রাজিবপুর,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাউনিয়ারচর গ্রামে ‘জাউনিয়ারচর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় আগুনে পোড়ার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসমেজাহান ওরফে রিতা বাদী হয়ে রাজীবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেনন। অভিযোগ পত্রে সহকারী শিক্ষক মোছাঃ হাসনা হেনা, মালেকা বেগম, মরিয়ম বেগম, রেহেনা বেগম, লিপি বেগম, ইউসুফ আলী, এবং অফিস সহায়ক ওলি আহমেদ ও ভ্যান চালক ইব্রাহিমকে বাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে আনিছুর রহমান বদরপুর দাখিল মাদ্রসার সহকারী সুপার (বহিষ্কৃক জামাত কর্মী) ও তার ভাতিজী জামাতা মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের বিরুদ্ধে স্কুল ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে গরম খুন্তির ছ্যাকা বালিয়াকান্দিতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জাউনিয়ারচর গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের ক্যাশিয়ার এবং নির্বাহী পরিচালক হিসেবে ২০১৭ সনে জনপ্রতি ৩/৪লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাদেরকে নিয়োগ দেয়।
নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকরা যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল বিদ্যালয়টিতে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারনে ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ আছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় গোপনে তারা বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র এবং কাগজপত্র সরিয়ে ফেলে।
বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়া এবং দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কোন বেতনভাতা পায়নি শিক্ষক ও কর্মচারীরা। নিয়োগের জন্য দেয়া টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা করতে থাকে আনিছুর এবং বাবুল।
সম্প্রতি এসব বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। স্কুলের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর চলতি মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর রাতে কে বা কাহারা পরিকল্পিত ভাবে আমাদের বিদ্যালয়ে আগুন লাগাইয়া দেয়। এই অগ্নিকান্ডে বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘর সহ কিছু সংখ্যক চেয়ার, টেবিল,বেঞ্চে এবং ষ্টীলের আলমারীতে রাখা যাবতীয় রেজিস্ট্রার ও গোপন নথিপত্র পুড়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ পাঁচবিবিতে আধুনিক সবজির চাষ পরিদর্শন
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা দেখতে পাই সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
থানার অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসমেজাহান ওরফে রিতা বলেন, স্কুলের চাকরি এবং এমপিও ভুক্তির কথা বলে আমাদের কাছে টাকা নিয়েছে। স্কুলটি ৬ বছর থেকে বন্ধ।
আমরা টাকা চাইলে নানা তালবাহানা করে। স্কুল চালু করতে বললেও করে না। গণমাধ্যমে এই স্কুলের খবর প্রকাশ হলে তারা ভোররাতে আগুন দিয়ে স্কুলটি পুড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সাতক্ষীরায় জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা, স্কুলের সমস্ত তথ্য মুছে ফেলতেই এই কাজ করছে আনিছ ও তার জামাই বাবুল।
স্কুল ঘর পোড়ানোর ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমার বক্তব্য হলো ওরা ১০ তারিখে অভিযোগ করলো আমরা স্কুল খুলে টাকা নিয়েছি। তাহলে আমার নথিপত্র আমি কেন পুড়িয়ে দিবো? আমি যেন না বুঝাইতে পারি সেজন্য তারাই পুড়িয়ে দিয়েছে।
রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।