মোঃ আরিফুল ইসলাম মুরাদ সিনিয়র রিপোটারঃ
রাজধানী পুরান ঢাকার ছেলে হলেও যৌবন কাল হতে আজ অবদি বসবাস করছেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ী গ্রামে। এর পেছনে রয়েছে হৃদয়স্পর্শী ঘটনা প্রবাহ।
বাঁশখালীর মানুষ ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সঠিক চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত ছিল । তখন এম.বি.বি.এস পাস করা চিকিৎসক সোনার হরিণ! উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে সাধারণ রোগেও মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এমন সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাস করা ডাঃ পি.সি. পাল অনুন্নত বাঁশখালীতে এসে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার ব্রত নিয়ে।
তিনি ১৯৪১ সালে রাজধানীর পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে এম.বি.বি.এস ডিগ্রী সমাপ্ত করে ঢাকা পি.জি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
মাত্র কয়েক বছর পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি ছাড়া তাঁর বাবা-মা-ভাই-বোন সহ পুরো পরিবার ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও তিনি চট্টগ্রামে
থেকে গেলেন কিছু মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার টানে।
পরে বৈলছড়ি কে.বি বাজারের পশ্চিম পার্শ্বস্থ এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের মেয়ে বিয়ে করে সেখানেই বসতি শুরু করেন।
আরও পড়ুনঃ নীল পতাকার ছায়ায় ঢাকা এক অদৃশ্য শক্তির নীরব অগ্রযাত্রা
মুলতঃ এর পর হতেই বাঁশখালীর প্রত্যেক অঞ্চলে পৌঁছে যায় নির্লোভ প্রকৃতির এ মেধাবী মানুষটির চিকিৎসা সেবা।
তিনি জানিয়েছেন,বর্তমানে নতুন নতুন রোগ সৃষ্টি ও
এর প্রতিষেধক নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২ ঘন্টা গবেষণা বা স্টাডি করেন।
তিনি যথেষ্ট ধার্মিক,তিনি বিশ্বাস করেন, নিয়মিত ধর্মচর্চা মানুষের মনন ও স্মৃতি শক্তির ভারসাম্য ঠিক রাখে।
উনি শুধু চিকিৎসাসেবায় নয়, সমাজসেবায়ও ওনার যথেষ্ট অবদান আছে। বর্তমানে উনি চাইলে রোগীর ফি ৭০০থেকে ১০০০ টাকা নিতে পারতেন কিন্তু মানবতার সেবায় উনি নিচ্ছেন মাত্র ২০০/১০০। আবার এলাকার কারো কারো কাছ থেকে টাকাই নেন না। উনি বৈলছড়ী গ্রাম কে আলোকিত করেছেন। উনার আলোয় আলোকিত হয়েছে সমাজ। গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্মান করলে সকলে উপকৃত হন।
৮৪ বছর বয়সী এ মানুষটি আমৃত্যু বাঁশখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিতে সর্বোচ্চ ত্যাগী মনোভাব পোষণ করেন।
তিনি সকলের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছেন ।