ডেস্ক রিপোর্টঃ
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩-এর আওতায় এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী, বহু বছর ধরে হারিয়ে যাওয়া বা বেদখল হওয়া জমি ফেরত পাওয়ার আশা ফিরেছে। এমনকি ১৩৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া জমিও ফিরে পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য চারটি প্রমাণের মধ্যে মাত্র একটি প্রমাণ থাকলেই যথেষ্ট।
চারটি প্রমাণের মধ্যে একটি থাকলেই যথেষ্ট:
সিএস খতিয়ান :
যেসব জমি ১৮৮৮ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে সিএস খতিয়ানে রায়তি স্থিতিবান হিসেবে উল্লেখিত ছিল। রায়তি স্থিতিবান মানে দখলীয় সত্ত্বে স্থায়ী মালিকানা।
পূর্বপুরুষ কোনদিন জমি বিক্রি, হস্তান্তর বা রেজিস্ট্রি করেন নি এমন ক্ষেত্রে এই খতিয়ান ভিত্তিতে মালিকানা দাবি করা যায়।
দলিল :
যে কোনও রেজিস্ট্রিকৃত দলিল, যেমন ক্রয় দলিল, উত্তরাধিকার দলিল ইত্যাদি।
দলিলটি অবশ্যই আইনগতভাবে বৈধ হতে হবে, কোন প্রতারণা ছাড়া।
ওয়ারিশিয়ান সনদ :
গ্রামাঞ্চলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বা শহরাঞ্চলে সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে প্রাপ্ত ওয়ারিশিয়ান সনদ।
সনদে সকল বৈধ ওয়ারিশদের নাম থাকতে হবে।
আদালতের রায়/ডিগ্রি :
যে কোনও বিজ্ঞ আদালতের রায় বা ডিগ্রি যা জমির মালিকানা প্রমাণ করে।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ:
এই আইনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তির নামে সর্বশেষ রেকর্ড বা খতিয়ান আছে এবং জমি দখলে রয়েছেন, তাকে আদালতের অনুমতি ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না।
যদি কোন ব্যক্তি বা পরিবার বহু বছর ধরে জমি ভোগ দখলে থাকে কিন্তু কোন কাগজপত্র না থাকে, তাহলে তাকে উচ্ছেদ করা যাবে।
আরও পড়ুনঃ অজিদের ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা
তামাদি আইনের ২৮ ধারা কার্যত বাতিল হয়ে গেছে। এই আইনের আওতায় আর কেউ ১২ বা ২০ বছরের বেশি সময় জমি দখল করে রাখতে পারবে না।
জমি ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়া:
প্রথমে আপনার পক্ষের প্রমাণপত্রগুলি (সিএস খতিয়ান, দলিল, ওয়ারিশিয়ান সনদ বা আদালতের রায়) সংগ্রহ করুন।
বিজ্ঞ আদালতে মামলা করুন এবং আদালতের রায় নিন।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করুন এবং পরিশিষ্ট পাঁচ ফর্ম জমা দিন।
আদালতের রায় এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের ভিত্তিতে জমি উচ্ছেদ বা ফেরত পাওয়া যাবে।
আইনগত দিক থেকে কোন ব্যক্তি বা পক্ষ যদি জমি উচ্ছেদে বাধা দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে।
নতুন আশা ও নতুন সুযোগ:
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩-এর মাধ্যমে এমন অসংখ্য পরিবার যারা দীর্ঘদিন ধরে জমি হারিয়েছিলেন, তাদের জন্য এখন আশার আলো দেখা দিয়েছে। আইনটি মাঠপর্যায়ে কার্যকরভাবে প্রয়োগ হলে সকলেই সুফল পাবেন।
উপসংহার:
১৩৭ বছর পরেও জমি ফেরত পাওয়া সম্ভব হয়েছে। প্রমাণপত্র সংগ্রহ করুন, আদালতে মামলা করুন এবং ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় থাকুন। নতুন আইন আপনার পক্ষে কাজ করছে।