শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন
Headline :
বাংলাদেশ জোট মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সর্বজনীন জোটের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসেম ন্যাশনাল ইউনিটি কাউন্সিল(এনইউসি) এর মহাসচিব বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মনের বাণী: মানবতার মূর্ত প্রতীক: *অধ্যাপক ড. আলহাজ্ব মোঃ শরীফ আব্দুল্লাহ হিস সাকী শিক্ষাবিদ ও মানবতাবাদী এক অনন্য সমন্বয়* -ড. এ আর জাফরী বাংলাদেশ সর্বজনীন জোটে মূল চিন্তাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত প্রধান উপদেষ্টা ফরহাদ মাজহার বগুড়া গাবতলী স্টেশনের রেলওয়ে কর্মচারীকে মারপিট করে আহত করে ২২ বছর পর ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় – দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে নতুন সম্ভাবনার দিগন্তে বাংলাদেশ ময়মনসিংহে পলাতক আসামী গেপ্ততার করেছে র‍্যাব ১৪ যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ আটক ১ বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বিএনপিরভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিল

আমার দেখা- আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক

Reporter Name / ৯ Time View
Update : শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

মোঃ আরিফুল ইসলাম মুরাদ সাংবাদিক স্টাফ রিপোটারঃ

সম্ভবত ১৯৯৫ সালে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় হুজুরের সাথে প্রথম পরিচয় হয়। তখন বারিধারায় হুজুরের মালিবাগের খেদমতকালের দু’জন সাথী- আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ. ও মুফতি গোলাম মোস্তফা রহ. (বারিধারা মাদ্রাসার তৎকালীন প্রধান মুফতি এবং পরবর্তীতে মতিঝিল- পীরজঙ্গি মাদ্রাসার মুহতামিম ও টাঙ্গাইল বানরগাছি মাদ্রাসার মুহতামিম) এর নিকট যাতায়াত ছিল।

যেহেতু আমি অধম- কাসেমী রহ. ও মুফতি সাহেব রহ. এর খেদমত করতাম এবং তাঁরা দু’জন আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। সেই সুবাদে তখন থেকেই বিভিন্ন সময় উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব হুজুরের খেদমত করার সৌভাগ্য হয়।

১৯৯৮ সালে আওয়ামীলীগের সহযোগিতায় মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ প্রমুখ বারিধারা মাদ্রাসা জবরদখল করলে- আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ. জামিয়া সুবহানিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। তখন সকল ছাত্র শিক্ষকের সাথে তিনিও জামিয়া সুবহানিয়া উত্তরা, ঢাকায় চলে আসেন।

আরও পড়ুনঃ সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) কর্তৃক ০১টি কাভার্ড ভ্যানসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় কসমেটিক্স ও Dog & Cat এর ঔষধ আটক

# ১৯৯৮ সালে আমি অধম তাঁর কাছে বুখারী শরিফ দ্বিতীয় খন্ড পড়েছি। তাঁর মত পন্ডিত ব্যক্তির নিয়মতান্ত্রিক দরস গ্রহণ করতে পেরে আমি ধন্য। তিনি আমার গর্ব, আমি তার কলঙ্ক। …

আমি অধম দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে আসার পর ২০০১ সাল থেকে জামিয়া সুবহানিয়ায় শিক্ষকতা শুরু করি এবং উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব হুজুরের সাথে একই রুমে কয়েক বছর থাকার সুযোগ হয়। তাই হুজুরের অসংখ্য গুণ খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য লাভ করি। সময় সুযোগ মতো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।
এখানে অতি সংক্ষেপে কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করছি।

# এই দীর্ঘ সময়ে কোনদিন হুজুরের তাহাজ্জুদ ছুটেছে বলে আমার মনে পড়ে না। তিনি সুবহে সাদিকের অনেক পূর্বেই ঘুম থেকে জাগতেন এবং মশারির ভেতরে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় তাহাজ্জুদ পড়তেন।

# আমি কোনদিন তাহাজ্জুদ না পড়লেও তিনি তিরস্কার করতেন না।

# জামাতের সময় হওয়ার অনেক পূর্বেই মসজিদে চলে যেতেন এবং ফরজের পূর্বের সুন্নত পড়ার পর দীর্ঘ সময় তেলাওয়াত করতেন এবং জামাতের অপেক্ষায় থাকতেন। সাধারণত: সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করতেন এবং সবার শেষে মসজিদ থেকে বের হতেন। তিনি আসরের পূর্বের এবং এশার পূর্বের সুন্নতও কখনো ছাড়তেন না।

আরও পড়ুনঃ উখিয়ায় জমিতে পড়ে থাকা তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ট্রাক্টর চালকের মৃত্যু

# এত দীর্ঘ সময় কোরআনে কারীম তেলাওয়াত করতে- জীবনে অন্য কাউকে দেখেছি বলে মনে পড়ে না।

# বিশ্রাম ছাড়া অবশিষ্ট পুরা সময় তেলাওয়াত, জিকির, কিতাব মুতালাআ ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন।

# কখনো সুন্নতের খেলাফ কোন কাজ করতেন না। অন্য কেউ করলেও তা সহ্য করতেন না।

# কোন বাতিলের ব্যাপারে সামান্যতম নমনীয়তা সহ্য করতেন না।

# নিজেও সব সময় অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকতেন, অনুরূপ মাদ্রাসা-মসজিদের আঙ্গিনাসহ আশপাশের পুরা পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখার ব্যাপারে সবসময় গুরুত্বারোপ করতেন।

# তিনি সদা সজীব- সতেজ, প্রফুল্ল বদন ও হাস্যোজ্জ্বল থাকেন। স্মীত হাসি তাঁর মুখে লেগেই থাকে। দীর্ঘ ৩০ বছরের সোহবতে কখনো তাঁর মলিন মুখ দেখিনি। (কেবল কাসেমি রহ. এর ইন্তেকালের সময় তাঁর মলিন মুখ দেখেছি। মনে হচ্ছিল যেন তাঁর উপর পেরেশনীর পাহাড় ভেঙে পড়েছে)

# দারুল উলুম দেওবন্দের আদর্শের উপর অটল অবিচল থাকার ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্বারূপ করতেন।

আরও পড়ুনঃ নাগেশ্বরীতে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে স্থানীয় ব্যবসায়িকদের সাথে সংবেদনশীলতা সভা অনুষ্ঠিত

# তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের আদর্শবাহী একজন সত্যিকারের দেওবন্দী।

# তিনি “কারীম ইবনে কারীম ইবনে কারীম”।

# তাঁর চার পুরুষ দেওবন্দী ও জমিয়তি।

১. তাঁর দাদা মাওলানা ইব্রাহীম দরিয়া- ফাজিলে দেওবন্দ। তিনি শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দী রহ. এর শাগরিদ।

২. তাঁর বাবা মুফাক্কিরে ইসলাম মাওলানা শফিকুল হক আকুনী- ফাজিলে দেওবন্দ। তিনি শায়খুল ইসলাম মাদানি রহ. এর শাগরিদ।

৩. সদরে জমিয়ত আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক- ফাজিলে দেওবন্দ। তিনি শায়খুল হাদিস ফখরুদ্দিন মুরাদাবাদী ও নাসির আহমদ খান রহ. এর শাগরিদ।

৪. তাঁর সাহেবজাদা মাওলানা কালিমুল্লাহ মাহফুজও ফাজিলে দেওবন্দ। তিনি মুফতি সাইদ আহমদ পালনপুরি রহ. এর শাগরিদ।
সত্যিই এমন পরিবার বাংলাদেশে বিরল।

# আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক নিজে প্রখর মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি-দারুল উলুম দেওবন্দের অনেক বড়দের সোহবত পেয়েছেন। তিনি কোরআন-হাদিস থেকে জ্ঞান লাভ করার সাথে সাথে তাঁর বাবা ও দাদা বিজ্ঞ আলেম হওয়ার সুবাদে- অনেক বড়দের সোহবতে থেকে তা আত্মস্থ করেছেন। এবং তাঁদের সোহবতে ইলম, আমল ও মা’রেফত লাভে ধন্য হয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজ যুবদলনেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিম হাজার হাজার যাত্রী চরম ভোগান্তিতে

# তা’লীম, তাবলীগ, তাযকিয়া ও সিয়াসত সব ক্ষেত্রেই তাঁর সমান পান্ডিত্য রয়েছে এবং সব ময়দানেই তিনি কৃতিত্বের সাথে বহুমুখী খেদমত আঞ্জাম দিচ্ছেন। সকল হকপন্থী বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের আস্থার প্রতীক তিনি।

তাই তাঁর কোরআন হাদিসের সমৃদ্ধ জ্ঞান ও পাণ্ডিত্য, আর অন্য যেকোন সাধারণ মানুষের জ্ঞান কখনো সমান হতে পারে না। তাঁর সমালোচনা করা সহজ হলেও তাঁর মত সর্বগুণে গুণী- দ্বীনের নিষ্ঠাবান খাদেম ও আপোসহীন রাহবার পাওয়া খুবই কঠিন।

আল্লাহ তাআলা তাঁর সকল খেদমত কবুল করুন, বাতিলের হিংস্র থাবা থেকে তাঁকে রক্ষা করুন এবং আমাদের উপর তাঁর ছায়া দীর্ঘ করুন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category