শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
Headline :
বাংলাদেশ জোট মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সর্বজনীন জোটের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসেম ন্যাশনাল ইউনিটি কাউন্সিল(এনইউসি) এর মহাসচিব বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মনের বাণী: মানবতার মূর্ত প্রতীক: *অধ্যাপক ড. আলহাজ্ব মোঃ শরীফ আব্দুল্লাহ হিস সাকী শিক্ষাবিদ ও মানবতাবাদী এক অনন্য সমন্বয়* -ড. এ আর জাফরী বাংলাদেশ সর্বজনীন জোটে মূল চিন্তাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত প্রধান উপদেষ্টা ফরহাদ মাজহার বগুড়া গাবতলী স্টেশনের রেলওয়ে কর্মচারীকে মারপিট করে আহত করে ২২ বছর পর ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় – দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে নতুন সম্ভাবনার দিগন্তে বাংলাদেশ ময়মনসিংহে পলাতক আসামী গেপ্ততার করেছে র‍্যাব ১৪ যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ আটক ১ বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বিএনপিরভারপ্রাপ্তচেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিল

জুলাই বিদ্রোহের শহীদদের স্মরণে কায়রোয় বাংলাদেশ দূতাবাসের গভীর শ্রদ্ধা ও আকাশছোঁয়া প্রতিশ্রুতি

জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ানঃ  / ১৪ Time View
Update : বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫

জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ানঃ

আলোকছায়ায় মোড়া এক সন্ধ্যায়, সময়টা যখন কায়রোর আকাশে সূর্য অস্ত যাচ্ছে—ঠিক তখনই বাংলাদেশ দূতাবাসে শুরু হয় ইতিহাসের চেতনায় উজ্জ্বল এক বিশেষ আয়োজন। ৫ আগস্ট আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ছিল কেবল একটি প্রথাগত স্মরণানুষ্ঠান নয়; এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের গহীন থেকে উঠে আসা এক সজীব আত্মপ্রত্যয়ের প্রকাশ।

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে, জাতীয় সঙ্গীতের মহিমান্বিত সুরে। তারপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও তার অনুবাদ পরিবেশিত হয় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের আরোগ্য কামনায় এক বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। পুরো পরিবেশ মুহূর্তেই হয়ে ওঠে এক গভীর, সংবেদনশীল শ্রদ্ধাঞ্জলির ক্ষেত্র।

পরবর্তীতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে উপস্থিত সকলেই সম্মান জানান জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বীর শহীদদের প্রতি। যেন কায়রোর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল এক অতীতের নীরব কাব্য।

আরও পড়ুনঃ শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশজীবী জনগণ এক হও, ‘এন্টি-ফ্যাসিস্ট ডে’ পালিত

বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাঠ করা বাণীগুলো পাঠ করেন যথাক্রমে কাউন্সিলর (শ্রম) ও দূতাবাসের এইচওসি। রাষ্ট্রপতির বাণীতে ছিল শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর বর্তমান প্রজন্মকে ইতিহাসের শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে স্মরণ করান, যে কোনো গণঅভ্যুত্থান শুধুই রাজনৈতিক বিপ্লব নয়, তা জাতির আত্মিক জাগরণও বটে।

রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন ১৯৭৪ সালের জুলাই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট, সাহসী ছাত্রদের দুর্বার প্রতিরোধ ও শহীদদের আত্মবলিদান। তিনি বলেন, “এই বিদ্রোহ শুধু সামরিক বুটের বিরুদ্ধে নয়, ছিল গণতন্ত্রহীনতার শৃঙ্খল ভাঙার এক তীব্র প্রয়াস। শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রেরণা যোগায়—তাদের রক্তে রাঙানো পথ ধরে আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি স্বাধীনতার পূর্ণতর পথে।”

ছাত্রদের ভূমিকা ও তাঁদের অবদানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “তোমরাই আমাদের অনুপ্রেরণা, তোমরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ।”

এরপর প্রদর্শিত হয় একটি হৃদয়স্পর্শী তথ্যচিত্র—যেখানে উঠে আসে বিদ্রোহের পটভূমি, শহীদদের সংগ্রাম আর আহতদের আর্তচিৎকার। তথ্যচিত্রটি যেন উপস্থিত সবার চোখে জল এনে দেয়, আর হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে ইতিহাসকে ধরে রাখার নৈতিক দায়।

প্রদর্শনীর পর্বে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ উদ্বোধন করেন এক দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শনী, যেখানে সংরক্ষিত ছিল বিদ্রোহের স্মৃতি বহনকারী নানা দুর্লভ মুহূর্ত। ছবি যেন কথা বলে ওঠে, ইতিহাসের পাতাগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ধরা দেয় দর্শকদের হৃদয়ে।

আরও পড়ুনঃ অন্তর্বতীকালীন সরকার প্রধানের প্রতি দাবি-এখনই নির্বাচন ঘোষণা করুন : ফারুক

পরিশেষে ছিল সম্মানিত অতিথি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আয়োজিত রাতের খাবার। এক হৃদ্যতা, সৌহার্দ্য আর জাতিস্মৃতির বন্ধনে মোড়ানো সে আয়োজন যেন ছিল এক আত্মিক পুনর্মিলন, যেখানে দেশ ছিল সবার হৃদয়ের কেন্দ্রস্থলে।

অনুষ্ঠান শেষ হলেও কায়রোর সন্ধ্যা আকাশে তখনো প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল সেই সুর—”আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…” এ ভালোবাসা শুধু গানেই নয়, তা রক্তে, চেতনায়, এবং ভবিষ্যতের প্রতিটি স্বপ্নে গাঁথা।

লেখক ও কলামিস্ট, শিক্ষার্থী, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো, মিশর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category