙ্গে। পেসারদের জন্য তিনি দারুণ সংযোজন হবেন বিশ্বাসের কথা বলেছেন সিমন্স।