শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনমঃ
নেত্রকোনা জেলা জজ কোর্টে আইন ছাত্র ফোরাম পরিচিতি সবা অনুষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহে বিটিভির নতুন কুঁড়ি-২০২৫ প্রচার কৌশল সভা অনুষ্ঠিত গাবতলীতে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত এমপি প্রার্থী গোলাম রব্বানীর মতবিনিময় নোয়াখালী বিএনপির আহবায়ক আলো ও সদস্য সচিব আজাদ এর বিরুদ্ধে মিছিল সেনবাগে বিএনপির বিজয় মিছিলে হামলা, যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ৩১ দফা বিতরণ করতে রৌমারীতে রাজিবপুর উপজেলার বি এন পির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোঃ মোখলেসুর রহমান বদলগাছীতে সরকারি রাস্তার প্রবেশ মুখে বাঁশের বেড়া, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী মনের আশা পূরণ করি- এম এ রউফ ২১ হাজার টাকার ফেনসিডিল ও মোটর সাইকেলসহ আটক ১ বদলগাছী বিনিময় সম্পত্তি জবরদখলের হুমকি অভিযোগ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ! চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোলাম জাকারিয়ার গণসংযোগ কার্যক্রমে লিফলেট বিতরণ নাসিরনগরে ব্রীজ নয়,যেন মরণ ফাঁদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম ফিলাপ ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঝিনাইদহ কলেজ শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের উদোগে ঈদে মিলাদুন নবী উদযাপন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সকল প্রার্থীদের তালিকা  এনওয়াইপিডির ডেপুটি ইন্সপেক্টর পদোন্নতিতে কারাম চৌধুরীকে সংবর্ধনা জানিয়েছে “জীবন” গোমস্তাপুরে ফেক আইডি ও তার অনুসারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় সাংবাদিকের নামে মিথ্যা এজাহার মনিরুলের শাস্তির দাবি সাংবাদিক সমাজের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো কর্তব্যনিষ্ঠা, জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা, আল্লাহভীরুতা ও সততা বজায় রাখা, পরিশ্রমী ও কর্মঠ হওয়া, রাজবাড়ীতে পুলিশের ওপর হামলা: নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কুয়াকাটা ভ্রমণে মান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা!

আল আজহার: যেখানে মিশে আছে হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্য

রিপোর্টার নাম
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮

ফাতেমীয় সেনাপতি জওহর আলসিসিলী যখন ফাতেমীয় খলীফা আল-মুইযের আদেশে আব্বাসীয় খলীফাদের নিকট থেকে মিসর জয় করে নেন, তখন তিনি কায়রো শহর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই ৯৭২ ঈসায়ী/৩৬১ হিজরীতে আল আজহার মসজিদ স্থাপন করেন।

ঐতিহাসিকরা মসজিদটির নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। কেউ মনে করেন, মসজিদটিকে কেন্দ্র করে তৎকালীন শহরটি প্রতিষ্ঠা হওয়ায় মসজিদটিকে আল আজহার বলে ডা্কা হতো। অন্যরা মনে করছেন, রাসূল (সা.) এর কন্যা হযরত ফাতেমা আল-জাহরা (রা.) এর নাম থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে আল আজহার।

ফাতেমীয় শাসনামলে (৯৭২-১১৭১) বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আল আজহারের খুব গুরুত্ব ছিলোনা। শুধু শিয়া মতবাদ ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের কারণে তখন অন্যান্য মুসলমানরা এখানে শিক্ষা অর্জন করতে আসার আগ্রহ করতোনা। এছাড়া তৎকালীন মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাগদাদের প্রবল প্রভাব আল আজহারকে ম্লান করে দেয়। বাগদাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সামনে আল আজহার তখন বিখ্যাত কোনো প্রতিষ্ঠান ছিলোনা।

এছাড়া ফাতেমীয় শাসকদের অধিকাংশ মুসলমানরা শাসক হিসেবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলোনা। ফলে ফাতেমীয়দের শাসনে আল আজহার ইসলামী বিশ্বের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী অবস্থানে যেতে সক্ষম হয়নি।

আইয়ুবী শাসকরা যখন বাগদাদের আব্বাসীয় খলীফাদের অধীনে মিসরের ক্ষমতা অধিকার করেন, তখন তারা আল আজহারের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দেন। তবে তখনো আল আজহার প্রভাব বিস্তারকারী অবস্থানে যেতে পারেনি। মিসর, ‍সিরিয়া, ইরাক ও আন্দালুসিয়ার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এটিও অপর একটি সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হতে থাকে।

মামলুক সুলতান বাইবার্সের আমলে তার প্রধানমন্ত্রী ইজ্জুদ্দীন আয়দেমীরের হাতে আল আজহার পুর্নজন্ম লাভ করে। তার পরিকল্পনা অনুসারে সুলতান আল আজহারের সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করেন। তার হাত ধরেই আল আজহার তার স্বর্ণযুগে প্রবেশ করে।

১২৫৮ ঈসায়ীতে মঙ্গলদের হাতে বাগদাদের পতনের পর অসংখ্য মুসলিম পণ্ডিত ও বিদ্বান ব্যক্তি মিসরে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১২৬০ ঈসায়ীতে আইন জালুতের যুদ্ধে মঙ্গলদের পরাস্থ করার পর বাইবার্স ছিন্নভিন্ন আব্বাসীয়দের কায়রোতে আমন্ত্রণ করেন এবং আব্বাসীয় খেলাফতকে পুনর্জীবিত করেন। এর ফলে মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্র বাগদাদের পরিবর্তে কায়রোতে স্থানান্তরিত হয়। ফলশ্রুতিতে মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রভূমি হিসেবে কায়রোর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।

বাগদাদ থেকে কায়রোতে মুসলিম পণ্ডিতদের অভিবাসনের পাশাপাশি এসময় আন্দালুসিয়া থেকেও একইরূপ অভিবাসনের ঢল আসে। ১২৩৬ থেকে ১২৬১ ঈসায়ীর মধ্যে আন্দালুসিয়ার কর্ডোভা, সেভিল, ভ্যালেন্সিয়া সহ বিভিন্ন বড় বড় শহরের খ্রিস্টান ক্যাসেলিয় বাহিনীর হাতে পতন হওয়ায় সেখানকার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পণ্ডিতরাও বাস্তুহারা হয়ে পড়েন। তৎকালীন মামলুক সালতানাত মুসলিম বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র হওয়ায় সকলেই মিসরে আশ্রয় গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ হন। বাগদাদ ও আন্দালুসিয়ার এই পন্ডিতদের সহায়তায় আল আজহার তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

মামলুক শাসনামলে বিশ্বের সমসাময়িক প্রখ্যাত মুসলিম পণ্ডিতগণ প্রায় সকলেই আল আজহারে শিক্ষকতা করতেন অথবা কোনো এক সময়ে আল আজহারে স্বল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন। মামলুক শাসকদের প্রখর তত্ত্বাবধানে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

মামলুক শাসনামলে আল আজহারে শিক্ষকতা করা বিখ্যাত পন্ডিতদের মধ্যে রয়েছেন, আবুল আব্বাস আল-কালকাসান্দি, তাকি উদ্দীন আহমদ আল-মাকরিজি, ইবনে হিজর আল-আসকালানি, বদর উদ্দীন আল-আইনি, সিরাজ উদ্দীন আল-বালকিনি, জালাল উদ্দীন আল-সূয়তি, আবদুর রহমান ইবনে খালদুন প্রমুখ।

১৫১৭ ঈসায়ীতে মামলুকদের পতনের পর ওসমানীয় শাসনামলেও আল আজহার তার প্রভাব বজায় রাখে। মিসরের পাশাপাশি সমগ্র মুসলিম বিশ্বে এটি একটি শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে।

আল আজহারের সূচনা থেকে যেসকল বিষয়ে পাঠদানের জন্য পরিচিত, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, উলুমুল কুরআন, উলুমুল হাদীস, ইলমুল কালাম (ধর্মতত্ত্ব), ফিকাহ (আইন), উসুল, নাহু-সরফ (ব্যকরণ), বালাগাহ (অলঙ্কার শাস্ত্র), আদাব (সাহিত্য), তারিখ (ইতিহাস), তিব (চিকিৎসা শাস্ত্র), ফালসাফা (দর্শন) এবং মানতিক (যুক্তিবিজ্ঞান)।

আল আজহারের অবকাঠামো

আল আজহার বর্তমানে যেসকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত তা নিম্নরূপ,

আল আজহার সুপ্রিম কাউন্সিল
সংস্কৃতি ও ইসলামী গবেষণা বিভাগ
আজহার ইন্সটিটিউটসমূহ
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়
আজহার গ্রন্থাগার
ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র
ফতোয়া কমিটি


এই বিভাগের আরও খবর