মোহাম্মদ করিম বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি ঃ-
বান্দরবানের লামায় ভয়াবহ লোডশেডিং ও ভূতুড়ে বিলসহ আবাসিক প্রকৌশীর নানা অনিয়মের ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টায় লামা ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলীর নানান অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন লামার সর্বস্তরের জনগন ।লামা উপজেলা পরিষদ চত্বরে লামাবাসির উদ্যোগে এই মানববন্ধনে বক্তারা আবাসিক প্রকৌশলীর শাস্তি, অপসারণ দাবি করেন।
বর্তমান আবাসিক প্রকৌশলী লামায় যোগদানের পর থেকে, তার অনিয়ম , দুর্ণীতি, বিদ্যুৎ সরবরাহে অব্যবস্থাপনায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নাগেশ্বরী নারায়নপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন ইউ এন ও
এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। এর মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে মিটার বরাদ্ধ, পরিবর্তন, লাইন সংযোগ ইত্যাদি কাজে মনগড়া অর্থ আদায় করায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।
এছাড়া ও সরকারি সকল নিয়ম মেনে কোনো গ্রাহক তার নামীয় মিটার বন্ধ/সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর ও ঐ গ্রাহকের নামে গোপনীয়ভাবে অফিস থেকে বিল করা হয়। কিন্তু গ্রাহককে ঐ বিলে কাগজ না দিয়ে গোপনে ছিঁড়ে ফেলে দেয়।পরবর্তীতে ঐ গ্রাহকের নামে বিল দেখায় এবং টাকা দাবি করে।
মানববন্ধনে এই প্রকৌশলীর কিছু দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সরকার নির্ধারিত লোড পরিবর্তনের ফি মাত্র ১৪০ টাকা, কিন্তু প্রকৌশলীর নির্দেশে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয় এক হাজার টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুনঃ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই আন্দোলনকেন্দ্রিক বুদ্ধিবৃত্তিক প্যানেল ডিসকাশন
অভিযোগ উঠেছে কোনো রসিদ ছাড়াই এই অর্থ আদায় করা হয়। মিটার পরিবর্তনের সরকারি ফি ৪১৪ টাকা, গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ৭০০ টাকা, নতুন মিটার সংযোগসহ যাবতীয় খরচ মিলে মোট খরচ ৬,৫০০ টাকার স্থলে আদায় করা হচ্ছে ৯ হাজার টাকা।
গ্রাহকের নামে জরিমানা দেখিয়ে সেই টাকাও আত্মসাৎ করা হয়। কিছুদিন পর আবার গ্রাহক পুনরায় জরিমানার সম্মুখীন হন। গাছ লতাপাতা কাটার জন্য প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা করে ইমপ্রেস ফান্ড (সরকারি অগ্রিম খরচ) নেন উক্ত প্রকৌশলী।
আরও পড়ুনঃ গোপালগঞ্জে আইনের শাসন ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ওসি মীর সাজেদুর রহমানের অঙ্গীকার
কিন্তু বাস্তবে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় না করে ঐ টাকা আত্মসাত করেন। মিটার পরিবর্তনের সময় গ্রাহকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫ শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। না দিলে মিটার পরিবর্তন স্থগিত অথবা নানা অজুহাত দেখিয়ে হয়রানি করা হয়।
কোনো গ্রাহকের বিল বা লোডসংক্রান্ত সমস্যা হলে, ওই গ্রাহকের বিরুদ্ধ মামলা ও কার্ড মিটার লাগানোর ভয় দেখিয়ে গ্রাহকদেরকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে। নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করার সময় স্থানীয় জনগণ থেকে লাখ টাকা উৎকোচ নেয়। জানা যায় উক্ত প্রকৌশলী সংযোজন লাইন লামা সদর ইউপির বেগুনঝিরি নামক গ্রামে লাইন সংযোগ দিয়ে মানুষ থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে উক্ত প্রকৌশলী এর আগের স্টেশন কক্সবাজার রামু উপজেলায় থাকাকালে বহু দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এহেন দুর্ণীতি পরায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনও কোনো তদন্ত বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির প্রশ্ন তোলেন বক্তৃতারা।
তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে লামা আবাসিক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তি ও তার বদলির দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মো. কামরুজ্জামান, ইব্রাহীম খলিল মিজান, শামচুল হক, আসিফ জোয়ারদার মো. দুলাল প্রমূখ।