মোঃ এরশাদ আলী, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি :
১১ জুলাই (শুক্রবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) ঢাকা মহানগর শাখার আয়োজনে রাবিপ্রবিতে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা, পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আদিবাসী দাবি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ সংশোধন করে জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ২০২৫’ প্রণয়নের প্রস্তাবনার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পিসিসিপি’র সিঃ সহ-সভাপতি দিদারুল আলমের সভাপতিত্ত্বে ও পিসিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক রিয়াজুল হাসানের সঞ্চলনায় উক্ত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক জিয়াবুল হক।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মোঃ রাসেল মাহমুদ এসময়ে আরও বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সিঃ সহ-সভাপতি আল আমিন, পিসিসিপি বান্দারবান জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পিসিসিপি লামা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন প্রমুখ।
এসময়ে পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ বলেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পাহাড়ি-বাঙালির দৃঢ় আশাবাদ থাকলেও, কিছু উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত জনগণের প্রত্যাশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৩ জুন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০ সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এছাড়া নতুন অধ্যাদেশে ৬ সদস্যের পরিচালনা কমিটিতে সবাইকে কেবলমাত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি থেকে মনোনয়নের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রধান বক্তা পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করে আসছে কিছু উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। এরা পাহাড়ের উন্নয়নকে পর্যটক মূখি না করে জনশূন্য করে রাখতে চায়। তারা শিল্প কারখানা তৈরিকে বাঁধাগ্রস্থ করছে, এতে করে পাহাড়ের শিক্ষিত বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মানববন্ধনে পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একদিকে আদিবাসী স্বীকৃতির গোপন পথ তৈরি করছে, অন্যদিকে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি জনগোষ্ঠীকে সাংস্কৃতিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বঞ্চনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী-র ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পিসিসিপি’র নেতৃবৃন্দ। তাদের বক্তব্য ও নীতিগত অবস্থান সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদের বিরোধী এবং গোষ্ঠীগত পক্ষপাতমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রণালয়ের ৯০% বাজেট বরাদ্দ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে। মানববন্ধনে বক্তারা নিম্নোক্ত দাবি সমূহ উত্থাপন করেন :
আরও পড়ুনঃ সুমন সভাপতি শাহারুল সম্পাদক, গোবিন্দগঞ্জ সাংবাদিক পরিষদের কমিটি গঠন।
১. ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিল করতে হবে।
২. কেবলমাত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির ৬ জন সদস্য মনোনয়নের বিধান বাতিল করতে হবে।
৩. উপদেষ্টাদের বিতর্কিত ভূমিকায় নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট বণ্টনের বৈষম্যের নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক পুনর্বিন্যাস নিশ্চিত করতে হবে।