এম বাদল খন্দকার (বিশেষ প্রতিনিধি)ঃ
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গার্ড অব অনার প্রদান করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমান বাহিনীর ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুর গ্রামে মাসুকার সম্মানে গার্ড অব অনার প্রদান করে। গার্ড অব অনার ও পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষ কবর জিয়ারত এবং মোনাজাত করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পরে স্বজনদের সাথে কথা বলে সমবেদনা জানান তারা।
আরও পড়ুনঃ সবুজ বাংলাদেশ বরিশাল জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা, সভাপতি মোঃ নুরুল হুদা পনু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার মশিউর রহমান বলেন, ঢাকা খুবই স্ট্র্যাটেজিক লোকেশন, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা খুবই দরকার। যেহেতু ঢাকার আশপাশ এলাকায় জনবসতি অনেক বেড়ে গেছে, সেহেতু আমাদের সবকিছু কম্প্রোমাইজ করেই ফ্লাইয়িং করতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যে কোনো সময় যে কোনো ভাবেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্বাধীনতার পর থেকেই ঢাকায় ফ্লাইয়িং হচ্ছে। এমন দুর্ঘটনা তো প্রতিনিয়ত ঘটে না।
নিহত মাসুকা বেগম নিপুর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকুট গ্রামে। তিনি চিলোকুট চৌধুরী বাড়ির সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর কন্যা। বৃদ্ধ সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বর্তমানে তার বড় কন্যা পাপিয়া আক্তারের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বসবাস করেন। যার কারণে ওই শিক্ষিকার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর লাশ সোহাগপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট মাসুকা বেগম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে তিনি অনার্স শেষ করে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে। বছর দু’য়েক আগে তিনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাইমারী শাখার ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
আরও পড়ুনঃ ভাই মানে শুধু রক্তের সম্পর্ক না, ভাই মানে নির্ভরতার আরেক নাম। শত্রুর সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় যে
বিমান দুর্ঘটনার সময় তিনি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অবস্থান করছিলেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে সহকর্মীদের বলে গিয়েছিল যেন তার বোনের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছে দেয়া হয়। তার ইচ্ছাতেই পরদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাযা শেষে সোহাগপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।