গাইবান্ধায় প্রধান শিক্ষক কর্তৃক জাল সার্টিফিকেট দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনয়নের অভিযোগ।
মোঃ মিঠু মিয়া
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বল্লমঝাড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে সভাপতি মনোনয়ন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও সহকারী প্রধান শিক্ষক তাজ উদ্দিনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টির প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মরহুম আজিজুর রহমান মাস্টার, যিনি গাইবান্ধার একজন শিক্ষানুরাগী ও খ্যাতিমান ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সরকারি নথিতে তথ্য বিকৃতি করে তার নাম বাদ দিয়ে তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক মণ্ডল-এর নাম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ আকন্দ অবসরে গেলে তার স্থলাভিষিক্ত হন বর্তমান প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, যিনি অভিযোগ অনুসারে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে শুরু হয় শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য, পদোন্নতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের ধারাবাহিকতা।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মণ্ডল তার ভাতিজা তাজউদ্দিন মণ্ডলকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিশেষ সুবিধায় নিয়োগ দেন। বর্তমানে তিনিও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আছেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটির সভাপতি হতে ন্যূনতম বি.এ.পাস প্রয়োজন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও তাজ উদ্দিন মিলে একচেটিয়া প্রভাব খাটিয়ে এইচএসসি পাসকৃত মোঃ আব্দুস সালাম নামে এক ব্যক্তির জাল বিএ সার্টিফিকেট সংযুক্ত করে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন।
তারা গত ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখে গোপনে বোর্ড থেকে অনুমোদন আনেন এবং পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনজনের নামসহ আবেদন করেন। পরবর্তীতে আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় আব্দুস সালামকে সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হলে বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
আব্দুস সালাম বিএ পাসের ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন, আমি তা বোর্ডে পাঠিয়েছি। আমার কাছে অফিস কপি নেই।
তবে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যেসব নথি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সার্টিফিকেটটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয় সে প্রশ্নের জবাবে তিনি দায় এড়িয়ে বলেন,
সব কাজ ডিসি সাহেব করেছেন, এতে আমার কোনো হাত নেই।
সহকারী প্রধান শিক্ষক তাজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, তিনি নিজে সার্টিফিকেট যাচাই করবেন বলে কথা দিলেও পরে আর যোগাযোগ করেননি।
অন্যদিকে সভাপতি পদে মনোনীত মোঃ আব্দুস সালাম-এর মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে জনৈক মহিলা বলেন, এটা রং নাম্বার। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসকের আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হলে উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মামুন ও অফিস স্টাফ ফরহাদ হোসেন রহস্যজনক কারণে কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি, তহবিল ব্যয়সহ সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম চলছে। যোগ্যতা নয়, বরং অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাবই নিয়োগের মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিভাবকরা বলেন,
এই বিদ্যালয় আমাদের মেয়েদের আলোকিত করার কেন্দ্র ছিল। এখন দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্যের কারণে বিদ্যালয়টি ধ্বংসের পথে।
তাদের দাবি, দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে শিক্ষাঙ্গনে সুশাসন ও স্বচ্ছতা ফিরে আসে।
এই প্রতিবেদনটি স্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থার অনিয়ম ও প্রভাবশালীদের অপব্যবহারকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। তদন্ত হলে সত্য উদ্ঘাটনের সম্ভাবনা প্রবল
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়া
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম
উপ সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং-৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736-091515, 01716-698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.