এম বাদল খন্দকার (বিশেষ প্রতিনিধি)ঃ
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও নির্যাতনের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়।
এর আগে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের সাথে সভা করে মামলায় হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা অবহিত করেন। এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, আমি সব ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছ থেকে কি পরিমান সাপোর্ট পেয়েছি সেটা আমি নিজে জানি। এখানকার মূলধারার সাংবাদিকদের মধ্যে আমি নেগেটিভ কোন কিছু পাইনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শংকর কুমার বিশ্বাস।
আরও পড়ুনঃ শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ভারতীয় মদসহ ৫ মাদককারবারি গ্রেফতার
সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাবেক সভাপতি মোঃ আরজু ও খ.আ.ম রশিদুল ইসলাম, প্রবীন সাংবাদিক মনজুরুল আলম, সাবেক সহ-সভাপতি শেখ সহিদুল ইসলাম, দৈনিক পেনব্রীজ সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, এটিএন নিউজের পীযুষ কান্তি আচার্য,
বাংলাভিশনের মোঃ আশিকুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের কার্য নির্বাহী কমিটির মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত, সৈয়দ রিয়াজ আহমেদ অপু, মোশাররফ হোসেন বেলাল, মোঃ নজরুল ইসলাম ভূইয়া, মোজাম্মেল চৌধুরী, মজিবুর রহমান খান, শাহজাহান সাজু, ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, সময় টিভির উজ্জ্বল চক্রবর্তী, যমুনা টিভির শফিকুল ইসলাম, আরটিভি’র আজিজুর রহমান পায়েল, প্রথম আলোর শাহাদাত হোসেন
এখন টিভির আজিজুল সঞ্চয়, আনন্দ বাজার পত্রিকার আল মামুন, দৈনিক নয়াদিগন্তের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, ইটিভি’র মীর মোঃ শাহিন, দীপ্ত টিভি’র রিফাত আন নাবিল মোল্লা, দৈনিক সংগ্রামের মোঃ রোকন উদ্দিন, দেশ টিভি’র মেহেদী নূর পরশ, স্টার টিভি’র আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ,
দৈনিক জনতার তোফাজ্জল হোসেন, কালের কন্ঠের বিশ্বজিৎ পাল বাবু, মাছরাঙ্গা টিভি’র আশেক মান্নান হিমেল, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের প্রকাশ দাশ, নাগরিক টিভির আবুল হাসনাত রাফি, মাইটিভি’র নূরুল আরাফাত মোঃ মুগনি, এসএ টিভির মনিরুজ্জামান পলাশ, বৈশাখী টিভি’র মোঃ খোকন মিয়া, বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোরের মোঃ মাঈনুদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
আরও পড়ুনঃ শেরপুরের সীমান্তবর্তীতে বন্যহাতির দল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে
স্মারকলিপিতে ৫ই আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও উপজেলার ১৮/২০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঢাকা এবং জেলার বিভিন্ন থানায় এবং আদালতে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলা হয়, তাদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তারের ভয়ে এক বছরের বেশী সময় ধরে বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। গাজী টিভির জেলা প্রতিনিধি জহির রায়হানকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরন করেছে।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রতিটি মামলার আর্জিতে আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করলে অসত্য, অবান্তর ঘটনা প্রবাহ প্রকাশ পায়। এছাড়া আখাউড়ার দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি ফজলে রাব্বী ও আরটিভির সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন পুলিশের ঘুষ-দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে ইমিগ্রেশনের ওসি মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার নিজে বাদী হয়ে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন।
রোজায় ইফতারের জন্য চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ এনে ১২ই আগষ্ট এই মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া চিহ্নিত কিছু দুস্কৃতিকারী ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদিতে বিকৃত ও কুরুচিপূর্ন শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিক এবং তাদের পরিবার বর্গকে মারাত্মকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, এই সাইবার বুলিং থেকে থেকে ৭০ বা ৮০ উর্ধ্ব সাংবাদিকদের বৃদ্ধ মা-বাবারাও রেহাই পাচ্ছেননা।
এসব বিষয়ে ৭/৮টি জিডি করা হয়েছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে। শুধু তাই নয়, এই দুর্বৃত্তরা অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকে হয়রানী, ব্ল্যাকমেইলিং, চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া। এদের কারনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সমাজ জীবন বিষিয়ে উঠেছে। এর আগে ২৪শে আগষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।