স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাইবান্ধার সাঘাটা থানার পুকুর থেকে সিজু মিয়া (৩০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশ তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। এ ঘটনার বিচার দাবিতে শনিবার বিকেলে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ের সামনে শত শত মানুষ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধ জনতা দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান নেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিলে তাঁরা সেখান থেকে সরে যান।
আরও পড়ুনঃ গোবিন্দগঞ্জে সমাজসেবা অফিসের উদ্যোগে ‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ’ গ্রহণ অনুষ্ঠিত
মানববন্ধনে নিহতের মা মোছাঃ রিক্তা বেগম, বড় বোন মোছাঃ খুশি বেগম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ ফেরদৌস সরকার রুম্মান, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ রমজান আলীসহ অন্যান্যরাও বক্তব্য দেন।
সিজুর পরিবারের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে তিনি একটি পুরনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনেছিলেন। পুলিশ সেটিকে চোরাই দাবি করে থানায় যোগাযোগের জন্য বলে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাঘাটা থানা থেকে ফোনে ডেকে নেওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার সকালে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, থানায় ডেকে নিয়ে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসেবে উপস্থাপন করতে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ রাজবাড়ীর পাংশায় মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় নিহত ১ এবং আহত ১জন
নিহতের মা রিক্তা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করে নাটক সাজিয়েছে পুলিশ। এ হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, একজন মানুষের মরদেহ ১২ ঘণ্টা পানির নিচে থাকলে পকেটের কাগজ ভিজে যাওয়ার কথা, কিন্তু মরদেহ উদ্ধারের সময় তার পকেটে থাকা স্পষ্ট প্রবেশপত্র ছিল একেবারে শুকনা। এটা প্রমাণ করে, তাকে অন্যত্র হত্যা করে পরে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফেরদৌস সরকার রুম্মান বলেন, সিজু ছিল শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের। তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর ভিডিও প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সিজু মিয়া সাঘাটা থানায় ঢুকে এএসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেন। পরদিন সকালে সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে পুকুর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এটি সাজানো নাটক এবং প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা।
নিহত সিজু মিয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন।