স্টেট ফরোয়ার্ড মন্ত্রী হিসেবে আলোচিত ওবায়দুল কাদের। যা বিশ্বাস করেন তাই করেন। আর যা করেন তার পেছনে থাকে গভীর পর্যবেক্ষণ। মহাসড়কে তিনি দুর্ভোগ কমাতে সফল হয়েছেন। নিয়ন্ত্রণে এনেছেন বিশৃঙ্খল যোগাযোগব্যবস্থা। মন্ত্রী হিসেবে তার ‘রাউন্ড দ্যা ক্লক’ কর্মতৎপরতা সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। ফলে নিজের দলীয় পদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে তিনি এখন অদ্বিতীয়। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত সমানতালেই ছুটছেন ওবায়দুল কাদের। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তার সম্পর্কের ভিত মজবুত। দলীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল করার অঙ্গীকার নিয়েই দায়িত্ব নেওয়ার পরদিনই মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন, ‘এখন আমি রাস্তা দেখবো। নেতা-কর্মীদের কথাও শুনবো। তাৎক্ষণিক সমাধান দেবো। এটা পরিশ্রম নয়, বাড়তি লাভ।’ বাস্তবেও দলের দ্বিতীয় এই সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের শ্রম-ঘাম, মেধা-শক্তি ও সামর্থ্য পুরোপুরি উজাড় করে দিয়েছেন জনপ্রিয় ও ক্যারিশম্যাটিক এই রাজনীতিক। দল ও মন্ত্রণালয় সমানতালে সামলেই দলীয় সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্ণ আস্থা অর্জন করেছেন মিনিট-ঘণ্টা হিসেব করে সময়ের সদ্ব্যবহার করা প্রথাবিরোধী এই নেতা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়) দায়িত্ব নিয়েই ওবায়দুল কাদের জাতির সামনে একটি তত্ত্ব এনেছিলেন। তিনি নিজেই বলেছিলেন, মন্ত্রীকে শুধু মন্ত্রণালয়ে থাকলে হবে না, তাকে রাস্তায় থাকতে হবে। অতীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা থাকতেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে। আর এই মন্ত্রী ঠিকই ঘাম ঝরিয়েছেন সড়ক-মহাসড়কে। একজন মন্ত্রী হিসেবে তার কর্মতৎপরতা ও সাহসী উচ্চারণ হয়ে ওঠে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সাইবার ক্যাফে, হোটেল, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন সর্বত্রই তাকে নিয়ে চলে ইতিবাচক আলোচনা। মন্ত্রণালয় পরিচালনায় তার দক্ষতা, দেশের সড়ক-মহাসড়কে সারপ্রাইজ ভিজিট, পদ্মাসেতু নির্মাণে ঐকান্তিক প্রচেষ্টাসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে কঠোর পরিশ্রমী, সাংগঠনিকভাবে দল ও নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার মানসিকতাসম্পন্ন এই নেতাকেই নিজের ‘রানিং ম্যাট’ হিসেবে বেছে নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।একই সঙ্গে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নানামুখী চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে বিশ্বস্ততা ও নেতৃত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এই নেতার ওপরই আস্থা রাখেন দলীয় প্রধান। দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন ওবায়দুল কাদের। রাজনীতির দুর্গম পথ হেঁটে এখন আওয়ামী লীগ রাজনীতির অন্যতম নীতি নির্ধারক। ছাত্রলীগের রাজনীতির সিঁড়ি বেয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উঠে এসেছেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল তার। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানেও ছিলেন সক্রিয়। একাত্তরের রণাঙ্গনের এই বীর সেনানী ওই সময় মুজিব বাহিনীর কোম্পানীগঞ্জ থানা কমান্ডারও ছিলেন। পঁচাত্তর উত্তর সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির চরম সংকটময় মুহূর্তে প্রায় আড়াই বছর কারাপ্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তার নেতৃত্বেই নতুন আশার বর্তিকা আর প্রাণ নিয়ে টগবগিয়ে ওঠে ছাত্রলীগ। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনের সময়ও তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ‘বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী’।একুশ আগস্টের গ্রেনেডহামলার ক্ষত যেমন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন তেমনি জরুরি সরকারের সময়ও কারাগারের বন্দিশালায় ছিলেন ১৯ মাস। ওই সময় তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পরবর্তীতে রেকর্ড বিজয় নিয়ে দিন বদলের পানসিতে চড়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রথমে দলীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য হন তিনি।ওই সময় বারবার মন্ত্রিত্বের কথা উঠলেও তিনি ছিলেন বঞ্চিত। পরে নবম জাতীয় সংসদে ‘বেলাশেষে’ তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি নিজেই সেই সময় বলেছিলেন, ‘আমি হচ্ছি বেলাশেষের মন্ত্রী।’ যদিও দশম জাতীয় সংসদে শুরু থেকেই তিনি পালন করছেন সড়কমন্ত্রীর দায়িত্ব।দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, ওবায়দুল কাদেরের সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়াজ ওঠে সেই ২০০২ সালের ১৭তম দলীয় কাউন্সিল থেকেই। ওই সময় দলের সাধারণ সম্পাদক হন আব্দুল জলিল। এরপর আওয়ামী লীগের ১৮ ও ১৯তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে পুরোমাত্রায় সুসংগঠিত এবং নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করে তুলতে শেষ পর্যন্ত ‘চমক’ হিসেবে তাকেই বেছে নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও দেশের সর্ববৃহৎ ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের একজন ‘কর্মীবান্ধব’ নেতা। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তার নেতৃত্বে দলে গতিশীলতা এসেছে। সাংগঠনিক দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা ধরে রেখেছেন।’ লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ছাত্ররাজনীতির কঠিন দুঃসময় জয় করে তিলে তিলে নিজেকে গড়ে তুলেছেন ওবায়দুল কাদের। তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও বিচক্ষণতা প্রশ্নাতীত। তার সবচেয়ে বড় গুণ তিনি সহজেই কর্মীদের আপন করে নিতে পারেন। ফোনে তাকে সহজেই পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং ওবায়দুল কাদেরের নিবিড় তদারকিতে তৃণমূল থেকেই আওয়ামী লীগের ভিত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।’ দলীয় পরি-মল ছাপিয়ে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বগুণ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝেও। ওবায়দুল কাদের যখন দৈনিক বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক তখন তার অধীনে তৃণমূলে সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন মো. শামসুল আলম খান। ওবায়দুল কাদেরের এক সময়ের সহকর্মী ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের (বিএসপি) এই মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিত্বে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বেরিয়ে তৃণমূলে ছুটে গিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের অফুরান ভালোবাস পেয়েছেন। দল পরিচালনায়ও তিনি তৃণমূলের কর্মীদের এক সুতোয় গেঁথেছেন। সত্যিই তিনি অনন্য।’ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাকল্যাণ সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলামের ভাষ্য মতে- ‘শিল্প ও সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ ওবায়দুল কাদের। কথা আর কাজের মিল রেখে চলতেই পছন্দ করেন। সরকারের দক্ষ, মেধাবী এই মন্ত্রী ও রাজনীতিক দল ও দেশের ভাবমূর্তিকেই বড় করে দেখেন।’
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়ামোঃ আমিনুল ইসলাম,
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম,
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন,
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত,
সহকারী বার্তা সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু,
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল,
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং ৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736091515, 01716698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.