
দৃষ্টি বিশ্বাসঃ
আপনারা আমার সঙ্গে এবং বিভিন্ন নায়ক নায়িকাদের সঙ্গে যে ছেলেটিকে দেখছেন এই ছেলেটির নাম আমি সঠিকভাবে জানি না। এইটুকু জানি সে একজন প্রোডাকশন বয় আমরা যারা মিডিয়াতে কাজ করি তারা তাকে দেখি সবসময়।
অনেক সময় এই ছেলেপেলে গুলো এসে দাঁড়ায় এদের সঙ্গে সেলফি তুলতে বলে আমরা সরল মনে সেলফি তুলতে দিই প্রোডাকশন বয় হিসাবে। অথবা ফ্যান হিসাবে। এটা হয়তো আমাদের অনেক বড় একটা ভুল।
এই ছবিগুলো কে তারা বিভিন্ন সময় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। আমার কাছে কালেকশনে আরো অনেক নায়ক নায়িকার সঙ্গে তার ছবি আছে এত ছবি একসঙ্গে পোস্ট করা যায় না এটা হল দুঃখের বিষয়।
যাইহোক যেই প্রসঙ্গে কথা বলছি আমি সেটা হল এই ছেলে হচ্ছে একটি ভয়ংকর ক্রিমিনাল। যারা এই ছেলেটিকে চেনেন তারা সাবধান হয়ে যান। মিডিয়াতে এই ছেলে ভয়ংকর রূপে কাজ করে। এই ছেলে এবং এই ছেলের সঙ্গে একটা কিশোর জ্ঞান আছে।
এরা মিডিয়ার বাহিরে বিভিন্ন মেদেরকে এই ছবিগুলো পাঠিয়ে নিজেকে ডাইরেক্টর দাবি করে সেই সাথে মেয়েগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় ডাকে তাদেরকে ধর্ষণ করে সেই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তাদের স্বর্ণালংকার গায়ে পরিহিত থাকলে সেগুলো ছিনিয়ে নেয় মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় মারধর করে এবং তাদের কাছ থেকে যে কয়টা টাকা থাকে কেড়ে নেয়।তাদেরকে শূন্য হাতে রাস্তায় বের করে দেয়।
যারা মিডিয়াতে কাজ করতে আসছেন অথবা আগে থেকেই স্ট্রাগল করছেন নতুন এবং পুরাতন মিডিয়া কর্মী। এই মেয়ে গুলো মান-সম্মানের ভয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে নেয় কাউকে কিছু বলে না।
আমার কাছে রিপোর্ট আছে অনেক মেয়ের সঙ্গে এমন স্ক্যাম হয়েছে। কার কার সঙ্গে হয়েছে সেটারও একটা রিপোর্ট আমার কাছে আছে। আমি তাদের সম্মান রক্ষাতে নাম নিতে চাই না। এই গ্যাং এর বিরুদ্ধে আমার কাছে কয়েকটা মেয়ে নালিশ করছে।
বলছে আপু তুমি তো সাংবাদিক আমার সঙ্গে এটা হইছে একটু দেখো না কিছু করা যায় কিনা।
আমি মেয়েদেরকে বলছি পুলিশের কাছে গিয়ে জানাও। তোমাদের সাথে এমনটা হইছে। একটা মেয়ের দুইটা আংটি গলার চেন মোবাইল দুইটা এবং টাকা কেটে নিচ্ছে ৪/৫ জন ধর্ষণ করছে মারধর করছে পরদিন তাকে শূন্য হাতে বিদায় দিছে।
ওয়াজিব মামা বলে ডাকি একজন ভদ্রলোককে উনি বাবার অভিনয় করে উনি আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে দৃষ্টি একটু সাবধানে থেকো একটা কিশোর গ্যাং আছে যারা মেয়েদেরকে ডাকে বিভিন্ন শুটিং স্পটের নাম করে ।
শুটিং এর কথা বলে। যারা নতুন তারা তো স্পট অত চিনে না। অনেক সময় আউটডোরের কথা বলে এই মেয়েগুলো কে ডাকে। নিজেদেরকে বড় বড় ডাইরেক্টর এর পরিচয় দেয়। মেয়েগুলো বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে খুব খারাপ কিছু হয়। তাই সাবধানে থেকো।
আমার কি ভাগ্য এই কথা বলার ৩-৪ দিন পর আমার কাছে একটা কল আসে। অপরিচিত নাম্বার থেকে সে নিজেকে পরিচয় দেয় আমি এফডিসির ডিরেক্টর। আমি সৈকত নাসির। যেহেতু সৈকত নাসির একজন ফেমাস ডাইরেক্টর আমি সহজেই বিশ্বাস করি যে হ্যাঁ উনি ডাইরেক্টর হবে ।তারপরে সে আমার ছবি চায় আমি কয়েকটা ছবি তার কাছে পাঠায়।
এরপরে সে শুটিংয়ের দিন নির্ধারণ করে কি কি পোশাক নিতে হবে সেটাও বলে দেয়। আমার ক্যারেক্টার কি হবে জিজ্ঞাসা করলে বলে ভাবি ক্যারেক্টার।
ফুল প্ল্যানিং ভাবা যায়। এরপর প্রেমেন্ট এ বিষয়ে ডিসকাস হয়। সে আমাকে আমি যে প্রেমেন্ট নেই সেটাতেই এগ্রি জানায়। আমি বলি ভাইয়া কোন স্পটে আসতে হবে।
সে আমাকে জানায় উত্তরা হাউজ বিল্ডিং নামবেন এরপর আর্মি ক্যাম্পে আসবেন।
আমি বললাম ভাইয়া এখানে কি শুটিংয়ের স্পট আছে আমি তো কখনো ওখানে শুটিং করিনি। সে আমাকে জানায় আউটডোরে শুটিং। আমি যেহেতু তার সঙ্গে কখনো কলে কথা বলিনি ।
তার ভয়েস আমি চিনি না। কিন্তু আমার একটু সন্দেহ হল উনি কি আসলেই ডাইরেক্টর নাকি মামা যেটা সাবধান করছে সেটা অপহরণকারী।
আমার একটু সন্দেহ হলো কারণ সেখানে কোন শুটিং স্পট নেই। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ভাই আপনারা কি শুটিংয়ের গাড়িতে নিয়ে যাবেন।
সে জানালো আমাদের এত সময় নেই। আপনি চলে আসবেন আপনার মত আসা যাওয়ার কনভেন্স আলাদা দেওয়া হবে।পরে আমি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ঠিকই কিন্তু আমার মনের মধ্যে কেন জানিনা সন্দেহ কাজ করতেছে।
প্রথম কথা আমি সাংবাদিক দ্বিতীয় কথা এমন একটা নিউজ শুনেছি ভয় কাজ করছে। তখন বুদ্ধি করে উত্তরায় থাকে আমার একটা ফ্রেন্ড উনি সাংবাদিক সেই সাথে একজন শিল্পী মিন্টু নাম আমি তাকে কল দেই।
মিন্টুর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। মিন্টুকে আমি বলি মিন্টু আমি হাউজ বিল্ডিং আসছি তুই রেডি থাক শুটিংয়ে যাব ওইখান থেকে যাতায়াত বাইকের তেল খরচ লাগে আমি দেব তুই আমার সাথে তোর বাইক নিয়ে চল।মিন্টু অবশ্যই অনেক ভালো ছেলে সব সময় হেল্প করার জন্য রেডি থাকে । আমি বলাতে সে সময় মত হাউজ বিল্ডিং এসে পৌঁছায়।
আমি সিএনজি থেকে নামার পর মিন্টু সাথে দেখা হয়। এরপর আমি ডাইরেক্টর সৈকত নাসির স্যারকে আবার ফোন দিই।সে আমাকে জানায় ওখান থেকে একটা রিক্সা নিবেন আর্মি ক্যাম্পের নাম বলে নিয়ে আসবে আমি বললাম ঠিক আছে।
এরপর আমরা বাইক নিয়ে তার বলা লোকেশন অনুযায়ী আর্মি ক্যাম্পের সামনে যাই। সেখানে গিয়ে একটা চায়ের দোকান পাই বাজার পাই কোন স্পট চোখে পড়ে না।
শুটিং এর কোন লোকজনও চোখে পড়ে না। আশেপাশে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করি এখানে শুটিং কোথায় হচ্ছে সবাই উত্তর দেয় আমরা জানিনা।
আমাদের দুজনের মনে সন্দেহ হতে থাকে আমি বার বার ডাইরেক্টর সাহেবকে ফোন দিয়েছি সে ফোন রিসিভ করে না। এরপর আমাদের মনে সন্দেহ হতে শুরু করে। আমরা বলি এটা নিশ্চয়ই কোন স্ক্যাম চলো ফেরত যাই। আমরা ফেরত যাব ঠিক সেই মুহূর্তে এই ছবিতে থাকা ভদ্রলোক প্রোডাকশন বয় আমার সামনে হাজির হয়।
একটা হাফপ্যান্ট পরা একটা গেঞ্জি পরা। আমাকে বলে আমাকে চিনতে পারছেন প্রথমে সত্যি চিনতে পারিনি। পরে আমাকে ছবি বের করে দেখায়। ওই ছেলে নিজের পরিচয় দিতে থাকে এই যে আপনার সঙ্গে শুটিংয়ের সময় ছবি তুলেছিলাম মনে আছে?
ছবি দেখে বললাম হ্যাঁ চিনতে পারছি আপনি এখানে কি করছেন। সে আমাকে জানায় তার বাসা ওখানে। আমাকে বলে আমাদের বাসায় চলেন আমি বলি না আমার ফ্রেন্ডের সঙ্গে আসছি আমাকে যেতে হবে।
আমি তো এভাবে কারো বাসায় যায় না। তারপরে বলে আপনার ফ্রেন্ডকে চলে যেতে বলেন আমি আপনাকে আপনার বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসব। আমি বললাম নো থ্যাংকস লাগবে না ।আমরা শুটিংয়ের জন্য আসছিলাম।মনে হয় আমাদের সঙ্গে একটা খুব খারাপ জোকস করা হয়েছে। এরপর তাকে বিদায় জানিয়ে আমি আর আমার ফ্রেন্ড হাউজ বিল্ডিং এসে পৌঁছায়। ঠিক সেই মুহূর্তে আবার ফোন আসে বলে আপনি কোথায় যাচ্ছেন।
আমি তো আপনাকে দেখছি আমাদের আসলে সুট চলছিল তো তাই ফোন রিসিভ করতে পারিনি। আমি বললাম যে আপনার শুটিং কোথায় চলছে আমি তো সব জায়গায় দেখে আসলাম এরকম শুটিং বা শুটিংয়ের লোকজন কেউই নেই।বলল আর্মি ক্যাম্পে থেকে একটু আগে। আপনি দাঁড়ান আমাদের প্রোডাকশন বয় কে আমি পাঠাচ্ছি। বললাম ঠিক আছে পাঠান।
যেহেতু আমার সঙ্গে একটা ছেলে মানুষ আছে, আমি একটু সাহস নিয়ে কথাটা বললাম। এবার আবারও সেই একই ছেলে মানে ছবিতে থাকা এই ছেলে হাউজ বিল্ডিং পর্যন্ত আমার পিছনে পিছনে চলে এসেছে।সে আমাকে জানায় সৈকত নাসির স্যার তাকে পাঠিয়েছে আমাকে নিতে। আমি তখন বললাম একটু আগে তো আপনার সঙ্গে আমার দেখা হল আপনি তো শুটিং এর কথা বললেন না।
ছেলেটি বলল আসলে ম্যাম আমি বুঝতে পারিনি আপনার কথা বলেছিল। আমিও নায়িকাকে নিতে এসেছি কিন্তু আমি ভেবেছি অন্য কোন নায়িকা হবে।
আমার সন্দেহ কনফার্ম হয়ে গেল। এরপরে আমি বুদ্ধি করে যেই নাম্বার থেকে আমাকে সৈকত নাসির স্যার ফোন দিয়েছিল 2 মিনিট আগে ফোনে কথা বলল।
সেই নাম্বারে একটা কল দিলাম আমার সামনে থাকা ছেলের পকেটে ফোনটা বেজে ওঠে।
আমি এক মুহূর্ত দেরি না করে ছেলেটির কলার ধরি। এক হাত দিয়ে কলার ধরছি আরেক হাত দিয়ে হাত ধরে রাখছি। এবার চিল্লাচিল্লি শুরু করছি আমার ফ্রেন্ড সাথে আছে সেও দুইটা চড় থাপ্পর মারছে।
পুলিশ বক্সের পুলিশে এগিয়ে আসছে। আমাদের বলে কি হইছে আমি সব ঘটনা তাকে বলি। পুলিশ বলে দাড়ান ওনার কাছ থেকে শুনতে দিন আপনি ছাড়ুন । আমি যেভাবে ধরেছিলাম বাঘের মত আমার হাত থেকে পুলিশ ছাড়াই নিলো।
পুলিশ জিজ্ঞাসা করতে করতে ছেলে দিল দৌড়। পুলিশরা এত পরিমাণে ঘুষ খায় শালারা দৌড়াতে পারে না। He is a criminal. আমার কাছে সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে যেতে দিল। পুলিশের চোখের সামনে একজন আসামি পালালো।
এদেরকে চিহ্নিত করে আমাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত। এদের জন্য অনেক মেয়ে তার জীবন হারাচ্ছে অনেক মেয়ের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করছে।
আমার যদি সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা না থাকতো আমি এদেরকে ধরতে পারতাম না। আমার সঙ্গে হয়তো খারাপ কিছু হতে পারত।
ছোটবেলা থেকে আমার একটা গুন আছে আমি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করি অনেক কিছু বুঝতে পারি। মানুষের চোখের দিকে তাকালে মনের কথা বলতে পারি। এই গুণ টুকুর জন্য অনেকবার অনেক বিপদ থেকে বাঁচিয়েছে আল্লাহ।এবার আপনারা ভাবতে পারেন এমনকি বিশেষ গুণ আছে যেটা শুধু এই মেয়ের মধ্যে আছে। বাকি মেয়েদের মধ্যে নাই?
আসল কথা হল প্রত্যেকটা মেয়ের মধ্যেই আছে। কেউ কাজে লাগাই কেউ কাজে লাগায় না । যেই কারণে মেয়েরা ভীষণ পরিনাম ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হয়।
আমাদের মনের মধ্যে যখন মনে হয় এটা ভুল সিদ্ধান্ত বা আমি যার সঙ্গে কথা বলছি সে সঠিক ব্যক্তির না।
তখন ধরে নিতে হবে সেটা ভুল সিদ্ধান্ত। কোন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তার আইডিন্টিটি সম্বন্ধে সবার আগে জানা উচিত। অপরিচিত কাউকে কখনো বিশ্বাস করা যাবে না।দেখি না কি হয় এটা কখনো ভাবা যাবে না। আমাদের ব্রেন আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে বিভ্রান্তি করতে পারে ।
কিন্তু মন প্রথম দেখাতেই বুঝতে পারে । যে একটা মানুষ কেমন? তাই আপনার চোখ কান খোলা রাখুন এই ধরনের ব্যক্তি গুলোকে আইনের আওতায় তুলে দিন ।
নিজে সতর্ক থাকুন বাকিদেরকে সতর্ক করুন এমন বিপদ থেকে আমরা মিডিয়াতে যারা কাজ করি মিডিয়াকর্মী বা আমরা অভিনেত্রীরা নতুন যারা এসেছে সেই সব মেয়েরা এই সমস্ত জানোয়ারদের হাত থেকে মুক্তি পায়।
সবাইকে এই পোস্টটি শেয়ার করতে অনুরোধ জানাবো এই জানোয়ারটাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। জানিনা কতগুলো মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে।