নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া ঃ
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ হওয়া রোহিঙ্গা যুবক হাফিজ উল্লাহকে গহীন পাহাড় থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় বরখাস্ত সেনা সদস্য মো. সুমন মুন্সিকে র্যাবের পোশাক, ওয়াকিটকি ও অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাব-১৫ জানায়, গত ১১ জুন রাত ১১টার দিকে ক্যাম্প-১৫ এর বাসিন্দা মো. রহিমুল্লাহর ছেলে হাফিজ উল্লাহকে তার নিজ ঘর থেকে র্যাব পরিচয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। এ অপহরণে সরাসরি জড়িত ছিল তিনজন—সুমন, রাকিব ও শিকদার। তাদের সহযোগিতা করে স্থানীয় এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন।
অপহরণের পর ভিকটিমের পরিবারের কাছে অজ্ঞাত স্থান থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। একইসঙ্গে হুমকি দেওয়া হয়—প্রশাসনের সহায়তা নিলে ভিকটিমকে হত্যা করা হবে।
আরও পড়ুনঃ ব্রাক্ষণবাড়ীয়া নাসিরনগরে থানার সামনে দুর্ধর্ষ চুরি
র্যাব জানায়, ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান চালানো হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুখ্যাত ডাকাত সর্দার শাহ আলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুরকে আটক করা হয়। এরপর মরিচা বাজার এলাকা থেকে অপহরণের মূল হোতা বরখাস্ত সৈনিক মো. সুমন মুন্সিকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, পুলিশ ও বন বিভাগ যৌথভাবে ২৫৬ সদস্যের একটি টিম নিয়ে রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। অভিযানের ৭২ ঘণ্টা পর হাফিজ উল্লাহকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
অভিযান চলাকালে উদ্ধার করা হয় ১টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক এবং ওয়াকিটকি।
গ্রেফতার সন্ত্রাসী মো. সুমন মুন্সি (৩২), পিতা আকবর আলী মুন্সি, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ডুমরাকান্দি গ্রামে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব আরও জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে সন্ত্রাসী দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে আরও বড় পরিসরে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।