নিজস্ব প্রতিনিধি
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কুড়ারঘাট ৩১ শয্যা সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ভয়াবহ অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা অবহেলা। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ ছোট শিশুদের ভুল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, এক রোগীর রক্তের রিপোর্ট অন্য রোগীর কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে, রোগ নির্ণয় ছাড়াই প্রেসক্রিপশন লেখা হচ্ছে।
ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের এই চরম অনিয়মের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, গর্ভবতী মায়েরা সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে জীবনের ঝুঁকিতে পড়ছেন। সরকারি ফার্মেসিতে দায়িত্বে থাকা এক মহিলা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাধারণ কাশির সিরাপের বদলে এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে রোগীর ক্ষতি করছেন।
অবাক করার বিষয়, যে ব্যক্তি সঠিকভাবে ওষুধ চিনতে পারেন না তাকেই ডাক্তারের চেয়ারে বসে রোগী দেখতে দেখা গেছে। এছাড়া, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ দুপুর ২টার পর বন্ধ থাকে যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও মানবিকতার পরিপন্থী বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
রোগীরা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালের অনেক নার্স ও কর্মচারীর আচরণ অমানবিক ও রূঢ়। পরিচালককে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই অবস্থার প্রতিবাদে স্থানীয় নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ৩ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টায় কুড়ারঘাট ৩১ শয্যা হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন ন্যায্য চিকিৎসা আমাদের অধিকার,
অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ হোক,
সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত হোক।
কামরাঙ্গীরচরের সাধারণ মানুষের সাথে সংহতি প্রকাশ করে এনসিপি কামরাঙ্গীরচর মানববন্ধনে অংশ নেয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সের টাকায় গড়া হাসপাতালে যদি জনগণই সেবা না পায়, তাহলে এই কামরাঙ্গীরচরে কোনো সরকারি হাসপাতালের প্রয়োজন নেই।
খেটে খাওয়া মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত ১১ দফা দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন তারা। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে।
মানববন্ধন শেষে বক্তারা বলেন, মানববন্ধন শেষ হয়েছে, কিন্তু আমাদের আন্দোলন শেষ হয়নি। কামরাঙ্গীরচরের ২০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করে আমরা ঘরে ফিরব না।