মোঃ জামাল ভুইয়াঃ
পাকিস্তানের আবশ্যকতা ও অপরিহার্যতা, পর্ব ০৮
বিষয়:- পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মহা মুক্তির জন্য পাকিস্তানের অপরিহার্যতা।
পাঠক, পাকিস্তান হল পূর্ব বাংলার মুসলমানদের জন্য মুক্তির মহা সনদ । ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব বাংলার মুসলমানরা। ১৭৫৭ সালে পলাশীর পতনের পর পূর্ব ভারত বিশেষ করে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের অবস্থা খুবই করুণ ছিল।
১৭৫৭ সালে পূর্ব বাংলা হতে মুসলিম রিয়াসাতের পতন শুরু হয় এবং ১৯২৪ সালে উসমানীয় খিলাফতের পতনের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়। ১৯২৪ সালে সারা পৃথিবীর মুসলমানরা পরাধীন ছিল। মুসলমানদের এই পরাধীন যুগে পূর্ব বাংলার মুসলমানরা পূথিবীর অন্যান্য মুসলিম অপেক্ষা অধিক সময় পরাধীন ছিল।
আরও পড়ুনঃ মধুপুরে এডভোকেট মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে বিজয় মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
পূর্ব বাংলার মুসলমানরা শুধু মাত্র পূথিবীর অন্যান্য মুসলিম এলাকা অপেক্ষা অধিক সময় পরাধীন ছিল ছিল না, বরং অধিক নিষ্পেষিত ছিল। কারণ পূথিবীর অন্যান্য এলাকার মুসলিমরা শুধু মাত্র অমুসলিমদের একক শাসনে ছিল, কিন্তু পূর্ব বাংলার মুসলমানরা দ্বৈত শাসনে ছিল। অথাৎ পূর্ব বাংলার মুসলমানরা ইংরেজ ও হিন্দু জমিদারদের দ্বৈত শাসনের শিকার হয় ।
অপরদিকে ভারতের অন্যান্য স্থানের মুসলমানরা আমাদের অপেক্ষা কম সময় পরাধীন ছিল এবং তারা দ্বৈত শাসনের অধীনে ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ উত্তর ভারত, দিল্লি, পশ্চিম ভারতের কিছু অংশ ১৮৫৭ সালে পরাধীন হয় । আবার কিছু এলাকায় মুসলিম দেশীয় রাজ্য ছিল। ফলে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের তূলনায় ভারতের অন্যান্য এলাকার মুসলমানদের পরাধীনতার স্থায়িত্ব ও নির্যাতিত হবার মাত্রা অনেক কম ছিল।
এমতাবস্থায় ভারতের যে কোন এলাকার মুসলমানদের তূলনায় পূর্ব বাংলার মুসলমানদের জন্য একটি মুসলিম রিয়াসাত প্রতিষ্ঠা আবশ্যক ছিল। পূর্ব বাংলার মুসলমানরা এমন নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার ছিল যে, সারা ভারতের মুসলমানরা অখন্ড ভারতের জন্য আন্দোলন করলেও পূর্ব বাংলার মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা মুসলিম রিয়াসাত প্রতিষ্ঠা আবশ্যক ছিল।
আরও পড়ুনঃ আসেন সমাজ নষ্ট মূল কারণ কি দেশ চালাবে কি করে
খোদ কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ যদি পাকিস্তানের দাবি পরিত্যাগ করতেন , তাহলেও পূর্ব বাংলা ও আসামের মুসলমানরা পাকিস্তানের দাবি পরিত্যাগ করত না। এর একটি জলন্ত উদাহরণ হল , কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ যখন এ বি সি পরিকল্পনা মেনে নিয়েছিলেন তখন পূর্ব বাংলা ও আসামের মুসলিম নেতারা সিলেটের মাহমুদ আলীর মাধ্যমে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন এবং খোদ কায়েদে আজম যদি পাকিস্তানের দাবি পরিত্যাগ করে তাহলেও পূর্ব বাংলা ও আসামের মুসলমানরা পাকিস্তানের জন্য স্গ্রাম করে যাবে এই মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন।
কাজেই ভারতের অন্যান্য স্থানের মুসলমানদের তূলনায় পূর্ব বাংলা ও আসামের মুসলমানদের মহা মুক্তির জন্য পাকিস্তানের অপরিহার্যতা বেশি ছিল।
চলমান
মোঃ মোস্তফা জামাল ভূঁইয়া
চেয়ারম্যান
প্যান ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশ