আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের সড়কে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা থামছে না। বিশেষ করে ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক সড়কের ফুলপুর ও তারাকান্দা অংশ এখন দুর্ঘটনার হটস্পট হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত বাঁক, বেপরোয়া গতি এবং তিন চাকার যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল এই এলাকাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, চলতি জুন মাসেই ময়মনসিংহ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪১ জন। এরমধ্যে গত তিন দিনেই ফুলপুর ও তারাকান্দায় তিনটি বড় দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৩ জন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অতিরিক্ত বাঁক এবং চালকদের প্রতিযোগিতামূলক আচরণই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুনঃ ভালুকায় এনসিপির ২৪ সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠন হয়েছে
তিন চাকার যানবাহনের দৌরাত্ম্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যাত্রীদের দাবি, নিয়মিত লোকাল বাস সার্ভিস না থাকায় বাধ্য হয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে চলাচল করছেন।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা এবং সড়কে তিন চাকার দৌরাত্ম্যই দুর্ঘটনার মূল কারণ। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক জহির উদ্দিন বাবুল জানান, জরিমানা করেও সচেতনতা আনা সম্ভব হচ্ছে না। চালক ও যাত্রী উভয়ের মন মানসিকতা পরিবর্তন না হলে দুর্ঘটনা কমবে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই রুটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ এতটাই বেশি যে পুলিশের সীমিত জনবল দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ কঠিন। তাই সরকারের অন্যান্য সংস্থারও এগিয়ে আসা জরুরি।
পুলিশের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৮ জন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এই সময়ে মোট মামলা হয়েছে ১২৮টি।
নিয়ন্ত্রণহীন যান চলাচল, আইনের প্রয়োগে শিথিলতা এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থার অসহযোগিতায় ময়মনসিংহের সড়কগুলো আজ মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাই সচেতন জনগণ।