প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ১৩, ২০২৫, ২:১৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১০, ২০১৮, ৮:০৫ এ.এম
আমের বাম্পার ফলনেও হতাশ টাঙ্গাইলের চাষিরা

টাঙ্গাইলের পাহাড়ী অঞ্চলে ঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এ বছর আমের বাম্পার ফলন হলেও তুলনামূলক আমের দাম কম থাকায় হতাশায় ভুগছেন চাষীরা। ২০০০ সালে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ প্রতিটি উপজেলায় আমচাষীদের ১০০ টি করে আম্রপালী চারা দিয়ে প্রদর্শনী প্লট করে শুরু করলেও বর্তমানে পাহাড়ি অঞ্চল ঘাটাইল ও সখিপুর প্রায় সাড়ে ৮’শ আমচাষি সাড়ে ৬’শ হেক্টর জায়গা জুরে আম বাগান গড়ে তুলেছেন। পাহাড়ী অঞ্চলে দুর্লভ বারি-৪ ছাড়াও মল্লিকা, পালমার, পাল্লুতান, মহানন্দা, গোপালভোগ, গোপাল খাস, প্রাপ্তি, দশোরী, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি, ফজলি, ল্যাংড়া, লক্ষণভোগসহ প্রায় ৩৬ জাতের আম চাষ করা হচ্ছে। তবে সখীপুরের মাটি আম্রপালীর (বারি-৪) জন্য সব চেয়ে বেশি উপযোগী বলে আম চাষীরা জানান। এছাড়াও টাঙ্গাইলের প্রতিটি উপজেলার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি ছোট ছোট আকারের অসংখ্য আমবাগান রয়েছে। আমের ফলন ভাল হলেও দাম কম থাকার কারণে হতাশ আম চাষীরা। প্রকার ভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে এ আম বিক্রি করা হচ্ছে। আমের সংরক্ষণাগার ও বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় সখীপুর ও ঘাটাইলে উৎপাদিত কয়েক কোটি টাকার আম নিয়ে চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। বিপণন ও সংরক্ষণাগার থাকলে আম চাষীরা অনেক অর্থ আয় করতে পারতেন। আম চাষীদের কল্যাণে দ্রুত একটি আম গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন চাষীরা। কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে হারে পাহাড়ী অঞ্চল ঘাটাইল ও সখীপুরে আমচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে অল্পদিনেই এ পাহাড়ী অঞ্চলের আম চাষ চাপাইনবাবগঞ্জকেও ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া কীটনাশক ও ফরমালিনমুক্ত এ আম টাঙ্গাইল জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভাগীয় শহর ঢাকা-ময়মনসিংহসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আম ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার মৌসুমের শুরুতেই ঢাকার কারওয়ান বাজার, বাদামতলী, সদরঘাটসহ দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা পাহাড়ী অঞ্চলের আম বাগান অগ্রিম কিনে রাখছেন। মাটির গুণাগুন অনুসারে এ অঞ্চল আম উৎপানের জন্য খুবই উপযোগী বলে কৃষিবিদরা জানান। অপরদিকে, ঘাটাইল ও সখিপুরে উৎপাদিত আমের সংরক্ষণাগার ও বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা লাভের বড় অংশ লুফে নিচ্ছেন। বিপণনের স্বার্থে কানসার্টের মতো আমের বাজার স্থাপন করা এবং আম সংরক্ষণাগার স্থাপন করা দরকার বলে স্থানীয় আম চাষীদের একমাত্র দাবী। ঘাটাইলের সাগরদিঘী এলাকার আম চাষী ওবায়দুল্লাহ চৌধুরী জানান, আমি ২০১৩ সালে তিন একর জমিতে আম চাষ করেছি। আমার খরচ হয়েছিল প্রায় ৬৫ হাজার টাকার মতো। গত বছর এই বাগান থেকে তিন লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছি। এ বছর আমের ফলন অনেক বেশি কিন্তু তুলনামুলক ভাবে আমের দাম অনেক কম। ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মতিন বিশ্বাস বলেন, ঘাটাইলে মাটির অনুর্বরতার কারণে ধান চাষে লাভ কম হওয়ায় আম চাষের প্রতি ঝুঁকছেন কৃষকরা। এ বছর প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। আম চাষে কম বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তবে এ বছর আমের দাম তুলনামূলক ভাবে কম থাকায় অনেক কৃষক হতাশায় ভুগছেন। ঘাটাইল উপজেলার আমচাষ করে সাবলম্বী হওয়া মালীর চালা গ্রামের আম চাষী দেলোয়ার হোসেন জানান, আমি ২০ একর জমিতে আম চাষ করেছি। এ বছর আমের উৎপাদন বেশি থাকায় চাহিদা কম। তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না। আমের ফলন ভালো থাকায় অনেক কৃষক আম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কিন্তু এই বছরের মতো আমের দাম কম থাকলে কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সখিপুর উপজেলার আমচাষীরা জানান, আমচাষীদের কল্যাণে দ্রুত একটি আম গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে আমরা আম চাষ করে আরও লাভবান হব।
আমের ফলন ভাল হলেও তুলনামূলকভাবে আমের দাম অনেক কম থাকায় এ বছর আম চাষে তেমন লাভ হবে না। সখিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সখীপুরের মাটি আম্রপালী’র (বারি-৪) জন্য সব চেয়ে বেশি উপযোগী। স্থানীয় কৃষি বিভাগের জোর তৎপরতা এবং স্থানীয় আম চাষীদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের কারণেই বিষমুক্ত আম পাঁকানোয় চরম সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ উপজেলার আমচাষীরা। চাষীদের কল্যাণে দ্রুত একটি আম সংরক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়ামোঃ আমিনুল ইসলাম,
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম,
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন,
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত,
সহকারী বার্তা সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু,
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল,
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং ৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736091515, 01716698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.