এম, জি, মস্তফা মুসাঃ
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি.) তাঁর বই “হাদীসের নামে জালিয়াতি: প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা” ৫ম সংস্করণ, এপ্রিল ২০১৭ ঈসায়ী, পৃঠা-৩৫৪ তে “মিরাজের রাত্রিতে আত-তাহিয়্যাতু লাভ” এর উপরে একটি লিখা সুহৃদয় পাঠক সমাজের সদয় অবগতির জন্য নিম্নে উল্লেখ করা হল:
আমাদের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি কথা হলো, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিরাজের রাত্রিতে ‘আত-তাহিয়্যাতু’ লাভ করেন। এ বিষয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। গল্পটির সার- সংক্ষেপ হলো:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিরাজের রাত্রিতে যখন সর্বোচ্চ নৈকট্যে পোঁছান তখন মহান আল্লাহকে সম্ভাষণ করে বলেন: “আত-তাহিয়্যাতু লিল্লাহি … …”। তখন মহান আল্লাহ বলেন, “আস-সালামু আলাইকা …।
আরও পড়ুনঃ বালিয়াকান্দিতে ক্রয়কৃত জমিতে নির্মাণ কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগ
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চান যে তাঁর উম্মতের জন্যও সালামের অংশ থাক। এজন্য তিনি বলেন, “আস-সালামু আলাইনা ওয়া”।
তখন জিবরীল (আ.) ও সকল আকাশবাসী বলেন, “আশহাদু … । কোন কোন গল্পকার বলেন, “আস-সালামু আলাইনা” বাক্যটি ফিরিশতাগণ বলেন।
ড. জাহাঙ্গীর লিখেছেন যে, “এ গল্পের কোন ভিত্তি আছে বলে জানা যায়না। কোথাও কোন গ্রন্থে সনদসহ এ কাহিনীটি বর্ণিত হয়েছে বলে জানা যায় নি।
মিরাজের ঘটনা বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে ও সিরাত গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও কোন সনদ-সহ বর্ণনায় মিরাজের ঘটনায় এ কাহিনীটি বলা হয়েছে বলে আমি দেখতে পাই নি”। সনদ বিহীনভাবে কেউ কেউ তা উল্লেখ করেছেন বলে তাফসীরে কুরতুবির সুত্র উল্লেখ করেছেন।
বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে, সাহাবীগণ (রা.) সালাতের শেষে বৈঠকে সালাম পাঠ করতেন। “আল্লাহকে সালাম, নবীকে সালাম, জিবরীলকে সালাম … …”। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁদেরকে বলেন, এভাবে না বলে তোমরা “আত-তাহিয়্যাতু … …” বলবে।
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁদেরকে পুরো আত-তাহিয়্যাতু শিক্ষা দিয়েছেন, যেভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁদেরকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। বুখারী, মুসলিম শরীফসহ প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থে এইরূপ বলা হয়েছে। কোন হাদীসেই বলা হয়নি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিরাজের রাত্রিতে আত-তাহিয়্যাতু গ্রহণ করেছেন।
সুত্র: ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি.), “হাদীসের নামে জালিয়াতি: প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা”। এপ্রিল ২০১৭ ঈসায়ী; আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স।
আল্লাহ-হুম্মা সাল্লি, ওয়া সাল্লিম, ওয়া বারিক আ’লা মুহাম্মাদ; আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন।