রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিস্তা নদীর গতি ও প্রকৃতি অনেকটাই নির্ভরশীল উজানের দেশের অবস্থার ওপর। তাই নদী রক্ষায় আমাদের কার্যকর কূটনৈতিক ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
তিনি বলেন, “তিস্তা যেহেতু আমাদের নদী, ভাটির দেশের জনগণ হিসেবে এ নদীর ওপর আমাদেরও অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার রক্ষাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।”
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তিস্তা নদীর বাম তীরে পূর্ব সতর্কীকরণ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্ঠায় শিক্ষককে গণ পিটুনী জনতার
রিজওয়ানা হাসান জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনার চূড়ান্ত নকশা প্রস্তুতে অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর চীনের সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অর্থায়ন বিষয়ে দরকষাকষি শুরু হবে এবং চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, “২০১৬ সালে চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যার ভিত্তিতে তারা একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা দেয়। তবে সেটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়নি। পরে দেশের জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তিস্তা নিয়ে নতুন করে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। পরিকল্পনাটি যেন একতরফা না হয়, সেজন্য তিস্তা তীরবর্তী পাঁচটি স্থানে গণশুনানি আয়োজন করা হয়।”
“গণশুনানিগুলোতে মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল,” যোগ করেন উপদেষ্টা। “মানুষ তাদের মতামত দিয়েছে, যা অন্তর্ভুক্ত করে পরিকল্পনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে ডিজাইন চূড়ান্ত হবে। তখন প্রকল্প ব্যয় ও বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করে চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।”
আরও পড়ুনঃ দেবিদ্বারে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
এ সময় সাংবাদিকরা নির্বাচন ও সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন করলেও তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “আমি যে বিষয়ে এসেছি, সে বিষয়েই কথা বলবো।”
পরিদর্শনকালে রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা. নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং নদীভাঙন রোধে চলমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।