আইনগত মতামত ও বিশ্লেষণ
বিষয়: ৫ আগস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার পতন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইনগত ভিত্তি
প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট:
১. বাংলাদেশের জনগণ ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয় এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
২. শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের অভিযোগ রয়েছে।
৩. জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব, রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের কারণে এক গভীর রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের উদ্ভব হয়।
৪. এই প্রেক্ষাপটে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আহ্বানে সার্বজনীন গণআন্দোলন এবং ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গণভবন অভিমুখে বিশাল মিছিল ও গণজোয়ারের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হন।
আরও পড়ুনঃ পটুয়াখালীর গলাচিপা বকুলবাড়িয়ার নজির মুন্সি নামে বৃদ্ধ ঢাকায় গিয়ে গন্তব্য ভুলে গেছেন
আইনগত বিশ্লেষণ:
১. সংবিধান ও জনগণের সার্বভৌমত্ব:
বাংলাদেশের সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ।”
সংবিধানের ৭(২) অনুযায়ী, জনগণের ইচ্ছার পরিপন্থী কোনো ক্ষমতা অবৈধ বলে গণ্য হবে।
👉 অতএব, জনগণের দ্বারা পরিচালিত অভ্যুত্থান ও সরকারের পতন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও জনগণের সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগের অংশ।
২. অসাংবিধানিক ক্ষমতা গ্রহণের প্রশ্নে ব্যতিক্রম:
সাধারণত অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ বৈধ নয়। তবে, যখন সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়ে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার স্থায়ীভাবে লঙ্ঘিত হয়, তখন "necessity doctrine" অনুযায়ী জনগণের উদ্যোগ বৈধতা পায়।
👉 আন্তর্জাতিক আইন (ICCPR, Article 1) অনুযায়ী, “All peoples have the right of self-determination…” – অর্থাৎ জনগণ চাইলে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।
৩. বিচারব্যবস্থার মতামত (ধরা হয়েছে):
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন। জনগণের প্রতিনিধিত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পূর্বে এই মতামত গ্রহণ করা হয়েছে বলে ধরা হলে, এটি একটি সাংবিধানিক পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচ্য।
আরও পড়ুনঃ বান্দরবান জেলাতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও উপলক্ষে বিএমবির আনন্দ মিছিল
৪. আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বৈধতা:
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামো অনুযায়ী, জনগণের শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন ও তার ফলে সরকারের পরিবর্তন – যদি তা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয় – তা বৈধ গণতান্ত্রিক রূপান্তর হিসেবে স্বীকৃত।
---
উপসংহার (Conclusion):
১. ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সংঘটিত সরকার পতন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন সংবিধানের ৭(১), ৭(২) ও ১০৬ অনুচ্ছেদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আলোকে বৈধ, যুক্তিসঙ্গত ও জনগণের সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগের ফলাফল।
২. এই রূপান্তর কোনো সামরিক অভ্যুত্থান নয়, বরং জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের শান্তিপূর্ণ, সর্বজনীন এবং গণতান্ত্রিক প্রয়োগ।
৩. এই রূপান্তরের পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক সংস্কার ও অবাধ নির্বাচনের আয়োজন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচারবহির্ভূত অপরাধের বিচার একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন রূপান্তর প্রক্রিয়া হিসেবে বৈধতা পায়।
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফরহাদ মাজহার
উপদেষ্টাঃ এস,এম নজরুল ইসলাম ভুইয়া
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আবুল হাসেম
উপ সম্পাদকঃ এম, আসমত আলী মিসু
সহঃসম্পাদকঃ আলী নওয়াব খোকন
বার্তা সম্পাদকঃ ইয়াছিন আরাফাত
সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকঃ আসাদুজ্জামান খান মুকুল
www.dainikbanglarsangbad.com
ইমেইলঃ dainikbanglarsangbad490@gmail.com
প্রধান কার্যলয়ঃ বাড়ি নং ৩৫, রোড নং-৪, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইলঃ01736-091515, 01716-698621
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Copyright © 2025 dainikbanglarsangbad.com. All rights reserved.