নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
আজ পবিত্র আশুরা
পবিত্র আশুরা হলো হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস আর মহররমের দশম দিন। ইসলামিক ইতিহাসে আশুরা বহুবিধ তাৎপর্য বহন করে বিশেষ করে: হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) আর তার পরিবারবর্গের কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ যা: মুসলিম উম্মাহর জন্য এক গভীর শোক আর আত্মত্যাগের এবং ঈমান দৃঢ় করার দিন। আশুরা শুধুমাত্র শোক আর স্মরণে সীমাবদ্ধ নয়! এটি সত্য, ন্যায়, আত্মত্যাগ, ঈমানের দৃঢ়তা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থানের এক মহাপাঠ।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় যে: এই দিনেই হযরত নূহ (আঃ) নৌকা থেকে নেমেছিলেন! হযরত মূসা (আঃ) আর তার অনুসারীরা ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন! তবে ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে করুণ অধ্যায় হলো ৬১ হিজরির ১০ মহররম তথা কারবালার প্রান্তর। যেখানে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শাহাদাত বরণ করেন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তার পরিবারগণ।
এই আত্মত্যাগ শুধু একজন ব্যক্তি বা পরিবারের নয়! এটি মুসলিম জাতিকে শিক্ষা দেয় সত্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করার। আশুরার এই বার্তাকে স্মরণ রাখতে আমাদের উচিত এই দিনটির গুরুত্ব যথাযথভাবে পালন করা বিশেষ করে: আমাদের আগামির তরুণ প্রজন্মের মাঝে এর তাৎপর্য ছড়িয়ে দেওয়া।
আশুরার পবিত্রতা রক্ষা করা যায় নফল ইবাদত, নফল রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া আর হযরত হোসাইন (রাঃ) এর আত্মত্যাগ স্মরণ করে। অপ্রাসঙ্গিক আনন্দ উল্লাস পরিহার করে দিনটি ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতায় পালন করাই আশুরার মর্যাদা রক্ষার মূল উপায়।
আশুরার দিন শুধু শোক নয়! এই দিন সত্য আর ন্যায়ের প্রতীক। হোসাইন (রাঃ) আমাদের শিখিয়ে গেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ইমানের চরম বহিঃপ্রকাশ। কারবালার তপ্ত বালিতে হোসাইন (রাঃ) এর শাহাদাত হলো ইতিহাসের কালো পৃষ্ঠা। আশুরা আমাদেরকে স্মরণ করায় ইসলাম হলো একটি আত্মত্যাগের নাম।
এই দিন শুধু রোজা নয়। হৃদয়ে ধারণ করো হোসাইন (রাঃ) এর আত্মত্যাগের চেতনাকে।এটাই আসল শিক্ষা।
পবিত্র আশুরায় চোখে জল আসে। কারবালার কষ্ট আর শিশুর তৃষ্ণা এবং সত্যের বিজয়। মন থেকে স্মরণ করি আমাদের ইমাম হোসাইন (রাঃ) কে। আশুরা মানেই আত্মত্যাগ আর আশুরা মানেই সত্য ন্যায়। হোসাইন (রাঃ) এর রক্তে সেই সত্যের পতাকাটি উড়েছিল।দশ মহররম হলো সত্যের বিজয় দিবস। হোসাইন (রাঃ) দেখিয়েছেন যে মিথ্যার সাথে কখনো কোনো অবস্থায় আপস হয় না।
আরও পড়ুনঃ পাঁচবিবিতে মহরমের মেলা বসেছে
আশুরা আমাদের শেখায় দাঁড়িয়ে যাও ন্যায়ের পক্ষে। ভেঙে ফেলো অন্যায়ের শিকল। সত্যের পথেই চলো। কিন্তু মিথ্যার কাছে মাথা নত নয়। অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করার দীক্ষা। হোসাইন (রাঃ) এর বীরত্ব হলো চিরো অমর। সারা পৃথিবী জানে কারবালার রক্ত বৃথা যায়নি। হোসাইন (রাঃ) আজো আমাদের আদর্শ।
১০ ই অক্টোবর ৬৮০ সালের ১০ ই মহররম ৬১ হিজরি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিলো হোসাইন (রাঃ) এর পরিবারবর্গের পুরুষ, মহিলা ও শিশু সহ ৭২ জন সদস্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে ওমর ইবনে সাদ এর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ও পান করার অনুমতি না দেওয়ায় ফোরাত নদীর তীরে মৃত্যু বরন করেন।
তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত কারীদের ছায়াতলে আজকের বিশ্ব মুসলিম।
ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন আজকের এই দিন থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রিয় নবী রাসুল (সাঃ) এর প্রকৃত আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করা। তাই আমরা মদিনার সনদের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশবাসীকে অনুরোধ জানাই।
দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের দলে যোগ দিন। এই দলের আদর্শ ও উদ্দেশ্য হল মদিনা সনদের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। সর্বজনীন ভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বেকারত্ব দূর করে দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়া। জাগো মুসলিম জাগো । সত্য ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশটাকে গড়ে তুলতে এগিয়ে আসুন।
সম্পাদক ও প্রকাশক
মোঃ আবুল হাসেম
সভাপতি,
বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, কেন্দ্রীয় কমিটি।