নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজনৈতিক দল আমজনতা পার্টির নিবন্ধনের দাবিতে টানা ১৩৭ ঘণ্টা ধরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনের সামনে আমরণ অনশনরত দলটির চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অবশেষে শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ সময় অনশন করার ফলে তার শরীরে পানিশূন্যতা, দুর্বলতা ও রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অনশন চলাকালীন সময় জুড়ে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ফটকের সামনে দিন-রাত অবস্থান করেছেন তারেক রহমান ও তার অনুসারীরা। সেখানে নিয়মিত সমবেত হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ, তরুণ কর্মী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এই সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ সরাসরি ইসি ভবনের সামনে এসে তারেক রহমানের পাশে দাঁড়ান। তিনি অনশনরত তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার দাবি সমর্থন করেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন— নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকার। তারেক রহমান শান্তিপূর্ণভাবে সেই অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করছেন, যা গণতান্ত্রিক চেতনার অংশ। সরকারের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা।”
তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সর্বজনীন দল এর চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসেম এবং দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা তারেক রহমানের পাশে থেকে সংহতি প্রকাশ করেন এবং অনশনস্থলে বক্তব্য রাখেন। আবুল হাসেম বলেন— আমরা সব নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আছি যারা গণতন্ত্রের চর্চা ও জনগণের অংশগ্রহণ চায়। তারেক রহমানের এই আন্দোলন অন্যায় প্রশাসনিক বাধার বিরুদ্ধে একটি ন্যায়সংগত দাবি।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আমজনতা পার্টি গত দুই বছর ধরে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে আসছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় দলটি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে দলের চেয়ারম্যান নিজেই নিবন্ধনের দাবিতে অনশন শুরু করেন এবং ঘোষণা দেন— “নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
তারেক রহমানের এই অনশন কর্মসূচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, এটি বাংলাদেশে গণতন্ত্রচর্চায় নতুন রাজনৈতিক চেতনার প্রতীক।
বর্তমানে তারেক রহমান রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন তবে পুরোপুরি বিশ্রাম প্রয়োজন।
এদিকে, আমজনতা পার্টির নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”