চাতলপাড় প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ঐতিহ্যবাহী চাতলপাড় ইউনিয়ন এক সময় ছিল বিএনপির অন্যতম ঘাঁটি। মরহুম জুমন আলী, এস এম সাফি মাহমুদ, আলহাফজ সরদার, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানসহ একঝাঁক ত্যাগী নেতার হাত ধরে এ ইউনিয়নে বিএনপি শক্ত অবস্থানে ছিল। যদিও একসময়ে মরহুম মুহাম্মদ আলী জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করেছিলেন, যা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই শক্তিশালী রাজনৈতিক ইউনিটকে একটি পরিবারের একক নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, চাতলপাড় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শরিফ উদ্দিন, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জাকারিয়া
(আলাউদ্দিনের ছেলে), বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ কামরুল হাসান বাবুল (গিয়াস উদ্দিনের বোন জামাই) এবং বিএনপির সহ-সভাপতি আফছর মিয়া (গিয়াস উদ্দিনের চাচাতো ভাই) – সকলেই একই পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বিএনপি’র মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনে কি শুধুমাত্র একটি পরিবারের এত পদ থাকা উচিত? অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা পর্যায়ের নেতারা এলেও স্থানীয় নেতাকর্মীরা সঠিকভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পান না।
অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। বাজারের ইজারাদার ব্যবস্থাপনাতেও গিয়াস উদ্দিনের প্রভাব রয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন। এমনকি কলা-আনারস ব্যবসা থেকে শুরু করে টিউবওয়েল বসানোতেও রয়েছে তার ‘বিশেষ দক্ষতা’। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের চেষ্টার অভিযোগও উঠে এসেছে।
আরও পড়ুনঃ মধুপুরে নিষিদ্ধ ৪০টি চায়না জাল ধংস করেছে উপজেলা প্রশাসন
এছাড়া গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্থানীয় তদন্ত কেন্দ্রের দালালী, হুমকি, মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকাসক্তি এবং তার চাচাতো ভাই আফসরের বিরুদ্ধে বাজারের এক পতিতা নারীর সঙ্গে বিয়ের অভিযোগও রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতন মহল চাতলপাড় ইউনিয়ন বিএনপির শুদ্ধিকরণ ও দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। অনেকে মনে করছেন, একটি পরিবারের একাধিপত্য থাকলে প্রকৃত কর্মী এবং ত্যাগী নেতারা হতাশ হয়ে পড়বেন, যা দলের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ।