মোহাম্মদ আলম, কক্সবাজার
বাংলাদেশ পুলিশের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি যখন সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, ছাত্র এমনকি শিশুকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে তুলে নিয়ে যান, মধ্যরাতে নির্যাতন করেন, আর মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠান—তখন প্রশ্ন উঠে রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কার স্বার্থ রক্ষা করছে?
২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর। রাত ৩টা ৪০ মিনিট। কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকার এক সংবাদকর্মীর বাসায় হানা দেয় সাদা পোশাকে একদল ব্যক্তি। পরে জানা যায়, নেতৃত্বে ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ। তারা সাংবাদিক আবির হোসেন, তার ভাই শিহাব উদ্দিন, শিক্ষার্থী মোছাদুল ইসলাম সামাদ, ইশান, শিশু মেহেদী হাসান বাবু এবং মো. আবিরকে অপহরণ করে।
তাদের চোখ বেঁধে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। শুধু একটি প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে—“আমি যা শেখাব, ক্যামেরার সামনে তা-ই বলবে।” পরবর্তীতে ‘ডাকাত’ বানিয়ে মিথ্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২ বছর পর আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও, তাদের শরীর ও মন থেকে আজও সেই ক্ষতের রক্ত ঝরে।কক্সবাজারে অপরাধ সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিআইজি আপেল মাহমুদ কক্সবাজারকে নিজের ‘অপরাধ সাম্রাজ্যে’ রূপান্তর করেছিলেন। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যারা হোটেল-মোটেল জোনে পতিতাবৃত্তি, মাসিক চাঁদাবাজি, অবৈধ দখল, হুমকি এবং গায়েবি মামলা দায়ের করে মানুষকে হয়রানি করত।
স্থানীয়রা বলেন, “ডিআইজি আপেল মানেই ভয়। মিডিয়ায় কেউ কিছু বললেই পরদিন তার নামে মাদক বা অস্ত্র মামলার খসড়া রেডি।
এই সিন্ডিকেটের মূল সহযোগী ছিলেন সাব-ইন্সপেক্টর আবু সাঈদ (বিপিএম-বার) ও এসআই শাহিন। তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও ফেরত আসার রহস্য
সূত্র বলছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠতা এবং বিতর্কিত সাবেক কাউন্সিলর আবদুস সবুর লিটনের সঙ্গে সখ্যতার সুবাদে বান্দরবানে বদলি হয়েও কক্সবাজারে পুনঃনিয়োগ পান ডিআইজি আপেল মাহমুদ।
একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলেন, “এই মানুষটাই এখন কক্সবাজারের ছায়া গডফাদার। তার নামে কেউ মুখ খুললে পরদিনই তাকে ‘ডাকাত’ বানিয়ে জেলে পাঠানো হয়।
নির্যাতিতদের পরিবারের আহাজারি নির্যাতিত এক কিশোরের মা বলেন, “আমার ছেলেটার কোনো দোষ ছিল না। শুধু সাংবাদিক ভাইয়ের পাশে থাকার কারণে তাকেও তুলে নেয়। চোখ বেঁধে লাঠিপেটা করা হয়েছে। এখনো রাতে চিৎকার দিয়ে উঠে ঘুম থেকে। একটি ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, “আমাদের ছেলেরা সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের ‘ডাকাত’ বানিয়ে প্রমাণসহ মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে পুলিশই। আমরা বিচার চাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি।
মানবাধিকার সংগঠন ও ভুক্তভোগীদের পরিবার একমত হয়ে বলেন, “ডিআইজি আপেল মাহমুদ ও তার সিন্ডিকেটকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেন রাষ্ট্রীয় পোশাকে আর কেউ সন্ত্রাসের সাহস না পায়।”
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়া
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম
উপ সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং-৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736-091515, 01716-698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.