এম বাদল খন্দকার (বিশেষ প্রতিনিধি)ঃ
ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বিনা কারণে গাড়ি জব্দ এবং লাইসেন্স সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা মালিক-শ্রমিকরা।
তবে দুর্ভোগের মাত্রা আরো বাড়ে বিক্ষুব্ধরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করার ফলে। এতে মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়।
ধর্মঘটের পাশাপাশি সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে । এতে করে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের কারনে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু করে।
আরও পড়ুনঃ নোয়াখালী সাংবাদিক ইউনিটি’র আহবায়ক কমিটি গঠিত
ধর্মঘটের কারণে সোমবার সকাল থেকেই জেলা জুড়ে প্রধান প্রধান সড়কসহ মহাসড়কে সব ধরনের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা যেন চলাচল না করতে পারে সেজন্য বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নিয়ে ব্যাটারি চালিত রিকসা চলাচলে বাঁধা দেয়। যাত্রীদেরকে জোরপূর্বক অটোরিকসা থেকে নামিয়ে অটোরিকসার চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়।
এতে যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও রোগীরা খুবই কষ্ট করে। ধর্মঘটের কারনে চাপ বেড়েছে বাসসহ অন্যান্য গণপরিবহনে। তবে দুর্ভোগের মাত্রা আরো বাড়ে বিক্ষুব্ধরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায়। ফলে যানবাহনের যাত্রীরা পায়ে হেটে তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রায় ৩ ঘন্টা পর বেলা ১২টার দিকে যান চলাচল শুরু করে।
তবে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা মালিক-শ্রমিকদের ৩ দফা দাবি (জব্দকৃত সকল সিএনজি চালিত অটোরিকশা ছেড়ে দেয়া, পারমিট অনুযায়ী জেলার সর্বত্র অবাধ চলাচল এবং ট্রাফিক বিভাগের হয়রানি বন্ধ করা) আদায় না হওয়া পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন সিএনজি অটোরিকশা মালিক শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত দুই দিন ধরে সিএনজি অটোরিকশার যে ধর্মঘট চলছে এতে আমাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী ও শিশুদের নিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করতে হচ্ছে। এর মধ্যে সড়ক অবরোধ করার ফলে আমাদের জন্য দুর্ভোগের শেষ নেই। আমরা এসব সমস্যার সমাধান চাই।
এ ব্যাপারে জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মোঃ স্বপন মিয়া বলেন, তিন দফা দাবি আদায়ে আমাদের ধর্মঘট কর্মসূচী চলছে। প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ নরসিংদীর শেখেরচর বাবুরহাটে শান্তির সুবাতাস, বণিক সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, সিএনজিচালিত মালিক সমিতির বিভিন্ন দাবি রয়েছে। সেজন্য তারা মহাসড়ক অবরোধ করেছিল।
মালিক-শ্রমিকদের জানানো হয়েছে চলমান সমস্যা নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সকলে মিলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে। সেই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে মহাসড়ক থেকে তাদের অবরোধ তুলে নিয়েছে। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।