ডঃ এম, জি, মস্তফা মুসাঃ
*সুখ-দুঃখের ছায়াপথে: প্রত্যাশা,*
*প্রাপ্তি ও মানসিক শান্তির দর্শন*
*১. বন্ধু লেখক জুলফিকার হায়দারকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই:* জুলফিকার হায়দারের এই লেখাটি গভীর জীবনবোধে পরিপূর্ণ, সুচিন্তিত ও হৃদয়স্পর্শী। সমাজমনস্তত্ত্ব, আত্মবিশ্লেষণ ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গির এক অপূর্ব মিশ্রণ রয়েছে তাঁর লেখায়। ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও মানবপ্রকৃতির সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ এমনভাবে উপস্থাপিত হয়েছে যে পাঠকের আত্মার সঙ্গে তা গভীরভাবে যুক্ত হয়। তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই এই অসামান্য অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি এত পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করার জন্য।
*২. পৃথিবীতে মানুষ সার্বক্ষণিক পরীক্ষার (ফিতনা) মধ্যে রয়েছে, মৃত্যু পর্যন্ত:* ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, পৃথিবীর জীবন একটি অবিরাম পরীক্ষা বা ফিতনা — (সূরা মূলক,৬৭:২): “তিনি যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন তোমাদের মধ্যে কে কর্মে শ্রেষ্ঠ।”
এই পরীক্ষার প্রকৃতি কখনো সুখ-সাচ্ছন্দ্যের মাধ্যমে, কখনো দুঃখ-কষ্টের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ধনী-গরিব, রোগ-স্বাস্থ্য, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি — সবই আসলে পরীক্ষার মাধ্যম। আর এই পরীক্ষা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। সুতরাং ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে মানুষকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করতে হয়।
*৩. সুখ (Happiness) একটি বিমূর্ত ধারণা (Abstract Concept) মাত্র:* ‘সুখ’ এমন এক মানসিক অনুভূতি যার মাপকাঠি প্রতিটি মানুষের মধ্যে ভিন্ন। একে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, শুধুই অনুভব করা যায়। অনেক সময় মানুষ মনে করে, “যদি আমি এটা পেতাম, তাহলেই সুখী হতাম।” কিন্তু বাস্তবে সেটা পাওয়ার পরেই আবার নতুন ‘অসুখ’ জন্ম নেয়।
এ কারণে বলা যায়, সুখ হলো একপ্রকার মনের অবস্থা — যা আন্তরিক তৃপ্তি, প্রত্যাশা নিয়ন্ত্রণ, কৃতজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। সুখ মানে শুধু প্রাপ্তি নয়, বরং যা আছে তার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া।
*৪. সুখ নিয়ে মন্তব্য:* সুখ নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ তুলে ধরা যায়: সুখ মানে অভাবহীনতা নয়, বরং মনের পরিতৃপ্তি। অনেকে অল্প নিয়ে বেশি তৃপ্ত, আবার অনেকে অনেক পেয়েও অশান্ত।
সুখ মানে প্রত্যাশা ও বাস্তবতার মধ্যে সমতা। কেউ যত কম প্রত্যাশা রাখে, সে তত কম ব্যথা পায় এবং বেশি শান্তিতে থাকে।
সুখের উৎস হলো সম্পর্ক, আধ্যাত্মিকতা ও অর্থবহ কর্ম। Harvard-এর ৭৫ বছরের দীর্ঘ এক গবেষণায় দেখা গেছে, অর্থ ও খ্যাতির চেয়ে ভালো সম্পর্ক মানুষকে বেশি সুখী করে তোলে।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সুখ হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও আখিরাতের সফলতা। তাই দুনিয়ায় কষ্ট থাকলেও, মুমিন চূড়ান্ত সুখের আশ্বাস পায় আল্লাহর কাছে। “নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণেই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়” (সুরা রা'দ: ২৮)!
*৫. উপসংহার:* বন্ধু জুলফিকার হায়দারের লেখাটি সুখ-দুঃখ, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি এবং মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি ও আত্মচর্চার এক পরিপূর্ণ প্রতিফলন। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যে জীবন হলো এক যাত্রা, যেখানে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়াই যথেষ্ট। সুখের জন্য বাহ্যিক কিছু নয়, প্রয়োজন একটা দৃঢ় ও ইতিবাচক মনের ভিত।
সুখ কখনো পাওয়ার মধ্য দিয়ে আসে, কখনো বা দেওয়ার মধ্য দিয়েও আসে; সুখ আসে বোঝার মধ্য দিয়েও।
আল্লাহর প্রতি ভরসা, মানুষের প্রতি মমতা, আর নিজের প্রতি সম্মান— এই তিনেই সুখের চাবিকাঠি। (মূসা: ২০-০৬-২৫)
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়ামোঃ আমিনুল ইসলাম,
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম,
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন,
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত,
সহকারী বার্তা সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু,
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল,
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং ৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736091515, 01716698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.