আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়াঃ
১২/০৬/২৪
আজ ১২/০৬/২৪ইরেজী তারিখে
মুরাদনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন এক কলেজছাত্রী। গত তিন মাস ধরে রমজানের আগে থেকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২১নং বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের প্রান্তি দেওড়াগাজী গ্রামে অনশন পালন করছেন তিনি। অভিযুক্ত নাজমুল হাসান (২৩) বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের প্রান্তি দেওড়াগাজী গ্রামের মৃতঃ হাজি নুরুল ইসলামের ছেলে।
সরজমিন দেখা যায়, কলেজছাত্রী বিয়ের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। কলেজছাত্রী চাঁদপুর জেলা মতলব উপজেলা দশানি গ্রামের বাদল মিয়া ও নাজমা বেগমের মেয়ে তানজিনা (২০) বলেন, প্রায় এক বছর আগে নাজমুল হাসানের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেও এখন বিয়ে করতে অপারগতা জানায় সে। বিয়ে না করলে আমার মরা ছাড়া উপায় নেই। তাই আমি বাধ্য হয়েই আমরণ অনশন করছি। শারীরিক সসম্পর্কর ভিডিও ধারণ করে। এসব ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি এখানে অনশন করার পর থেকেই আমাকে বিয়ে করবে না মর্মে জানিয়ে দিয়েছে নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, বাড়িতে আসার পর থেকে নাজমুল হাসান ও তার পরিবার গোত্রের লোকজন আমাকে মারধর করে টাকা ও গহেনা রেখে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তারপরও আবার আমি ওই বাড়িতে অবস্থান করছি। তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হওয়ায় তাকে বিয়ে করা ছাড়া আমার উপায় নেই। বিয়ে না করলে আমাকে এখানেই মরতে হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রেমিক নাজমুল হাসান পালাতক রয়েছে। তার কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
নাজমুল হাসান বড় ভাই বিল্লাল,অলিউল্ল্যাহ ও নেয়ামত উল্লাহ বলেন, নাজমুল বলেছে, এই মেয়ে ভালো না। আমরা জেনেশুনে কোনোভাবেই তার সঙ্গে ছেলেকে বিয়ে দিতে পারি না। এব্যাপারে বাড়ীর মুরুব্বী কবির হোসেনের কাছে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। আপোষমিমাংশা করার জন্য। মেয়ে টাকা নিতে রাজি নয়। নাজমুলকে বিয়ে করতে চায়। থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়ী থেকে মেয়েটিকে বিদায় করেছি। তারপরও মেয়েটি বাড়ীতে এসে বসে থাকে। আমার মা হার্টর রোগী। আমরা বিদেশে থেকেও বাড়ীর জন্য দুরচিন্তায় আছি।
গ্রান্দ্রা দেওড়াগাজী গ্রামের সাবেক ইউপি’র সদস্য আলমগীর হোসেন, মহিলা সদস্য শাহনাওয়াজ বেগম ও আজিজুল রহমান বলেন, মেয়েটির সাথে অনলাইনে পরিচয় হয়। পরিচয় পর থেকে নাজমুল হাসান থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটি সাথে একাধিবার শারীরিক সম্পর্ক করে। এবং মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ছেলে পালাতক রয়েছে। কয়েকবার সামাজিক বিচার হয়েছে। ছেলে মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি নয়। তিন মাস ধরে মেয়েটি ছেলের বাড়িতে অবস্থান করছে বিয়ের দাবীতে। ছেলের বাবা মৃতঃহাজি নুরুল ইসলামের পাঁচ ছেলে বিদেশে অবস্থান করছে। বাড়ীতে শুধু বৃদ্ধা মা রয়েছে।
বাবুটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আরমান মিয়া বলেন, আমি ফোনের মাধ্যমে জেনেছি এবং বলেছি পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য।
মুরাদনগর থানার ওসি প্রভাস চন্দ্র ধর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি আমি ফোনের মাধ্যমে জেনেছি। নাজমুল হাসানের মা থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছেন মেয়েটির বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রেক্ষীতে ওই বাড়ীকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ইউপি’র চেয়ারম্যান জিম্বায় দিয়ে এসেছি সামাজিক বিচারের জন্য। মেয়েটি পূনরায় আবার ওই বাড়ীতে অনশনে বসেছে।