স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী নুরুল আবছার চৌধুরীর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
গত ২৭ জুলাই (শনিবার) দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের আয়োজন করে তাঁর পরিবার, শুভানুধ্যায়ী ও এন.এ.সি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।
এ উপলক্ষে মরহুমের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার শিলাইগড়ায় অবস্থিত মাজারে জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল, বাদ জোহর আগ্রাবাদস্থ এন.এ.সি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে এবং বাদ আসর মরহুমের চন্দনপুরাস্থ বাসভবনে আয়োজিত মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা।
আরও পড়ুনঃ ‘আলোর পথে’র মাসিক মহিলা মহিলা মাহফিলে মাওলানা মুহাম্মদ আহাদুজ্জামান ‘ইসলাম কখনো আধুনিকতা বিরোধী নয়, মানুষের জন্য কল্যাণকর কোন কর্মই বিদআত নয়’
আলোচনা সভায় বক্তারা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রয়াত নুরুল আবছার চৌধুরীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাসেবামূলক জীবনকর্ম। বক্তারা জানান, পাকিস্তান শাসনামলে তিনি ছিলেন ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬২ সালের কুখ্যাত শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিল আন্দোলন, ১৯৬৪ সালের সার্বজনীন ভোটাধিকার আন্দোলন এবং ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেও রয়েছে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নির্ভয়ে।
নুরুল আবছার চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি ছিলেন, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা অলি আহাদের নেতৃত্বে পরিচালিত দলটির হয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তিনি একাধারে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উপদেষ্টা, কসমোপলিটন সিটি বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি, ইসলামবাদ টাউন কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটির পরিচালক।
আরও পড়ুনঃ বড় বড় জনসভায়,ওয়াজ মাহফিলে,সেমিনার, আলোচনা সভায় নেতা ও বক্তারাই শুধু বক্তব্য দিয়ে যাই, শ্রোতাদের বক্তব্য শুনিনা, তাদের মনোভাব, চাওয়া পাওয়া প্রয়োজনিয়তা জানতে পারিনা
সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডেও তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তিনি ছিলেন আনজুমানে রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া, চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদ, ডায়াবেটিক সমিতি, মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্যসহ বহু সংগঠনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশিষ্টজনরা বলেন, “নুরুল আবছার চৌধুরীর কর্ম ও অবদান চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়। তাঁর নামে চট্টগ্রাম মহানগরীতে একটি সড়ক নামকরণ করে তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখার এখনই সময়।”
বক্তারা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের প্রতি এই দাবি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এন.এ.সি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জি: মো.: জাবেদ আবছার চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সমাজসেবক লায়ন জানে আলম, ফয়সাল ইকবাল, সৈয়দ শিবলী সাদিক কফিল, স ম জিয়াউর রহমান, আসদুজ্জামান আসাদ, ডা. আর কে রুবেল, মো: হাসান মুরাদ, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সংগঠক সজল দাশ, এন কে এম শওকত ওসমান, কবি আসিফ চৌধুরী, হাজী নুর মোহাম্মদ, আলহাজ মুফতি আবদুস সোবহানসহ আরও অনেকে।
সভা শেষে মরহুম নুরুল আবছার চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনায় মিলাদ, কিয়াম ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে মরহুম নুরুল আবছার চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া, মিলাদ, কিয়াম অনুষ্ঠিত হয় এবং মোনাজাত পরিচালনা করেন মদিনা মিশনের চেয়ারম্যান মাওলানা নিজাম উদ্দিন আশরাফী।