স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত চিটাগাং ক্লাবে আয়োজিত গতকালের (৪ জুলাই) এক বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বোয়ালখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহেদুল হকের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি এবং তা না পেয়ে একদল মব সন্ত্রাসীরা ক্লাবের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। জাহেদুল হককে আটক করার চেষ্টায় ক্লাবের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় চাঁদাবাজ ও মব সন্ত্রাসীরা। নিজেদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থী, এনসিপির সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়া অতিথিদের প্রতিটি গাড়ি তল্লাশি করে। এই ঘটনায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আতঙ্ক ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
বরং এই ঘটনার নেপথ্যে কোটি টাকার চাঁদাবাজির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন এইচ এম ওবায়দুর রহমান আফসার নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে একজন সাবেক প্রধান উপদেষ্টার কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দেন।
ওবায়দুর রহমান তার পোস্টে লিখেছেন, “চিটাগং ক্লাব এবং বিয়ে। একটা অথেনটিক তথ্য দেই। সারাদিন বার্গেটিং চলছিল, সন্ধ্যার মধ্যেই সব টাকা পে করার কথা ছিল। কিন্তু রাত ৯ টা পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ না পেয়ে বিষয়টি ফাঁস করে দেয়। দাবিকৃত এমাউন্ট ছিল ১ কোটি।”
তিনি আরও দাবি করেন, চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না পেয়েই “ছাত্র জনতা”র নামে মব সন্ত্রাসীরা এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
এই বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল এক কোটি টাকার চাঁদা আদায়ের একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা। যখন দাবিকৃত অর্থ সময়মতো মেলেনি, তখনই “ছাত্র জনতা”র নামে এই মব বা জনতাকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। এখানে “প্রতিবাদ” ছিল মূলত চাপ প্রয়োগের একটি কৌশল—চাঁদা না দিলে সম্মানহানি এবং হেনস্তা করার একটি নগ্ন হুমকি।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী জাহেদুল হক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পরিচালক। একটি জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে এমন নজিরবিহীন বিক্ষোভ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে প্রশাসন ও আন্দোলনকারী কারো কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।