মামুনুর রশীদ

তৃতীয় ধাপে কুমিল্লার ৪টি উপজেলা পরিষদসহ দেশের ১১২টি উপজেলা পরিষদে ২৯ মে ভোট গ্রহনের তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব উপজেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বা অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ২ মে পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৫ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৩ মে। প্রচার পর্ব শেষে ২৯ মে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে। চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাধারণ নির্বাচন হবে এসব উপজেলায়। ২১টি উপজেলায় ভোট হবে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালটে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে কমিশন সভায় তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করা হয়। পরে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বিস্তারিত দিনক্ষণ জানান।

সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণার পর দেবিদ্বার উপজেলা জুড়ে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা বেশ জমে উঠেছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় আলোচনার ঝড় বইছে। কে হচ্ছেন প্রার্থী, দলীয় সমর্থন কে পাবেন? কেন্দ্রীয় ভাবে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা আদৌ উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে কিনা, আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পাচ্ছেন কে? এসব নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ গ্রহণ করবেনা বিষয়টি এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে দু’দলেরই একাধিক নেতৃবৃন্দ। এদিকে উপজেলা নির্বাচনী আলোচনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে এ উপজেলা সর্ব ক্ষেত্রে। এবার দলীয় প্রতীক না থাকায় সম্ভাব্য প্রাথর্ীরা বর্তমান ও সাবেক এমপিদের আর্শ্বিাদ নিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। 

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সমর্থকরা মাঠ পর্যায়ে সরব হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকে বর্তমান এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের সমর্থন নিতেই মরিয়া হয়ে ছুটছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে (স্বতন্ত্র ও নৌকা প্রতীক) নিয়ে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় এবার উপজেলা নির্বাচনে একাধিক প্রাথর্ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। নিজ নিজ কমর্ী-সমর্থকরা প্রচারনা চালালেও সম্ভাব্য প্রাথর্ীরা রয়েছে অনেকটা চুপচাপ। তারা বর্তমান ও সাবেক এমপির সমর্থন নিতে বিভিন্ন ভাবে লভিং চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও এখনো নিরব তাদের সমমনা দলগুলো। তবে জাতীয় পার্টিও শক্তিশালী প্রাথর্ী দিতে কাজ করছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। 

আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভ্যাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, দেবিদ্বার পৌর আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম চেয়ারম্যান, স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগ নেতা মো. মামুনুর রশিদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান একেএম শফিকুল আলম কামাল ভিপি, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার গাজী রাসেল বিন সালাম। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রাথর্ী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. লোকমান ভূইয়া রাজু ও কুমিল্লা উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মোছলে উদ্দিন মোল্লা মোসলেম এর নাম।  

ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভ্যাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, আ’লীগ নেতা আলহাজ্ব আব্দুল কাইয়ুম ভূইয়া, সাপ্তাহিক আমাদের দেবিদ্বার পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এটিম সাইফুল ইসলাম মাসুম, উপজেলা আ’লীগের প্রচার সম্পাদক হাজী মোসলেহ উদ্দিন মানিক, এফবিসিসিআই সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা এম তানজীর আহমদ (হাজী তুহিন), উপজেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গভেষণা সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান রাসেল, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. আবদুল্লাহ আল কাইয়ুম, কুমিল্লা উত্তর জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য আমরুল কায়েস শিপলু।  

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নাজমা বেগম, উপজেলা মহিলা আ’লীগের সহ সভাপতি সামছুন নাহার ও উপজেলা মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহিনুর আক্তার লিপি।

নির্বাচনের বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম শফিউদ্দিন সফি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এখনো কোন দলীয় নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা আসলে ওই ভাবে কাজ করা হবে। তবে নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় যে কেউ চাইলেই নির্বাচন করতে পারবেন।