নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিনন্দন –
ড. আতিউর রহমান
দুধ বিক্রেতা এক রাখাল বালক
শুভ জন্মদিন
—————————————————
পৃথিবীর যত বিখ্যাত ব্যক্তি নিজের মেধা কর্মদক্ষতা ও জনপ্রিয়তায় খ্যাতির শিখরে উঠেছেন তাঁদের বৃহৎ অংশেরই পদযাত্রা শুরু হয়েছিল শূন্য থেকে। ড. আতিউর রহমানও তাঁদেরই একজন।
শৈশবে গৃহপালিত গাভির দুধ হাটে বিক্রি করে পড়াশোনার খরচ যুগিয়েছেন। পেয়েছেন অনেকের আর্থিক সহায়তা। যে ঋণ শোধ করার সাহস তাঁর কোনোদিনও হয়নি।
চলুন জেনে নিই আত্মস্বীকৃত এমন কৃতিমান ও প্রথিতযশা একজন সৎ রাখাল বালকের জীবন ইতিহাস!
জন্ম ১৯৫১ সালের ৩ আগস্ট বৃহত্তর ময়মনসিংহের জামালপুর জেলার দিঘপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়ের দিঘুলী গ্রামের এক সাধারন কৃষক পরিবারে।
তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে। উভয় পরীক্ষাতেই মেধা তালিকায় স্থান ছিল তাঁর।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেন আতিউর। পেয়েও যান।
যুক্তরাজ্যের SOAS, University of London (The School of Oriental and African Studies) থেকে ১৯৭৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
পরবর্তীকালে তাঁর পিএইচডি থিসিস অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে একটি বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে, যেটির নাম ‘পিজেন্টস অ্যান্ড ক্লাসেস’।
বইটি বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিবিদদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে এবং রেফারেন্স হিসেবে বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য।
আাতিউর রহমান বাংলাদেশ ইনস্টিটিটউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে কাজ করেছেন দীর্ঘ আটাশ বছর। ওখান থেকে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে অবসর নেন ২০০৬ সালের ৪ এপ্রিল। তারপর যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পান তিনি ২০০৯ সালের ৩ মে। তিনি ছিলেন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দশম গভর্নর।
ড. আতিউরের কাজের ক্ষেত্র ব্যাপক। তিনি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন সোনালী ব্যাংকের ডিরেক্টর এবং আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৪ সালে তিনি ‘উন্নয়ন সমন্বয়’ নামে একটি এনজিও গড়ে তোলেন। গর্ভনর হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সমন্বয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। বিশটিরও বেশি আন্তর্জাতিক ও পঞ্চাশটি জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে তিনি ডিরেক্টর বা টিম লিডার হিসেবে কাজ করেছেন।
আতিউর রহমান একজন জনপ্রিয় কলাম লেখক। দারিদ্র, সরকারি ব্যয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনকল্যাণসহ নানা ধরনের সামাজিক-অর্থনৈতিক ইস্যুতে লেখালেখি করেন নিয়মিত।
২০০০ সালে তিনি অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক ও ২০০৮ সালে চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
ফেসবুক পরিবারের পক্ষে তাঁর জন্য রইল শুভ কামনা আজকের এই বিশেষ দিনটিতে।
— মেসবা খান