সাংবাদিক মোহাম্মদ আলমঃ
বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি – এরা যেন একই মুদ্রার দুই পিঠ। নাম আলাদা, কাজ একই। ক্ষমতায় এলে ইচ্ছেমতো দুর্নীতি, বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন, এবং হাজার হাজার নব্য ধনী তৈরির প্রতিযোগিতা – এটাই তাদের প্রধান কর্মসূচি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধে এই দল ছিলো মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জনগণের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার পরিবর্তে তারা নিজেরাই ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে বিএনপি গড়ে ওঠে সেই মুক্তিযুদ্ধের পর, এবং তাদের বহু নেতাই একসময় ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছে।
যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, দেশের উন্নতির বদলে নিজেদের উন্নতিতেই ব্যস্ত থেকেছে। নতুন নতুন টিভি চ্যানেল, ব্যবসা-বাণিজ্য, দৈনিক পত্রিকার মালিকানা – সবই গড়ে উঠেছে নেতাদের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির জন্য। অথচ দেশের সাধারণ মানুষ রয়ে গেছে অভাব-অনটনের মধ্যে। ৫৩ বছরে হাজার হাজার নব্য ধনী সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
আরও পড়ুনঃ মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
সবচেয়ে বড় মিল – দুর্নীতি। এরা যেন জমজ দুই ভাই। শুধু দলীয় পতাকা আর নেতার নাম আলাদা। একপাশে শেখ মুজিবের নাম, অন্যপাশে জিয়ার নাম। অথচ কাজ একই – দুর্নীতি, মিথ্যাচার আর ক্ষমতার অপব্যবহার।
আওয়ামী লীগ কিছু ইতিবাচক কাজ করেছে, যেমন রাজাকারদের বিচার ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার সম্পন্ন করা। কিন্তু শেখ হাসিনা রাজনীতিকে পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন। জনগণের মনের ভাষা তিনি বোঝেননি, দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া লাখো শহীদের ত্যাগকে সম্মান দেননি। তাই তার করুণ পতন অনিবার্য ছিলো। বিএনপি যদি এখান থেকে শিক্ষা না নেয়, তাদের ভবিষ্যতও ভিন্ন হবে না।
বাংলাদেশের রাজনীতি বদলাতে হবে। এই দুই মুদ্রার পিঠের বাইরে গিয়ে নতুন নেতৃত্বের হাতে দেশ গড়তে হবে। নইলে দুর্নীতি, লুটপাট আর দুঃশাসনের এই দুষ্টচক্র কখনো ভাঙবে না।