অথই নূরুল আমিনঃ
কলসী ভরা গুপ্তধন এই গল্পটি অনেক অনেকদিন আগের একটি গল্প। পৃথিবীতে যত আতশী আছে। সেই আতশী জাতের মধ্যে অনেকগুলো জাত আছে। সেই জাতের মধ্যে একটি জাত হলো আজরা।
এই আজরা দিনের বেলায় তারা সাপের রূপ ধরে বিভিন্ন জায়গায় থাকে। আর রাতের বেলায় মানুষসহ তারা বিভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারে। এমনকি ওরা মানুষের মত দিব্বি কথাও বলতে পারে।
কুমুদপুর গ্রামে অনেক পুরানো একটি মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরে এখন আর পূজারীরা রক্ষনাবেক্ষণ করেনা। প্রায় শত বছর ধরে এই মন্দিরটি অনাদরে পরে আছে। কারণ এখানে এখন হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ বসবাস করে না। এখন এই কুমুদপুর গ্রামে যারা বসবাস করছে তারা সবাই অন্য ধর্মের লোকজন।
আরও পড়ুনঃ কুড়িগ্রামে শিশু ও যুবদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নে; আমার জীবন আমার স্বপ্ন বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত
তবে মন্দিরটি একটি বিরাট আকারের জঙ্গল হওয়াতে সেখানে আসলেই ভয়ে কেউ যায় না। এরকম একটি অরক্ষিত জায়গায় মন্দিরটি হওয়ার ফলে গুপ্তধন পাহারাদার একদল আতশী। এই মন্দিরের নীচে অসংখ্য গুপ্তধন রেখে যায়। কোন এক গভীর রাতে। আর এই গুপ্তধন এখন পাহারা দেয় এখানের কয়েকজন আতশী রুপী আজরা। কোন একদিন সন্ধ্যায় দুজন আজরা মানুষের রুপ ধরে জঙ্গলের পাশের পথে দাড়িয়ে আছে। তারা দেখল একজন গরীব লোক এই রাস্তার সামনের দিকে আসছে। সেই গরিব লোকটি যখন খুব কাছে এলো।
আজরা-১ : এই ভাই, তুমি কি এই এলাকায় থাকো?
পথিক: হ্যা, এই তো পিছন পাড়া আমার বাড়ি।
আজরা-২: ভাই, তুমি কি আমাদের কয়েকটি কলসী ধুয়ে দিতে পারবে? অনেক টাকা মায়নে দেব।
পথিক: ঠিক আছে? আমি ধুয়ে দিতে পারবো।
আজরা-১: তাহলে আগামী কাল এমন সময় তুমি এখানে আসবে। আমরা তোমাকে এসে নিয়ে যাবো। আর সাথে করে কয়েকটি নারিকেলের শুকনা ছোলা নিয়ে আসবে কেমন?
পথিক: ঠিক আছে।
আজরা-২: আর শুনো, সাথে করে কিন্তু কাউকে নিয়ে আসবেনা। তুমি একাই আসবে ঠিক আছে।
পথিক: ঠিক আছে। (দৃশ্য পতন)
আরও পড়ুনঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা
দৃশ্য দেখা যাবে সেই পথিক কিছু নারকেলের ছোলা নিয়ে এলো। তারপর মানুষ রুপী আজরারা সেই গরিব লোকটিকে সেই পুরাতন মন্দিরের কাছে নিয়ে এলো। এবং দশটি কলসী দেখিয়ে আজরারা বলল,
আজরা: এই কলসীগুলো খুব ভাল করে ধুয়ে দাও।
পথিক: ঠিক আছে।
তারপর সেই গরিব লোকটি এই কলসীগুলো খুব যত্নসহকারে পরিস্কার করে দিল। তারপর এই আজরারা তাকে অনেকগুলো স্বর্ণমুদ্রা মজুরী হিসাবে দিল।
আজরা-১: এই ধরো তোমার পরিশ্রমের টাকা। আর শুনো, সাবধান কারো কাছে এই গুপ্তধনের কথা প্রকাশ করবে না। যদি কারো কাছে এই খবর প্রকাশ করো তোমার মৃত্যু কেউ ঠেকাতে পারবে না। কথাটি মনে রেখো।
পথিক: ঠিক আছে। আমি কাউকে কিছু বলবনা।
(দৃশ্য পতন)
কয়েকদিন পর দেখা গেল। সেই লোকটির বাড়িতে একটি নতুন ঘর বাধল। তার দুটি গরুও আছে। এসব দেখে পাড়া প্রতিবেশি সবার মুখে এক কথা। মন্টু গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছে। এরকম আলোচনা চার দিকে ছড়িয়ে পরেছে। মাঝে মাঝে প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে আসে। তার মুখ দেখে অনেকেই প্রতিহিংসা করে। কেউ কেউ তাকে প্রশ্ন করে। মন্টু তুমি এই গুপ্তধন কোথায় পেয়েছো। মন্টু তার কোন জবাব দেয়না। কে বলেছে? কে বলেছে? বলে এড়িয়ে যায় মন্টু। কিন্তু না, তা আর হলো না। একদিন সকালে অত্র এলাকার একজন সমাজপতি এলো মন্টুর বাড়িতে।
সমাজপতি: এই মন্টু। মন্টু কি বাড়িতে আছো? (তখন মন্টু ঘর থেকে বের হবে।) মন্টু তুমি নাকি গুপ্তধন পেয়েছো? কি সুন্দর ঘর। আবার গরু ও আছে। জমি কিনেছো? দুমাস আগেও তো তোমার কিছুই ছিলনা।
মন্টু: আপনার কথা সত্যি মাতবর সাব। আমি তো আসলেই গরিব ছিলাম।
সমাজপতি: তাহলে আমার কাছে বলো তুমি কিভাবে গুপ্তধন পেয়েছো? তা না হলে আমি তোমাকে পুলিশে ধরিয়ে দেব। কথাটা মনে রেখ।
তখন গরিব লোকটি আরো ভয় পেয়ে যায়। তাই সমাজপতির কাছে সেই দিনের কথা যখন সব বর্ণনা দিতে থাকে।
দৃশ্য- (দেখা যাবে সেই মন্দির। সেই কলসী ধুয়ার দৃশ্য এবং মানুষের রুপী আজরাদের।)
পরের দিন গভীর রাতে সেই সমাজপতি ধীরে ধীরে সেই পুরাতন মন্দিরের কাছে যায়। সেই মন্দিরের নীচ থেকে গুপ্তধন ভরা একটি কলসী উপরে উঠায়। এই মধ্যে বিশাল বড় দুই সাপ এবং আজরা এসে সামনে দাড়ায়।
সাপ-১: কি হে লোভী মানুষ। তোর মৃত্যু তোকে এখানে নিয়ে এসেছে। আরে মুর্খ তুই জানিস না। গুপ্তধন কখনও চুরি করে নেওয়া যায়না।
এদিকে সমাজপতি সাপ দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেল। সমাজপতি কলসী রেখেই পালাতে চেষ্টা করল। কিন্তু না তার আগেই সাপ তাকে ছোবল মারে। সঙ্গে সঙ্গে সমাজপতির এখানেই মুত্যু হয়। তারপর কলসী ভরা গুপ্তধন নিয়ে এই রাতেই অন্য কোন রাজ্যে আজরারা চলে গেল। তখন থেকেই আমাদের দেশে গুপ্তধন খুব কম মানুষেই পেয়েছে। কথা থাকে যে, গুপ্তধন চুরি করে কেউ পাবে না। এমনকি গুপ্তধন চালাকী করে কেউ পাবে না। গুপ্তধন হচ্ছে ভাগ্যের অবদান। যাদের ভাগ্যে আছে। শুধু তারাই পাবে কলসী ভরা গুপ্তধন।
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়ামোঃ আমিনুল ইসলাম,
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম,
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন,
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত,
সহকারী বার্তা সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু,
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল,
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং ৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736091515, 01716698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.