এম বাদল খন্দকার (বিশেষ প্রতিনিধি)ঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফারুকুজ্জামানের বিভিন্ন অনিয়ম,দুর্নীতি,স্বজন প্রীতি,দখল বাণিজ্য,ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে ইউপি সদস্যদের ভাতার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ সহ নানা৷
অভিযোগ রয়েছে।এ সমস্ত বিষয় তুলে ধরে স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সাথে নিয়ে মানব বন্ধন করেন পরিষদের ছয়জন সদস্য।ফান্দাউকে এ মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।মানব বন্ধনে তারা চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামানের গ্রেপ্তার দাবী করেন।মানব বন্ধনের পর চেয়ারম্যান ফারুককে অপসারন করে তার স্থলে প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মানব বন্ধনকারী সদস্যরা হলেন ইউপি সদস্য মোঃ আলমগীর মিয়া,মোঃ ফরহাদ হোসেন,শেখ মোঃ আরব আলী, ফরিদ মিয়া, মহিলা সদস্য শেখ ফাহিমা খান,রিনা বেগম।মানব বন্ধনকারীরা জানান, চেয়ারম্যান তার ক্ষমতার বলে ছয় মাস যাবৎ তাদের ভাতার টাকা আটকে রেখেছেন।
মোঃ আরব আলী বলেন, আমি সই করি বাংলাতে।কিন্তু আমি নিজেও জানিনা ইংরেজিতে আমার সই জাল করে চেয়ারম্যান আমার ভাতার টাকা তুলে আত্মসাৎ করে ফেলেছে।
আরও পড়ুনঃ বগুড়া গাবতলীর দাড়াইল মন্দিরে রাধা গোবিন্দের লীলাকীর্ত্তন অনুষ্ঠান
একই ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মোঃ আলী মিয়া জানান, চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান বিনা দোষে আলী মিয়াকে তিন বছর জেল খাটিয়েছেন। এ সময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে আলী মিয়ার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
ভুক্তভোগী গুরুপদ আর্চায্য বলেন,চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান তার চাচা ইয়াদ আলীকে দিয়ে আমার প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা মুল্যের পাঁচ শতাংশ বাড়ি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে।যা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
ফান্দাউক গ্রামের কৃষণ চরন,বিষ্টুলাল ও বিষ্ণু দাস জানান,চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান তার ক্ষমতার বলে তাদের তিন ভাইয়ের প্রায় এক কোটি টাকা মুল্যের ১৮ শতাংশ বাড়ির জায়গা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।বর্তমানে আমরা তার ভয়ে ফান্দাউক ছেড়ে দুই ভাই নাসিরনগরে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছি।আরেক ভাই ভারতে চলে গেছে।
জানা গেছে,হরিণবেড় শাহজাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রসুলপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান মাষ্টারের সাত বিঘা জমি ফারুক তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে।
ফান্দাউক গ্রামের পেশন মিয়ার বাড়ির জায়গা জোর পূর্বক দখল করে নেয় চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান।
আরও পড়ুনঃ নারী ও পর্দা: ইসলামী দৃষ্টিকোণ, দায়িত্ব ও পরিণতি*
ফান্দাউক গ্রামের ব্যবসায়ী বিজেশ্বর দেবের বাজার ভিটি জোরপূর্বক দখল করে নেয় চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান।
তাছাড়াও আতুকোড়া গ্রামের রুমান চৌধুরীর বালুর ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে ফারুখ।
এলাকাবাসীরা জানায়,এক সময়ে ফারুকুজ্জামানের পকেটে চা খাওয়ার টাকা ছিল না।২০০০ সালের দিকে ফারুকুজ্জামান জড়িয়ে পড়ে ভারতীয় অবৈধ ব্যবসার সাথে।এ সময় তিনি ভারতীয় চিনি,জিরা, কাপড়, মাদক ব্যবসা শুরু করে।বিষয়টি তখন কালিগচ্ছ বিজিপির নজরে আসে।বিজিপির লোকজন ফারুকের বাড়িতে হামলা করে। বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করে।বিজিপির উপস্থিতি বুঝতে পেরে ফারুকুজ্জামান তখন পালিয়ে যায় এবং প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত পলাতক থাকে।তাছাড়াও আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান ফারুকের বিরোদ্ধে।