শোয়েব হোসেন , গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কালিগঞ্জ এলাকার বান্দাখোলা মৌজায় মিলন গংদের পৈতৃক ভুসম্পত্তি প্রায় ৫০টি বছর যাবত জবর-দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ভয়ংকর ও ধুর্ত ভূমিদস্যুরা।জানা যাচ্ছে,মিথ্যা মামলা ও জালিয়াতি কে পুঁজি করে এবং স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীনদের পকেটে রেখেই বেপরোয়া ভাবে আজও বিজয়ীর বেশে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চলেছেন সেই লোভী পিশাচ শ্রেণীর ভূমি দস্যুরা ।
মিলনগং জানান,প্রায় ৫০বছর আগে বন্টকনামা ছাড়াই অনুরোধ সাপেক্ষে গোপাল গংরা সাময়িকভাবে দখল নেয় সেই জমিগুলো।ধীরে ধীরে কুচক্রী ও লোভী হয়ে ওঠে এই গোপালগং। এমনকি নিজ নামে জালিয়াতির মাধ্যমে পর্চা বানায়।
একপর্যায়ে তারা দখল ছাড়তে নারাজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে জটিল ও কুটিল অপকৌশল প্রয়োগে একটি জমিতে মুরগির ফার্ম এবং অন্যটিতে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে আইনত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে সক্ষম হয় আদালতের মাধ্যমে! যার মামলা নং- বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালত, গাজীপুর দে: মো: নং -১৩৭ /২০১৮। প্লটের জমি দুটি হচ্ছে বান্দাখোলা মৌজার এস এ খতিয়ান ৪৬৮, আর এস খতিয়ান ১৩২৫,এস এ ৫৬, আরএস ৫৪।
দখলবাজ ভূমি দস্যুরা হলেন নেপাল চন্দ্র মন্ডল (৪৬), গোপাল চন্দ্র মন্ডল(৪৯), আশিস চন্দ্র মন্ডল (৩২)ও রিপন চন্দ্র মন্ডল (৪৮)। আর কাগজপত্রের নমুনা অনুযায়ী প্রকৃত মালিকগণ হলেন মিলন চন্দ্র মন্ডল(৪৬), বিমল চন্দ্র মন্ডল (৫২), পরিমাল মন্ডল(৭০) ও অলিল মন্ডল(৫০)।
উল্লেখযোগ্য যে পক্ষ ও বিপক্ষ দলের প্রত্যেকেই হচ্ছেন সম্পর্কে অপরের আপন কাকাতো ও জ্যাঠাতো ভাই। উক্ত দুই প্লট মিলে মোট বেদখল জমির পরিমাণ ১১৬ শতাংশ (প্রায়)।
সকল প্রকার তথ্যসহ প্রয়োজনীয় পত্রাদি পর্যবেক্ষণের পর গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি সুগঠিত টিম সরেজমিনে পরিদর্শনে উক্ত বেদখল ভূমিতে উপস্থিত হলে ভূমিদস্যুদের দ্বারা সৃষ্ট নানান উদ্ভট, অসামাজিক, অনৈতিক ও ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়।
প্রকৃত মালিক মিলনগং ভূমি দেখিয়ে দিলে কামাল হোসেন উক্ত টিম নিয়ে ভূমির কাছাকাছি আসা মাত্রই ওঁত পেতে থাকা ভূমিদস্যুরা লাঠি-সোটা আড়ালে প্রস্তুত রেখে আস্তে আস্তে বেরিয়ে এসে পরিস্থিতি বুঝতে থাকে।তারপর সেই দখলবাজ,লোভী ও দুষ্ট লোকেরা সাংবাদিক ও ক্যামেরা দেখতে পেলে ক্ষণিকের জন্য মিষ্ট ভাষায় নিজেদের
(নিরীহ দো’পায়া প্রাণীর মতো)সরল হিসেবে দাবি করে মুখস্ত বুলি আউড়িয়ে একাধিকবার বলেন, “তারা নাকি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,আদালত যে রায় দেবে তারা নাকি তাই মেনে নেবে! ” এরই সাথে সাথে তারা পরিকল্পিতভাবে গোপনে পেছন দিক থেকে সাংবাদিকদের ভিডিও করতে থাকে।
ভিডিও করা টের পেয়ে সাংবাদিকরা আপত্তি করাতে তারা হাস্যমুখে,অহমিকার সাথে বারবার বুঝাতে চেষ্টা করে, “তারা নাকি বুঝতে পারেনি (অবুঝ প্রাণী), তাছাড়া এমনটি নাকি হতেই পারে!” মিলন গং তার বেদখল সম্পত্তিগুলো সাংবাদিককে দেখিয়ে দেন।তখন গোপালগং নিজ দখলে রাখা জমিতে দাঁড়িয়ে(যদিও মহামান্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা জ্ঞাপক সাইনবোর্ড টানানো)
ক্যামেরার সামনে এসে বেপরোয়া ভাবে বলে ওঠেন ” এই জমি আমরা ভোগ দখলে খাচ্ছি, এটা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি।তবে বন্টকনামা হয়নি। মিলনরা বিভিন্ন সময় লোকজন নিয়ে এসে ঝামেলা করে বিধায় আমরা আদালতের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা রায় নিয়েছি!”
অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে দখলবাজ পক্ষের লোকজন বেড়ে যায় এবং তারা মিলন গংদের সঙ্গে ঘন ঘন ও খণ্ড আকারে যুক্তির নামে অযৌক্তিক তর্কের সৃষ্টি করে। অবস্থা বেগতিক দেখে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেন উভয় পক্ষের বক্তব্য নেওয়ার পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা ও আইন কানুন মেনে চলার পরামর্শ দেন ও পরিস্থিতির সামাল দিতে চেষ্টা করেন ।
কিন্তু কথায় বলে, “চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী”! দখলবাজরা নীরব পরিস্থিতিতেই ঈশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে আক্রমণাত্মক ও ভয়ংকর হয়ে ওঠে।পরিবেশ ক্রমশ: হুমকি মূলক হয়ে উঠলে কামাল হোসেন বিপদ বুঝে সবাইকে নিয়ে তখনকার মতো এলাকা ত্যাগ করেন।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জাকির (৫০) বলেন, শুধু আমিই না পুরো এলাকাবাসী সকলেই জানে যে মূল মালিক মিলনগংরাই।এখানে মিথ্যার কোন সুযোগই নাই।
মামুন (৩৬) বলেন, আমি মালিকপক্ষের সঙ্গে একান্ত ভাবে জমি উদ্ধারে নেমেছি। কারণ, জমির সকল কিছু আমার পরিষ্কার যাচাই বাছাই করা আছে। এভাবেই আমি ভবিষ্যতেও জনসেবার তরে কাজ করে যেতে চাই সারা দেশব্যাপী।
রিঙ্কু(৩৫) বলেন, বিগত ২-৩ বছর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর গ্রাম্য সালিশে রায় দিয়েছিলেন মিলন গঙ্গের পক্ষেই।কিন্তু,সেই রায় তারা মেনে নিয়েও ফিরে এসে আশ্চর্যজনক ভাবে জমি বেদখল করেই রেখেছে!
সিনিয়র সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কামাল হোসেন বলেন, আমরা জমির কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই করে সরেজমিনে গিয়েছিলাম জমি দেখতে।দখলবাজরা যে ভদ্রতার আড়ালে কতটা ভয়ংকর তা আমি সহজেই বুঝতে পেরে সরে গেছি। খুব জলদি আইনি হস্তক্ষেপ কামনা করি।
জনমনের প্রশ্ন,কোন ক্ষমতা বলে ভূমিদস্যুর আজও জমির দখলদারিত্ব করছে ? মিলনরা কি ফিরে পাবে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ? দখলবাজদের ক্ষমতা ও চতুরতার শেষ কোথায় ? এলাকার স্থানীয় ও প্রভাবশালী মহল আর কতদিন অন্ধ থাকবে ? দেশটা কি মগের মুল্লুক হয়ে গেছে যে, জোর যার মুল্লুক তার ?
আইনের শাসন কি তাহলে আজ বিলুপ্তির পথে ? শান্তি-শৃঙ্খলা ও আইন কানুন কি আদৌ ফিরে আসবে ? আইন আদালত আসলেই মিলনদের জমির দখল বুঝিয়ে দিতে পারবে কিনা ? অর্ধ শতাব্দী পেরিয়ে আজও কি আইনের শাসন মূখ থুবড়ে পড়ে থাকবে ? দেশ থেকে কি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারিয়ে গেছে ? মানবতা আজ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে ?
সচেতন জনতার দাবি,বর্তমান দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সকল ব্যক্তিদের মাধ্যমে সুবিচারের আশা পাওয়া।কাজেই সকলের নীতিগত বৈশিষ্ট্য জনসম্মুখে প্রকাশ পাওয়ার এখনই মোক্ষম সময়।গোপালগংরা একদিকে জালিয়াতি করে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা মুলক রায় নিয়েছে।
অন্যদিকে নিজেরাই সেই জমি ভোগ দখল করে মহামান্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে!লোভে পাপ পাপে মৃত্যু! কাজেই তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি সরকারবাদী মামলা হওয়া উচিত। সেই সাথে সকল অপরাধী ও সহযোগীদের পাকড়াও করে জনসম্মুখে উচিত শাস্তি দেওয়ার জন্য এলাকার জনতা এক হতে চলেছে।
উপরন্ত, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের সহযোগিতায় ভূমি উদ্ধারের উদ্যোগ প্রাণবন্ত ও মুখরোচক হয়ে উঠেছে।যেন দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীর ভয়ঙ্কর দুঃখজনক অমাবস্যার রাত কাটিয়ে আলোর সূর্য দেখার সময় এসেছে। কাজেই, সাধু সাবধান!
ভূমিদস্যু নামক পাষণ্ড ও দানবদের সমূলে উৎখাত করা এখন সময়ের উপযুক্ত দাবি।এই খবর প্রকাশ ও প্রচারের সাথে সাথে উক্ত এলাকার স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সকল সচেতন ও প্রভাবশালী মহলসহ উচিত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে জরুরি ভাবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। চলবে —–