নিউজ ডেস্ক
সম্প্রতি, আঁতকে উঠার মতই এক কাজ করেছে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ।রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কের একটি ‘তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট’ সড়ক, কিছুদিন আগেও সেটি ছিল পুরোপুরি ট্রাক-ভ্যানের দখলে। যতদূর চোখ যেত, দেখা যেত সারি সারি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিক আপ দাঁড়িয়ে। যানজট, বিশৃঙ্খলা এবং ট্রাক কাভার্ডভ্যান যেন ছিল পারস্পরিক নিত্যসঙ্গী। অথচ, গত কিছুদিন ধরেই যেন ভিন্ন এক চিত্র, বহুল আকাঙ্ক্ষিত এক পরিবর্তনের ছোঁয়া। বলা যায়, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবং ক্রমাগতভাবে লেগে থাকায় মেয়র আনিসুল হক সড়ক ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ, কমেছে লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি।
উল্লেখ্য যে, সাতরাস্তা থেকে রেললাইন পর্যন্ত সড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহু বছরের ট্রাকস্ট্যান্ডটি ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর উচ্ছেদ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক। যে কারণে সে সময় বিক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি, হতে হয় অবরুদ্ধ, নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি। তখন দখলদারদের ইটপাটকেল আর পুলিশের টিয়ারশেলের মধ্য দিয়ে সড়কটিকে 'পার্কিংমুক্ত' করে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেন তিনি। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেকে ফের দখলদারদের হাতে চলে যায় সড়কটি। অথচ মেয়র আনিসুল হক সড়ক দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করছেন। মেয়র আনিসুল হক সড়ক সাতরাস্তা হয়ে কারওয়ান বাজার, তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট ও তেজগাঁও, মহাখালী, বনানী, গুলশান, নিকেতন, হাতিরঝিল এবং রামপুরার সঙ্গে যুক্ত। ফার্মগেট-তেজগাঁও ঘিরে রয়েছে এক ডজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়াও, এ সড়ক হয়ে জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট, সংবাদপত্র ভবন, ছাপাখানা, প্রধান কার্যালয়সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং সাধারণ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। অনুসন্ধানকালে দেখা যায় যে, প্রতিদিন প্রায় ৩,৫০০-৪,০০০ ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের চলাচল হয় এই রাস্তায়। রয়েছে এসেনসিয়াল ড্রাগস, বিজি প্রেস, বিসিকসহ প্রায় ১০টি কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান। অথচ, তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের পার্কিং ক্ষমতা মাত্র ৭০০ এর কাছাকাছি। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ মনির তালুকদার প্রতিবেদককে বলেন, আমরা জায়গার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি, টিএনটির জায়গা আমাদের দিয়ে দিলে ইনশাল্লাহ এই সমস্যা থাকবে না। আর আমরা ট্রাফিক পুলিশকে সবসময় সহায়তা করি এবং করব।
ইউসিবি শুলশান ব্রাঞ্চে কর্মরত ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই এই রাস্তাটি পরিষ্কার থাকায় আমি ১৫ মিনিটে ফার্মগেট থেকে গুলশান অফিসে চলে যেতে পারছি, এরকম ফাঁকা আগে দেখিনি।" বছরের পর বছর যে সড়ক ছিল অবহেলিত, ট্রাফিক পুলিশের কাজে সেটি ফিরে পেয়েছি যান চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা। বিআরবি হসপিটালস লিমিটেডের ডা: মোহাম্মদ শাহরিয়ার আরাফাত সৌরভ জানান, গত কয়েকদিন ধরেই আমি অবাক হচ্ছি, কেননা গত কয়েক বছরে এত পরিষ্কার কখনও দেখি নি, আশা করি এই অবস্থা বিদ্যমান থাকবে। সরিজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, মেয়র আনিসুল হক সড়কের দুই পাশে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রায় ০৭ ফিট জায়গা নিয়ে করা হয়েছে রিকশার লেন। বলা হচ্ছে এই পথে চলবে অযান্ত্রিক যান। তবে, বাস্তবতা ভিন্ন। স্থানীয় ব্যবসায়ী আলম বলেন, রিকশার জন্য যে রাস্তা দেয়া হয়েছে সেখানে প্রকৃত পক্ষে রিকশা তো চলবেই না, এতে করে রাস্তাটা অকার্যকর হয়ে গেছে। ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহত্তর স্বার্থে এটি অপসারণ করতে ট্রাফিক কর্তৃক সিটি কর্পোরেশনকে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে।
তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানানো হয়, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের ধারণক্ষমতা ৬৫০-৭০০ গাড়ির, অথচ প্রতিদিন প্রায় ৫ গুণ ট্রাক কাভার্ডভ্যানের যাতায়ত হয় এই রাস্তায়। শুক্রবার শনিবার অফিসিয়াল ট্রিপ না থাকায় সব গাড়ি বৃহস্পতিবার রাতে এসে শনিবার পর্যন্ত এখানে অপেক্ষা করে। এছাড়াও, ট্রাক কাভার্ডভ্যানের রুট পারমিট সারা বাংলাদেশ হওয়ায় সারা দেশ থেকেই ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং পিকআপ রাত ১০ টার পর থেকে এই এলাকায় এসে জড়ো হয়। কেপিআইভুক্ত এলাকা হওয়ায় দিনের বেলায়ও কিছু ট্রাক কাভার্ডভ্যান এই কেন্দ্রিক অবস্থান করে। পরিপ্রেক্ষিতে, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি মমত্ববোধ থেকে ওয়ার্কিং ডে গুলোতে মেয়র আনিসুল হক সড়ক ভোর ৭টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত শতভাগ পরিষ্কার রাখা হবে। তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার স্নেহাশীষ কুমার দাস বলেন, "ডিসি ট্রাফিক তেজগাঁও জনাব মোস্তাক আহমেদ স্যারের নির্দেশনায় আমরা গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ আলোচনা করে মেয়র আনিসুল হক সড়ক শতভাগ পরিষ্কার রাখছি, সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ থেকে আজকের এই অবস্থা ধরে রাখতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।" সরিজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, শুধু আনিসুল হক সড়কই নয়, ট্রাফিক পুলিশের পরিকল্পনায় রয়েছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার কিছু রাস্তা ওয়ানওয়ে করার মাধ্যমে সামগ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও উন্নত করার প্রচেষ্টাও। ট্রাফিক পুলিশের এই নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা ভাল কিছু বয়ে আনুক, কমে আসুক প্রিয় রাজধানীর যানজট এমনটাই সবার প্রত্যাশা।স্থানীয় জনসাধারণ ও পথচারীরা দুর্নীতি সন্ধান এর সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানান যে, মেগাসিটি ঢাকার যানজট নিরাসনে ট্রাফিকের অনন্য উদ্যোগের ফলেই ব্যস্ততম আনিসুল হক সড়ক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাহার ফলশ্রুতিতে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ পথচারীরা অনেক আনন্দিত। তাই স্থানীয় জনসাধারণ এবং পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সুযোগ্য মাননীয় পুলিশ কমিশনার জনাব হাবিবুর রহমান কে এবং অভিনন্দন জানিয়েছে" ডিসি ট্রাফিক তেজগাঁও " জনাব মোস্তাক আহমেদ সহ সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিভাগের সকল কর্মকর্তা বৃন্দকে।
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়া
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম
উপ সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং-৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736-091515, 01716-698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.